Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

সাবধান হোন, করোনাভাইরাসের স্টেজ থ্রি আটকাতে হবে

কোভিড-১৯ ভাইরাস মানুষের শরীর ছাড়া বাঁচতে পারে না। এই মুহূর্তে আক্রান্ত এবং সন্দেহজনক মানুষজন-সহ কেউ কারও সংস্পর্শে না এলে ভাইরাস আর ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। ভয়ানক মহামারির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক থাকতে বলছেন ডাক্তাররা। —ফাইল চিত্র।

করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক থাকতে বলছেন ডাক্তাররা। —ফাইল চিত্র।

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২০ ১০:২৩
Share: Save:

বিশ্বে এই মুহূর্তে সব থেকে বড় সঙ্কটের নাম নভেল করোনাভাইরাস কোভিড-১৯। আমাদের দেশেও এই ভাইরাস দ্রুত গতিতে বাড়ছে। ঠিক এই মুহূর্তে আমরা দাঁড়িয়ে আছি স্টেজ টু-এ, এগিয়ে চলেছি স্টেজ থ্রি-র দিকে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর মতে, আমাদের দেশে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ এখনও পর্যন্ত স্টেজ টু-এ আটকে আছে। এখনই সতর্ক না হলে আগামী সপ্তাহে তৃতীয় পর্যায়ে, অর্থাৎ স্টেজ থ্রি-তে পৌঁছে যাওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা আছে। আর এই কারণেই সবাইকে বাড়ি থেকে না বেরনোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাস মানুষের শরীর ছাড়া বাঁচতে পারে না। এই মুহূর্তে আক্রান্ত এবং সন্দেহজনক মানুষজন-সহ কেউ কারও সংস্পর্শে না এলে ভাইরাস আর ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। ভয়ানক মহামারির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী

করোনাভাইরাসের স্টেজ থ্রি মানে কী

কমিউনিটি ট্রান্সমিশন, অর্থাৎ বিদেশ থেকে অসুখ নিয়ে দেশে ফিরেছেন এমন কোনও মানুষের সংস্পর্শ ছাড়া অথবা কোনও আক্রান্ত মানুষের কাছাকাছি না এসেও যদি কারুর শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি টের পাওয়া যায় তাকে বলে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন। এই পর্যায়ে সংক্রমিতদের শরীরে কোথা থেকে এই ভাইরাস এসেছে তা শনাক্ত করা যায় না। এখনও পর্যন্ত আমাদের দেশে আক্রান্তের সংস্পর্শ থেকেই ড্রপলেট ইনফেকশনের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াচ্ছে। অর্থাৎ, আমরা স্টেজ টু-তে আছি। এই ভাইরাসের দাপট কমাতে সতর্ক হতে হবে এখন থেকেই।

কেন স্টেজ থ্রি অত্যন্ত মারাত্মক হতে পারে

কোভিড-১৯-এ আক্রান্তদের মৃত্যুহার সার্স অথবা মার্স-এর থেকে অনেক কম হলেও নতুন এই ভাইরাসটির গতি প্রকৃতি সম্পর্কে এখনও আমাদের কাছে বিশেষ তথ্য নেই। দেখা যাচ্ছে চিনের থেকেও ইটালির মৃত্যুহার অনেক বেশি। তাই বাড়তি সতর্কতা নিতেই হবে।

আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলার উপায় আগামী ১৫ দিন বাড়িতে থাকা​

আরও পড়ুন: মাল্টিভিটামিন খেলেই কি করোনা-সংক্রমণ এড়ানো যাবে?

কী করে আটকানো যায়

বিদেশে যেখানে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে, সেই দেশ থেকে লোকজনের আসা বন্ধ করা হয়েছে। তবে এখনও এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সম্প্রদায়ের সংক্রমণ হবে না। এ ছাড়া আক্রান্তদের আইসোলেশনে রেখে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করার সঙ্গে সঙ্গে গৃহবন্দি থাকতে হবে। সেই সঙ্গে হাত ধোয়া, মুখে চাপা দিয়ে হাঁচি, কাশি ও কোনওরকম সন্দেহ হলে গৃহবন্দি থাকলে ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত কমানো যাবে বলে আশা করা যায়। তবে এর থেকেও মারাত্মক হল স্টেজ ফোর। যখন কোভিড-১৯ ভাইরাস কোনও স্পষ্ট কারণ ছাড়াই মহামারীর আকার ধারণ করে। চিনে ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে প্রতিপদে।

কী খাবেন, কী করবেন

আমাদের দেশে কোভিড-১৯ স্টেজ থ্রি-তে পৌঁছলে তা ভয়ানক হওয়ার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। এর মূলে আছে পুওর নিউট্রিশনাল স্ট্যাটাস। অনেক উচ্চবিত্ত পরিবারেও ডায়েট নিয়ে ভুল ধারণা থাকায় সঠিক পুষ্টির অভাব থেকে যায়। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক ভাবে কম। এ ছাড়া কারণে-অকারণে নানান জড়িবুটি খাওয়ার ফলেও পুষ্টিগত সমস্যা হতে পারে। বাড়িতে তৈরি টাটকা সব্জি, মাছ, ডাল, চিকেন, শুঁটি ও শস্য, শাক রাখুন রোজকার ডায়েটে, বললেন অমিতাভ নন্দী। এ ছাড়া আগামী ১৫ দিন যতটা সম্ভব কম বাড়ির বাইরে যান। বাড়িতে যেন যথেষ্ট রোদ আর বাতাস থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। পরিচ্ছন্ন থাকুন।

কাদের ক্ষেত্রে ভয়ানক

ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী জানালেন, বেশি বয়সের মানুষ ও ধূমপায়ীদের রিস্ক ফ্যাক্টর তুলনামূলক ভাবে বেশি। এ ছাড়া অ্যাজমা বা হাঁপানি, সিওপিডি, আইএলডি সমেত ফুসফুসের অসুখ আছে কিংবা ক্রনিক কিডনির অসুখ আছে, তাঁদের জন্যও কোভিড-১৯ মারাত্মক হতে পারে। অন্য দিকে আর্থ্রাইটিস, আলসারেটিভ কোলাইটিস সমেত অন্যান্য কারণে নানান ওষুধ খেতে হয়, বা যাঁদের প্রেশার, সুগার কিংবা হার্টের অসুখ আছে, কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ হলে তাঁদের প্রাণ বাঁচানো মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus COVID-19 Health Home Isolation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE