শ্যুটিং চলছে। তারই অবসরে অমিতাভ বচ্চন। সোমবার, শহরে। নিজস্ব চিত্র
সকাল থেকেই আলিপুরের অভিজাত পাড়ার মেজাজটা বদলে গিয়েছিল। রাত আটটাতেও পাড়ার পানের দোকানে উৎসাহী যুবকদের মুখে আলোচনা শেষ হয় না!
সুজিত সরকারের ছবির শ্যুটিং করতে শহরে অমিতাভ বচ্চন। রবিবার ছুটির দিনে ফাঁকা ডালহৌসি অফিসপাড়া বা নোনাপুকুর ট্রামডিপোয় সাইকেলে চেপে ঘুরতে অনেকেই দেখেছেন তাঁকে। সোমবার অবশ্য লোকচক্ষুর সামনে আসেননি ৭২ বছরের ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’। দিনভর বর্ধমান হাউসেই শ্যুটিং সেরেছেন।
ভক্তেরা অবশ্য আশা ছাড়েননি। দিনভর বর্ধমান হাউসের আশপাশে নজর রেখেছেন তাঁরা। যদি এক বার চোখে পড়েন ‘তিনি’! কিন্তু আশা মেটেনি। রাত আটটা নাগাদ ডায়মন্ড হারবার রোডের ধারে একটি পানের দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন জনা কয়েক যুবক। সারা দিনে কত বার, কত ভাবে উঁকি মারার চেষ্টা করেছেন, সে গল্পেই মশগুল তাঁরা। দোকানির আক্ষেপ, “যদি একটা স্পটবয়েরও কাজ পেতাম! গুরুকে দেখে চোখ সার্থক করতাম!”
শুধু ভক্তরা কেন! অমিতাভের খোঁজে দিনভর ছুটেছে সংবাদমাধ্যমও। সকাল থেকেই আলিপুরের শান্ত পাড়ায় চিত্র-সাংবাদিকদের দাপাদাপি। বর্ধমান হাউস লাগোয়া ফ্ল্যাটবাড়িতে ঢুকে তাঁদের অনুরোধ, “প্লিজ, একটা ছবি তুলে চলে যাব।” সেই অনুরোধ মেনে হাসিমুখেই ঘরে ঢুকতে দিয়েছেন ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা।
একে অমিতাভের মতো ভিআইপি, তার উপরে আলিপুরের অভিজাত পাড়া সব মিলিয়ে নিরাপত্তা দিতে কালঘাম ছুটছে পুলিশের। রাত সাড়ে আটটায় বর্ধমান হাউসের আশপাশে টহলদার দুই পুলিশকর্মীর কথোপকথনে ভেসে এল সেই প্রসঙ্গই। এক জন আর এক জনকে বলছিলেন, “কত ক্ষণ শ্যুটিং চলবে, কে জানে! সেই সকাল থেকেই এই হুজ্জুত সামলাতে হচ্ছে।”
শ্যুটিংয়ের ফাঁকে। সোমবার কলকাতায় ইরফান খান এবং দীপিকা পাড়ুকোন। ছবি: রণজিৎ নন্দী
অমিতাভের দেখা না পেলেও সোমবার ভোরের মহানগর অবশ্য নায়িকার দেখা পেয়েছে। ভোরেই বি বা দী বাগ, বৌবাজারের পথচলতি মানুষের নজর কাড়েন গোলাপি চুড়িদার পরা এক তরুণী। যত ক্ষণে তরুণীকে চিনতে পারলেন লোকজন, তিনি গাড়ির ভিতরে সেঁধিয়ে গিয়েছেন। বৌবাজার এলাকার এক যুবক বলছিলেন, “চুড়িদার পরা দীপিকাকে পাড়ার মেয়ের মতোই লাগছিল!” সকালে ডালহৌসি এলাকায় শু্যটিং সেরেছেন অভিনেতা ইরফান খানও।
কলকাতায় শ্যুটিং করার পরে ব্লগও লিখছেন অমিতাভ। সেখানে উঠে এসেছে এই শহরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও। রবিবার রাতে ব্লগে অমিতাভ লিখেছেন, “রাইটার্স, ময়দান, ভিক্টোরিয়া, ট্রাম, চৌরঙ্গি...। কত স্মৃতি...।” তাঁর লেখায় উঠে এসেছে পার্ক স্ট্রিটের মুল্যাঁ রুজ, ট্রিঙ্কা’জ, ব্লু ফক্স, নিজামের রোল, ভিক্টোরিয়ার ফুচকার কথা। এই শহরে ছোট ফ্ল্যাটে আট জনে গাদাগাদি করার ‘সুখ’ও ঝরে পড়েছে তাঁর ব্লগে।
কলকাতাই শুধু অমিতাভে আচ্ছন্ন নয়, অমিতাভও আচ্ছন্ন কলকাতায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy