রসালো জাম আর তার সঙ্গে ঝাল নুন। কলকাতার অফিস পাড়া চত্বরগুলির মোড়ে মোড়ে আর ক’দিন পরেই দেখা যাবে ঝাঁকায় সাজানো কালচে বেগুনি রঙের ফল। দেখা মিলবে মফস্বলের রাস্তার পাশের ঠেলাগাড়িতে, গ্রাম-গঞ্জের বাজার হাটেও। চোখের সামনে দেখে তার আকর্ষণ এড়ানো মুশকিল। সামান্য কষা ভাব আবার একই সঙ্গে মিষ্টিও। স্বাদের এমন অদ্ভুত বৈপরীত্যের জন্যই জামের কদর বেশি। কিন্তু সুস্বাদু এই ফল কাদের বেশি খাওয়া উচিত, তা থেকে কী কী উপকারই বা পাওয়া যেতে পারে জানেন কি?

ডায়াবিটিস
যে ডায়াবিটিস নিয়ে বিশ্ববাসী চিন্তিত, ভারতে যার হার ক্রমেই বাড়ছে, সেই ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য জাম অত্যন্ত উপকারী। কারণ জামে থাকা দু’টি উপাদান জাম্বোলিন এবং জাম্বোসিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আয়ুর্বেদে জামের পাতা, জাম গাছের ছাল মধুমেহ রোগের ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করার চল রয়েছে। কিছু গবেষণা এ-ও বলছে যে জামের বীজ এবং জামের রস রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ
অতিমারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মানুষের রোগপ্রতিরোধ শক্তি। তা এতটাই খারাপ পর্যায়ে গিয়েছে যে, ইদানীং সামান্য সর্দি-কাশিতেই কাহিল হয়ে পড়ছেন বহু মানুষ। জামে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস রোগপ্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে নানারকম সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা জোগায়।

পেট এবং লিভারের স্বাস্থ্য
শরীরের অধিকাংশ রোগ দানা বাঁধে লিভার ভাল না থাকলে। কারণ লিভার যেমন খাবার পরিপাকের জন্য জরুরি, তেমনই শরীরে বিভিন্ন হরমোনের নিঃসরণও নিয়ন্ত্রণ করে লিভার। জামে থাকা জৈবসক্রিয় উপাদান এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস লিভারকে দূষণমুক্ত করে লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। এ ছাড়া জামে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার। যা হজম ক্ষমতা ভাল রাখে। কোষ্ঠকাঠিণ্যের সমস্যা দূরে রাখে। পাশাপাশি ভাল রাখে পেটের স্বাস্থ্যও।
রক্তাল্পতা
জামে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার সমস্যায় যা অত্যন্ত জরুরি। রক্তাল্পতার সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভোগেন মহিলারা। তাই তাঁদের জাম খাওয়া দরকার।
ত্বকের স্বাস্থ্য
জামে রয়েছে ভিটামিন এ এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস। যা ত্বককে দূষণমুক্ত করে তরতাজা রাখে এবং বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না সহজে। বজায় রাখে ত্বকের স্বাস্থ্যও।