Advertisement
E-Paper

অবহেলায় শিশুর প্রাণ কেড়ে নিতে পারে এই অসুখ, আপনার সন্তান নিরাপদ তো?

প্রায় ৮৫ শতাংশ ভারতীয় শিশু কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হলেও বাবা মা প্রাথমিক ভাবে তা ধরতেই পারেন না। অথচ চিকিৎসকদের মতে, ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুর থেকে কৃমি কম সাংঘাতিক নয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:১১
শিশুর ছোটখাটো পেটে ব্যথার কথাতেও আমল দিন প্রথম থেকেই। ছবি: শাটারস্টক।

শিশুর ছোটখাটো পেটে ব্যথার কথাতেও আমল দিন প্রথম থেকেই। ছবি: শাটারস্টক।

ললিপপে মজে থাকা শিশুটি জানে না তার শরীরে বাসা বেঁধে রয়েছে এই ভয়াবহ পরজীবী। কিন্তু তার বাবা-মা? তাঁরাও কি একটু বেশি মাত্রায় উদাসীন?

চিকিৎকদের মতে, তাঁদের অজ্ঞানতাই আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় শিশুদের পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা। হ্যাঁ, প্রায় ৮৫ শতাংশ ভারতীয় শিশু কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হলেও বাবা মা প্রাথমিক ভাবে তা ধরতেই পারেন না। অথচ চিকিৎসকদের মতে, ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুর থেকে কৃমি কম সাংঘাতিক নয়।

২০০৩ সালে ভারতীয় টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ মাঠের মধ্যেই মাথা ঘুরে পড়ে যান। পরে দেখা যায় এই ভয়ঙ্কর পরজীবী তাঁর মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটিয়েছে। ২০১৬ সালে সংবাদ শিরোনামে এসেছিল নীহার থ্যাকারে নামক এক ১৬ বছরের কিশোর। এই পরজীবীর কারণেই প্রাণ গিয়েছিল তার।

আরও পড়ুন: অটিজম নিয়ে অন্ধকার কাটুক, পা মেলাল শিশুরা

শুধু দাঁতের ক্ষয় নয়, কৃমিতেও বিপজ্জনক মাত্রাতিরিক্ত ললিপপ আসক্তি।

কৃমি আসলে কী?

কৃমি এক ধরণের পরজীবী যা অন্ত্রে বাস করে। কিছু কৃমি খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। আবার কিছু লার্ভা হিসেবে ত্বকের মাধ্যমে প্রবেশ করে। কৃমি অনেক সময়ে মানুষের যকৃত এবং অন্য অঙ্গেও আক্রমণ করতে পারে।

কৃমি নানা রকমের হয়ে থাকে। কুঁচো কৃমির পাশাপাশি ২-৩ ইঞ্চি লম্বা কৃমিও হয়। এ ছাড়াও কোনও কোনও কৃমি ২-৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।

কী ভাবে রোগ ছড়ায়?

কৃমির জীবাণু মূলত ছড়ায় দূষিত খাবার এবং জলের মাধ্যমের। কৃমিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বা পশুর মলের থেকেও মাধ্যমেও সংক্রমণ হতে পারে। মাটি থেকে শরীরের চামড়ার মাধ্যমে সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে। অনেক সময় খোলা অবস্থায় রাখা স্যালাড থেকেও ঘটতে পারে বিভ্রাট।

রোগের উপসর্গ চিনুন

অস্থিরতা, অকারণে অতিরিক্ত চিন্তা, অবসাদে ভোগা, আত্মহত্যাপ্রবণ হওয়া। মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার অতিরিক্ত ইচ্ছা। রক্তাল্পতা এবং আয়রন ডেফিশিয়েন্সি। কৃমি থাকলে শরীরে রক্তের পরিমাণ কমতে কমতে অ্যানিমিয়া পর্যন্ত হতে পারে। ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়া, র‌্যাশ, অ্যাকনে, চুলকুনি ইত্যাদি হওয়া। মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়া। ঘুমনোর সময়ে মুখ থেকে লালা পড়া। অকারণে ক্লান্ত হয়ে পড়া। গা-হাত-পা ব্যথা। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। স্মৃতিভ্রম হওয়া।

আরও পড়ুন: মতবিরোধ হলেই এ সব করেন আপনি! বরং এ সব কৌশলে মেটান তর্ক

শিশু সারা দিনে কতটা মিষ্টি খায়, তার উপর নজর রাখুন।

কতটা ক্ষতির সম্ভাবনা?

কৃমি শরীরের নানা রকম মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। পুষ্টিহীনতা ও তার থেকে শরীরে রক্তশূণ্যতা কৃমিতে আক্রমণের খুব স্বাভাবিক লক্ষণ। এর ফলে বাচ্চাদের শরীরের বৃদ্ধি কমে যায়, পেট ফুলে যায়। অনেক সময়ে তীব্র পেট ব্যথা অনুভব করে। অনেক ক্ষেত্রে ফিতা কৃমি শরীরের ভিতরে অন্যান্য নাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এই পরজীবী মস্তিষ্কে পৌঁছে গেলে। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে নিউরোসিস্টিসেরোসিস। এই রোগেই আক্রান্ত হয়েছিলেন লিয়েন্ডার পেজ।

অভিভাবকদের জন্যে পরামর্শ

কৃমি নিয়ে তাই অভিভাবকদের সচেতনতা একান্ত জরুরি। প্রতি ৬ মাস অন্তর শিশুদের কৃমি-নাশক ওষুধ খাওয়ানো উচিত। এবং সেটা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। কারণ, কৃমির ওষুধের ক্ষেত্রে একটি কোর্স পূর্ণ করতে হয়।

মনে রাখা দরকার, যে শিশুর কৃমির চিকিৎসা করা হচ্ছে তার পরিবারের সকলেরই কৃমির ওষুধ খাওয়া উচিত নিয়ম মেনে। বিশেষ করে বাবা-মায়ের তা না হলে শিশুর চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয় না। বাড়িতে কোনও গৃহপালিত পশু থাকলে তাকেও ওষুধ খাওয়ানো দরকার।

চিকিৎসকদের বক্তব্য, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিশুকে ওষুধ খাওয়ালেও বাড়ির বাকি সদস্যরা তা এড়িয়ে যান। আর নিজের শিশুর ক্ষতি করেন।

(প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় লিয়েন্ডার পেজকে ভুলবশত ক্রিকেট তারকা বলে লেখা হয়েছিল। পাঠকদের ধন্যবাদ এই ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত)

Tapeworm কৃমি Child Care Tips Parenting Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy