Advertisement
E-Paper

চর্বিযুক্ত খাবার খাবেন, অথচ ওজনও বাড়বে না

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:১২
সুস্থ থাকতে ভাল ফ্যাটের গুরুত্ব অনেক

সুস্থ থাকতে ভাল ফ্যাটের গুরুত্ব অনেক

চর্বিযুক্ত খাবার মানেই খারাপ নয়। ভাল ফ্যাটও আছে। যেমন, মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (মুফা) ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (পুফা)। চর্বিহীন খাবার খেতে গিয়ে তাদের বাদ দিয়ে দিলে বিপদ। সবচেয়ে বড় কথা, স্যাচুরেটেড ফ্যাটও বাদ দেওয়ার দরকার নেই। খাবারের মোট ক্যালোরির মাপ যত, তার ১০ শতাংশের বেশি না খেলেই হল।

তবে ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার সময় সচেতন থাকতে হবে। বাদ দিতে হবে ট্রান্স ফ্যাট। এটি বেশি খেলে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ে, কমে ভাল কোলেস্টেরল। ডায়াবিটিসে আক্রান্তদের ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমার আশঙ্কা তৈরি হয়। হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হয়। চিকিৎসকদের মতে, দিনে যত ক্যালোরি খাওয়া হয়, তার দু’শতাংশও যদি ট্রান্স ফ্যাট থেকে আসে, হৃদরোগের আশঙ্কা প্রায় ২৩ শতাংশ বেড়ে যায়। বাড়ে অন্য বিপদও। তাই ট্রান্স ফ্যাট বাদ দিয়ে ভাল ফ্যাট খান।

মুফা এবং পুফা

অলিভ অয়েল, আমন্ড, চিনেবাদাম, কাজু, হেজেলনাট, ম্যাকাডামিয়া নাট হল মুফার বড় উৎস। অ্যাভোক্যাডো, বাদাম–ক্যানোলা–স্যাফ্ তেল, পি–নাট বাটারেও এটি আছে। সামুদ্রিক মাছে আছে পুফা। আখরোট, সয়াবিনের দুধ ও টোফু, কুমড়োর বীজ, স্যাফ্লাওয়ার–সয়াবীন ও কর্ন অয়েলেও আছে।

পুফা মূলত দু’রকম। ওমেগা–থ্রি ও ওমেগা–সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড। খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে, ভাল কোলেস্টেরল বাড়াতে এরা কার্যকরী।

সবচেয়ে ভাল ফল পেতে, সারা দিনের খাবারে ওমেগা–সিক্স ও ওমেগা–থ্রি–এর অনুপাত সমান থাকা দরকার। নাহলে ২:১ বা নিদেনপক্ষে ৪:১। না হলে হৃদরোগ, ডায়াবিটিস, অ্যার্থ্রাইটিস, অ্যাঝাইমার ডিজিজ, ক্যানসার রোগের আশঙ্কা বাড়তে পারে। বয়সের ছাপ পড়তে পারে দ্রুত। হতে পারে নানা মানসিক সমস্যা।

কোন ফ্যাট খাবেন, কী ভাবে খাবেন

তৈলাক্ত ও সামুদ্রিক মাছে ও অর্গানিক পশুর মাংসে প্রচুর ওমেগা থ্রি থাকে। আখরোট, পালং, পার্সলেতেও নিম্নমানের ওমেগা থ্রি থাকে। প্রসেস্ড খাবার কম খেলে ওমেগা সিক্স ও ট্রান্স ফ্যাটের বিপদ কম থাকে। কেক, বিস্কুট, রেডি–টু–ইট ফুড, ইনস্ট্যান্ট নুডুল্স, আইসক্রিম খাওয়া কমান। সয়াবিন, বাদাম ও বীজে ওমেগা সিক্স বেশি থাকলেও এ সবের অন্য উপকার আছে। কাজেই স্ন্যাক্স হিসেবে অল্প সেঁকা বাদাম ও বীজ খান, সপ্তাহে ৪–৫ দিন। রক্তচাপ বেশি থাকলে নুন ছাড়া খাবেন। ভাজা খাবারে প্রচুর ট্রান্স ফ্যাট থাকে। কাজেই যত কম খাওয়া যায় তত ভালো। অল্প করে ফুল ফ্যাট খাবার খান। যেমন, হোল মিল্ক, ফুল ফ্যাট ইয়োগার্ট বা চিজ। সপ্তাহে দু’-এক দিন এক চামচ ঘি ও মাখন খেতে পারেন। খেতে পারেন পি–নাট বাটার। তৈলাক্ত মাছ সপ্তাহে দু’দিন অন্তত খান। বাকি দিনে দেশি চিকেন, দেশি মুরগির ডিম, রাজমা, ছোলা, ডাল, সয়াবিন খান। বাঙালি রান্না সর্ষের তেলে করাই ভালো। ক্যানোলা বা ফ্ল্যাক্সসিড অয়েলেও রাধতে পারেন। আর অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন স্যালাড ড্রেসিং–এ বা সতে শাক–সবজি–চিকেনে। পাউরুটিতে লাগিয়ে খান, মাখনের বদলে। রান্না করুন কম তেলে, কম আঁচে। তেল, বীজ বা বাদাম স্বাদে বা গন্ধে তেতো লাগলে বুঝবেন তার উপকার কমতে শুরু করেছে। তাকে বাদ দেওয়াই শ্রেয়।

মনে রাখবেন

শরীর–মন–মস্তিষ্ক ভাল রাখতে রোজ অল্প উপকারি ফ্যাট খান। বনস্পতি খাবেন না। ফ্যাট–ফ্রি বা লো–ফ্যাট খাবার ফুল ফ্যাট খাবারের চেয়ে ক্ষতিকর। লো–ফ্যাট খাবার খেলে মন ভরে না বলে, বার বার খেতে ইচ্ছে হয়। বেশি ক্যালোরি খাওয়া হয়ে যায়। ওজন বাড়ে।

আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল কমাতে, ভরসা টিএলসি ডায়েট

আরও পড়ুন: কেক খেয়েও মাতাল হতে পারেন, জানতেন!

Fat Healthy Food Good Fat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy