Advertisement
E-Paper

সময়ের অভাবে দ্রুত খাবার খাওয়ার অভ্যাস? দুই গ্রাসের মাঝে তাড়া থাকলে কী কী ক্ষতি হয় জানেন?

খাবারকে মুখ থেকে পেটে গিয়ে হজমের কাজে যদি তাড়া দেওয়া হয়, তাতে সমস্যা তৈরি হতে বাধ্য। এখন মানুষ ১০ মিনিটও সময় ব্যয় করে না একটি মিল শেষ করতে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ১৮:০৫
eating

খাবার খাওয়ার জন্য কতখানি সময় দেওয়া দরকার? ছবি: সংগৃহীত।

সবেতেই তাড়া। দ্রুত গতির জীবনে কোনও কিছুর জন্যই সময় বার করতে পারে না মানুষ। নিত্যদিনের অপরিহার্য কাজগুলিতে সময় কমিয়ে কর্মজীবনকে বিপুল গুরুত্ব দেওয়াই যেন দস্তুর। ফলে রুটিনে ঘুম, স্নান, খাওয়ার গুরুত্ব কমতে শুরু করেছে। তবে বাইরের জীবন যতই গতি বাড়িয়ে নিক, মানুষের শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া তো নিজের সময় বুঝেই কাজ করে। আর তাতে যদি যথেষ্ট সময় দেওয়া না হয়, তাদের কাজে গোলমাল হয়ে যায়। ফলে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে যায়।

খাবারকে মুখ থেকে পেটে গিয়ে হজমের কাজে যদি তাড়া দেওয়া হয়, তাতে সমস্যা তৈরি হতে বাধ্য। এখন মানুষ ১০ মিনিটও সময় ব্যয় করে না একটি মিল শেষ করতে। ফলে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমেরিকার ওহায়োর ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মনোবিদ লেসলি হেইনবার্গ দ্রুত খাওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। খাবারের সঙ্গে ব্যক্তির সুসম্পর্ক হওয়া কেন জরুরি, তার কারণও জানিয়েছেন।

হেইনবার্গের পরামর্শ, প্রথমত প্রতিটি খাবারের জন্য পর্যাপ্ত সময় বার করতেই হবে। ফাস্ট-ফুড রেস্তরাঁর খাবার বানানো এবং খাওয়ার যে অভ্যাস, তা ব্যতিক্রম হতে পারে, রোজের নিয়ম নয়। ধীর গতিতে খাবার খেলে সেটিকে উপভোগ করার সময় যেমন পাবেন , সেই সঙ্গে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে পারবেন।

খাবার খাওয়ার জন্য কতখানি সময় দেওয়া আদর্শ?

দুপুর বা রাতের খাবারের জন্য ২০ মিনিটের বেশি দিতেই হবে। আধ ঘণ্টা হলে সবচেয়ে ভাল।

eating

কী খাচ্ছেন, কী ভাবে খাচ্ছেন, তাতে মন দেওয়া খুব জরুরি। ছবি: সংগৃহীত।

কী কী সমস্যা হয় দ্রুত গতিতে খেলে?

মস্তিষ্ক ও পেটের তাল মেলে না: মনোবিদের কথায়, ‘‘মানুষের খাবার খেতে ২০ মিনিটের বেশি সময় নেওয়া উচিত। আদর্শগত ভাবে প্রায় ৩০ মিনিট। যাতে মস্তিষ্ক আর পেট তাল মিলিয়ে চলার সুযোগ পায়। দরকারে টাইমার ব্যবহার করে আধ ঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে খেতে হবে। যে ব্যক্তি ২০-৩০ মিনিটেরও কম সময়ে একটি মিল শেষ করেন, তাঁদের শরীরে নিয়ম ঘেঁটে যায়। শরীর মস্তিষ্কে এই বার্তা পাঠাতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় নেয়, যে পেট ভরে গিয়েছে। আপনার যদি দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তার মানে ওই ২০ মিনিটে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন রোজ। যত ক্ষণে আপনি পেট ভরার সঙ্কেত পাচ্ছেন, তত ক্ষণে আপনার পেট অত্যন্ত বেশি ভরে গিয়েছে। সময়মতো সঙ্কেত পাননি। আর তাতে ওজন বৃদ্ধি পায় এবং বদহজমের সমস্যা হয়।’’

চিবোনোর জন্য যথেষ্ট সময় থাকে না: খাবারের প্রতিটি কণা ভাল করে চিবিয়ে না খেলে শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকেরা খাবার গিলে ফেলার আগে যথাসম্ভব ভাল করে চিবিয়ে খেতে বলেন, যাতে খাবারের কণাগুলি ভাল করে ভেঙে যায় এবং দ্রুত হজমের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

দুই গ্রাসের মাঝে সময় দেওয়া হয় না: প্রতিটি কামড় বা মুখে পুরে ফেলার মাঝে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দেওয়া হয় না দ্রুত খেলে। ফলে পেট এবং মস্তিষ্কের হাতে কোনও সময় থাকে না। তাতে অতিরিক্ত পেট ভরে যায় এবং শরীরে অস্বস্তি হতে শুরু করে। হজমের প্রক্রিয়ায় বাধা পড়ে।

মুখ শুকিয়ে যেতে থাকে: গ্রাস এবং গেলার জন্য তাড়াহুড়োর মাঝে অনেকেই ভুলে যান যে, তাঁদের মুখ শুকিয়ে গিয়েছে, গলা দিয়ে খাবার নামছে না। এই পরিস্থিতি তৈরির কারণ হল, জলের অভাবে শুষ্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই খাবারের মাঝেমাঝে অল্প চুমুক দিয়ে গলা ভিজিয়ে নেওয়া দরকার। এতে অতিরিক্ত খাওয়া থেকেও নিজেকে রোধ করা যায়।

মনোযোগের অভাব ঘটে: খাবার খাওয়ার সময় একঘেয়েমি কাটাতে অথবা ওই সময়টিকে বিনোদনের কাজে লাগানোর জন্য অনেকেই টিভি বা ফোন দেখতে থাকেন। কী খাচ্ছেন, কী ভাবে খাচ্ছেন, তাতে মন দেওয়া খুব জরুরি। খাবারের রসাস্বাদনের জন্য খাবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার। আর তার জন্য সব ক’টি ইন্দ্রিয়কে সজাগ রাখা উচিত।

Fast Eating Disadvantages Lifestyle Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy