Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
acidity

ওষুধ ছাড়াই অম্বলের সমস্যাকে জব্দ করুন, মেনে চলুন এ সব নিয়ম

অ্যাসিড কমানোর ওষুধ পিপিআই খেলে তা আদতে ক্ষতি।

নিয়ম মেনে অনিয়মের ধকল সামলান, হবে না অ্যাসিডিটি। ছবি: শাটারস্টক।

নিয়ম মেনে অনিয়মের ধকল সামলান, হবে না অ্যাসিডিটি। ছবি: শাটারস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:৩৬
Share: Save:

একটু অনিয়মেই অ্যাসিটিডি। সকালের উঠেও বিস্বাদ মুখ। ভারী খাওয়াদাওয়া করলেই চোঁয়া ঢেঁকুর, গলা জ্বালা। এ সমস্যা প্রায় প্রতি ঘরে ঘরেই। চটজলদি এ থেকে দূরে থাকতে হাতের কাছে থাকা প্রচলিত ওষুধেই ভরসা করেন অধিকাংশ মানুষ। এই সব প্রচলিত ওষুধের মধ্যে পিপিআই বা প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের স্থান সবার উপরে। অ্যাসিডের উৎপাদন কমিয়ে সে অম্বলের হাত থেকে শরীরকে বাঁচায়। অন্য কোনও ওষুধের সাধ্য নেই এত গভীরে কাজ করার। তাই অনেকেরই ধারমা, সকালে উঠে এমন একটি ওষুধ খেয়ে নিলেই নিশ্চিন্ত। এরপর যত অনিয়ম হোক না কেন, ভয় নেই!

কিন্তু সত্যিই কি তাই?

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো কোনও বিষয়ই নয় এটি। বরং কোনও শারীরিক প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘন ঘন অ্যাসিড কমানোর ওষুধ পিপিআই খেলে তা আদতে ক্ষতি। এর প্রভাবে কোনও ভারী খাবার খেলে অ্যাসিডের অভাবে প্রোটিন হজমে বিঘ্ন ঘটে৷ খাবার নীচে নামার প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে পেট ভার, খাবার গলায় উঠে আসা, বমি, বদহজম ইত্যাদি হতে পারে৷’’

সুতরাং কথায় কথায় পিপিআই নয়। বরং নিয়ম মেনে অনিয়মের ধকল সামলান। বেশির ভাগ অম্বলের রোগী কিন্তু নিয়ম মেনেই ভাল থাকেন। একটা অংশের সমস্যা হয় কিছু ক্রনিক অসুখ, ওষুধ, মদ বা সিগারেটের জন্য। তাই সে সব প্রতিরোধের দিকে নজর দিলে আর পিপিআই খাওয়ার দরকার হয় না৷

চাই সঠিক জীবনযাপন

ধাত থাকলে চর্বিসমৃদ্ধ খাবার, মিষ্টি, দুধ, কফি, শুকনো লঙ্কা, গোলমরিচ, টক, খুব ঠান্ডা/গরম খাবারে অম্বল হতে পারে৷ কী ধরনের খাবারে এমনটা হয়, তা খেয়াল করুন। নিয়মিত ডায়েট থেকে বাদ দিন সে সব। অম্বলের ঠেকাতে ওজন ও ভুঁড়ি কমান আগে৷ শরীরচর্চা করুন। খাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক বাদে শুতে যান৷​

নজর থাকুক খাওয়ার তালিকায়।

স্ট্রেস থেকে শুধু যে অম্বল বাড়ে এমন নয়, হৃদরোগ ও আরও অনেক জটিল ব্যাধিও বাড়ে। কাজেই পিপিআই না খেয়ে স্ট্রেসকে বশে রাখুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। খালি পেটে চা নয়। লেবু চা ও গ্রিন টি খেলেও কষ্ট বাড়তে পারে৷ দু’টি মূল খাবারের মাঝে ৪–৫ ঘণ্টার ব্যবধান রাখুন৷ ঠিক রাখুন খাওয়া–ঘুমের সময়৷ পেটের কাছে এঁটে বসে থাকে এমন পোশাক না পরাই ভাল৷ প্রতি দিনের ওষুধে অম্বলের কষ্ট বাড়ার সম্ভাবনা আছে কি না এবং থাকলে কী করণীয় সেই পরামর্শ চিকিৎসকের কাছ থেকে নিন। সিগারেট ও মদে সমস্যা বাড়ে৷ মদ্যপান ও ধূমপান দুই-ই ছেড়ে দিতে পারলে ভাল। ব্যথার ওষুধ থেকেও অম্বলের সমস্যা বাড়ে। কথায় কথায় ব্যথার ওষুধ না খেয়ে যে কারণে ব্যথা হচ্ছে তার চিকিৎসা করান।​

বিধি-নিয়ম

রাতে পার্টি থাকলে দিনে হালকা খাবার খান। পার্টিতে যাওয়ার আগে অল্প কিছু খেয়ে যান। খিদে কম থাকলে অনেকটা খেয়ে ফেলার ভয় থাকে না। বেশি খেয়ে ফেললে বাড়ি ফিরে জোয়ানের আরক খেতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে না পরে কিছু ক্ষণ হাঁটাচলা করুন৷ শুতে যান অন্তত দেড়–দু’ঘণ্টা বাদে। অম্বল হলে অল্প অল্প করে ঠান্ডা জল খেতে থাকুন। দু’–এক ঘণ্টায় কষ্ট না কমলে ৪–৬ চামচ অ্যান্টাসিড খান। দু’–তিন ঘণ্টা পর আবার খেতে পারেন। কষ্ট কমে যাওয়ার পরেও দু’–এক দিন হালকা খাবার খান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE