সস্তার এই খাবারেই মিশছে মারাত্মক বিষ। —নিজস্ব চিত্র।
ময়দার ছোট ছোট থলির মধ্যে কুচোনো সব্জি বা চিকেনের পুর, সঙ্গে গরম গরম স্যুপ ও লাল চাটনি! খিদে পেলে রাস্তার ধারের এমন খাবারের সামনে থমকে দাঁড়াননি এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। চটজলদি খিদে কমাতে মোমোর এই জনপ্রিয়তা গত কয়েক দশকে অনেকটা বেড়েছে। বানানো সহজ ও সরঞ্জাম কম লাগায় রাস্তার ধারে সারি সারি মোমোর দোকান গড়েও উঠেছে।
কিন্তু জানেন কি, প্রতি দিন পেট ভরাতে যে মোমোয় কামড় বসাচ্ছেন, তা আদতে কতটা স্বাস্থ্যকর? পুসার ‘ইনস্টিটিউট অব হোটেল ম্যানেজমেন্ট, কেটারিং অ্যান্ড নিউট্রিশন’-এর গবেষণায় উঠে আসা তথ্য এবং চিকিৎসকদের বক্তব্য কিন্তু একেবারেই স্বস্তিতে রাখবে না আপনাকে।
চিকিৎসকদের মতে, স্ট্রিটফুডগুলির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকারক খাবারগুলির অন্যতম মোমো। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘চপ-রোল-কাটলেটে তেল আছে। কিন্তু সেদ্ধ খাবার ভাজাভুজির তুলনায় কম ক্ষতি করে এমনটা ভেবে মোমো অনেকেই খান, কিন্তু এর স্ট্রিটফুডের স্টলে কম দামে মোমো দেওয়ার জন্য তার মধ্যে প্রচুর কম দামী রায়াসয়িক মেশানো হয়, যা কেবল ক্ষতিকারকই নয়, লিভারের জন্য বিষাক্তও বটে।’’
আরও পড়ুন: সানস্ক্রিন মাখলে ঘেমে যান? এ ভাবে ব্যবহার করলেই মিটবে ঘামের সমস্যা
কলকাতার রাস্তায় মোমো বিক্রির এ দৃশ্য খুব চেনা। ছবি: শাটারস্টক।
মোমো মূলত ময়দা থেকে তৈরি। রাস্তার ধারে সস্তায় মোমো বানাতে বাজারচলতি ময়দাকে ব্লিচ করা হয়। এই ব্লিচের জন্য এতে মেশানো হয় বেঞ্জাইল পারক্সাইড। যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। শুধু তাই-ই নয়, পুষ্টিবিশেষজ্ঞদের মতে, মোমোর বাইরের শরীরে নরম ও তেলা ভাব আনতে এতে যোগ করা হয় অ্যালোক্সেনের মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক। যা কেবল বিপাকক্রিয়ার ক্ষতি করে এমনই নয়, শরীরের বিষক্রিয়া ও কৃমির সমস্যা বাড়ায়।
পুসার ইন্সটিটিউট অব হোটেল ম্যানেজমেন্ট, কেটারিং অ্যান্ড নিউট্রিশনের গবেষণায় মিলেছে আর এক আশঙ্কার কথা। মোমোর মধ্যে সালমোনল্লা-সহ এমন কিছু ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কথা তাঁরা জানিয়েছেন, যা থেকে বদহজমের সঙ্গে ডায়েরিয়া, টাইফয়েডের মতো রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: শিশুর মুখে দুধের বোতল গুঁজে নিশ্চিন্তে থাকেন? কী মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে জানেন?
এ ছাড়া ভিতরের পুরেও অনেক সময় বাসি সব্জি, পচা মাংস এমনকি পশুর নাড়িভুঁড়ি যোগ করেও বিক্রি করা হয়। কুচোনো থাকার কারণে তা অনেক সময় আমরা বুঝতেও পারি না। মোমোর সঙ্গে দেওয়া স্যুপ ও চাটনিতেও অস্বাস্থ্যকর উপাদান ও জল মেশানোর প্রবণতা থাকেই। সুতরাং রাস্তার ধারের মোমো খাওয়ার আগে এ বার থেকে সচেতন থাকুন। প্রয়োজনে বাড়িতে বানিয়ে মোমো খান বা এমন কোনও জায়গা থেকে এই খাবার খান, যেখানকার খাবারের মান সম্পর্কে আপনার আস্থা রয়েছে।
ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy