Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
bath

স্নানের ভুলেও হয় ত্বকের সমস্যা, কোন জল, কোন তেল, সাবানই বা কী?

শরীরকে যে ভাবেই পরিষ্কার করুন না কেন, স্নানের কিছু নিয়মকানুন না মানলে সমস্যা বাড়ে।

স্নানের নিয়মে গলদ থাকলেও বাসা বাঁধবে অসুখ। ছবি: আইস্টক।

স্নানের নিয়মে গলদ থাকলেও বাসা বাঁধবে অসুখ। ছবি: আইস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:২০
Share: Save:

তাড়াহুড়োর কারণে অনেক সময় স্নানে থাকে না যত্নের ছোঁয়া। তড়িঘড়ি স্নান করলে যেমন তৈলাক্ত ত্বকের ঘাম–ময়লা পরিষ্কার হয় না, তেমনই জীবাণু বেড়ে সূত্রপাত হতে পারে চর্মরোগের৷ তাই স্নানের মূল যত্নটুকু বাদ দিয়ে শুধুই জীবাণুনাশক সাবান মেখে স্নান করলে বাড়ে বিপদ৷

ত্বক রুক্ষ হলে বার বার স্নান করলেও সমস্যা ৷ সমস্যা হয় গায়ের জোরে ঘষে ঘষে ময়লা, জীবাণু দূর করলে৷ কারণ অপকারীদের সঙ্গে কিছু উপকারী জীবাণু ধুয়ে গেলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে৷ খুব রগড়ে স্নান করলে, গায়ে যে সূক্ষ্ম আঁচড় পড়ে, জীবাণু সেই ছিদ্রপথে ঢুকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে৷ বেশি ঘষাঘষিতে ত্বকে পড়ে অকাল বলিরেখাও।

‘‘মধ্যম পন্থা ছাড়া গতি নেই৷ শুষ্ক থেকে স্বাভাবিক ত্বকে দিনে দু’–এক বার গা ধুতেই পারেন। ঠান্ডার ধাত না থাকলে স্নান করুন৷ তৈলাক্ত ত্বকে আর এক–আধবার বাড়ানোও যেতে পারে৷ শরীরকে যে ভাবেই পরিষ্কার করুন না কেন, স্নানের কিছু নিয়মকানুন না মানলে কিন্তু সমস্যা বাড়ে।’’— জানালেন ত্বকবিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ী।

আরও পড়ুন: বেল্ট দিয়ে ওজন কমাতে চাইছেন? ভয়ঙ্কর বিপদ হতে পারে কিন্তু

স্নানের জল

বেশি গরম জলে করলে ত্বক–চুল শুকিয়ে যায়৷ কম বয়সে বলিরেখাও পড়তে পারে৷ কাজেই ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করুন৷ হালকা গরমে রক্তসঞ্চালন ভাল হবে৷ তরতাজা লাগবে৷

খর জলে স্নান করলে চুল লালচে, নির্জীব হয়ে যেতে পারে৷ ত্বকে আসতে পারে কালচে ভাব৷ সে ক্ষেত্রে জলে বাথ সল্ট মেশান৷ জল মৃদু হবে, ত্বকও পরিষ্কার হয়ে ত্বকের আর্দ্রতা থাকবে ঠিকঠাক৷ তবে নিয়মিত ব্যবহারে স্পর্শকাতর ত্বকে লাল ছোপ পড়তে পারে৷ ত্বক রুক্ষ হয়ে ফেটে যেতে পারে৷ রং–গন্ধে অ্যালার্জিও হয় অনেকের৷ বাথ অয়েলও তাই৷ এমনিতে ভাল৷ তবে রং–গন্ধ ও ডিটারজেন্ট থেকে স্পর্শকাতর ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে৷ তাই বাথ সল্ট বা বাথ অয়েল ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

স্নানের সময় খেয়াল রাখুন ত্বকের উপকারী সামগ্রীর দিকে।

স্নানের সাবান

স্পর্শকাতর ত্বকে রং–গন্ধওয়ালা সাবানে সমস্যা হতে পারে৷ বেবি সোপেও অনেক সময় হয়৷ সে ক্ষেত্রে মাখুন গ্লিসারিন সাবান বা সোপ ফ্রি সোপ৷ তরল সাবানে অ্যালার্জি হলে সেটাফিল ক্লিনজিং লোশন বা অ্যাকোয়াডার্ম লিকুইড সোপ মেখে দেখুন৷ শাওয়ার জেলের মধ্যে সোপ ফ্রি জেল মোটামুটি নিরাপদ৷

ঘামাচি, ঘামের গন্ধ বা ত্বকের সমস্যায় দিন কয়েক মেডিকেটেড সোপ মাখতে পারেন৷ নিয়মিত মাখলে অ্যালার্জি বাড়তে পারে৷ ব্রণ হলে জীবাণুনাশক সাবানে বার বার মুখ ধুলে ব্রণ কমার বদলে বাড়ে৷ অন্য চামড়ার রোগেও সাবান কম মাখা ভাল৷

দিনে দু’বারের বেশি সাবান মাখবেন না৷ হালকা করে ঘষে মাখুন৷ ময়লা–তেল–কালির সঙ্গে মরা কোষ দূর হয়ে ত্বক উজ্জ্বল হবে৷

ফোম বাথের শখ হলে সোডিয়াম লরিল সালফেট রাসায়নিকের দু’-এক ছিপি দিয়ে বাথটবে জল ভরুন৷ তাতে গা ডোবালে তেল–কালি–জীবাণু যেমন ধুয়ে যাবে। দূর হবে স্ট্রেস৷ এর পর পরিষ্কার জলে গা ধুয়ে নিন৷ তবে ফোম বাথের ফেনা থেকে সামান্য কিছু ক্ষেত্রে মেয়েদের যৌনাঙ্গে বা মূত্রনালীতে সমস্যা হতে পারে৷

আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক নিয়ে ভুল কিছু ধারণাই বাড়ায় বিপদ, সতর্ক হোন এ সব ক্ষেত্রে

জলের খরতা কাটাতে ব্যবহার করতে পারেন বাথ সল্ট।

তেল

তৈলাক্ত ত্বকে দরকার নেই৷ শুষ্ক বা সাধারণ ত্বক হলে শীতকালে লাগবে তেলের ছোঁয়াচ৷ তবে আবহাওয়া উষ্ণ ও বায়ুতে আর্দ্রতা বেশি হলে তেল মাখার কারণে ঘামাচি বা ফোড়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷

তেল লাগান স্নানের পর৷ ত্বক বহু ক্ষণ সজীব থাকবে এতে৷ মালিশের সময় না থাকলে স্নানের জলে মিশিয়ে নিন৷ তারপর নরম তোয়ালে দিয়ে হালকা করে মুছে নিলেই হবে৷

স্পর্শকাতর ত্বকে গন্ধহীন নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মাখুন৷ ভিটামিন মেশানো বা ওষধি তেল মেখে কোনও লাভ নেই৷ তেল মেখে রোদে বসে থাকলে ত্বক পুড়ে যেতে পারে৷ জন্ম হতে পারে অকাল বলিরেখারও। তাই এই বিষয়টি এড়িয়ে চলুন৷

স্নানের সময় এ ক’টা বিষয় মাথায় রাখলেই শরীর পরিষ্কার হওয়ার সঙ্গে ত্বকের সমস্যাও মিটবে, জীবাণুর হানা রুখে দেওয়াও আরও সহজ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE