স্বাদের অনুভূতির একটা বড় সমস্যা রয়েছে। ছবি: শাটারস্টক
এই প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, কোভিডের ক্ষেত্রে শুধু নয়, অনেক ক্ষেত্রে যে কোনও ভাইরাল জ্বরেই স্বাদ-গন্ধ চলে যায়। শুধু স্বাদ-গন্ধ চলে গেলেই কোভিডে এমনটা নয়। সঙ্গে আরও কিছু দেখা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ক্যানসার ঠেকাতে সঙ্গে থাকুক বিশেষ এই ফল-সব্জি
কোভিড আবহে তাহলে কী করবে মানুষ?
এখন জ্বর এলে তার সঙ্গে যদি স্বাদ-গন্ধ চলে যায়, তা হলে একটা সন্দেহের জায়গা থাকে চিকিৎসকের। তাহলে কি কোভিড হল? কিন্তু আরটিপিসিআর পরীক্ষা না করে কোনও কিছু বলা উচিত নয়। কোভিডের ক্ষেত্রে স্বাদ-গন্ধ চলে গেলে সঙ্গে একটা শুকনো কাশি হয়, নাক দিয়ে জল পড়া, এই ব্যাপারটা এখনও দেখা যায় না।
এমন কেন হয়
কোভিড ভাইরাসের ক্ষেত্রে হিস্টামিনের খুব একটা যোগ নেই। তাই শুকনো কাশিটাও থাকে একই সঙ্গে। কোষ থেকে হিস্টামিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক ক্ষরণ হয়। এই হিস্টামিনকে কোভিড খুব একটা বিরক্ত করে না, তাই নাক দিয়ে জল পড়া ইত্যাদি খুব একটা বেশি দেখা যায় না কোভিডের ক্ষেত্রে।
শুধুমাত্র স্বাদ-গন্ধ চলে গেলেও আতঙ্ক না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন সুবর্ণবাবু। তিনি বলেন, অ্যাডেনো ভাইরাসের ক্ষেত্রে বা ফ্লু থেকেও স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি চলে যায়। তবে কোভিড চিকিৎসার ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যালি অর্থাৎ শুধুমাত্র উপসর্গ দেখে চিকিৎসার বিষয়টা শুধু নয়, পরীক্ষা করে দেখতেই হবে পজিটিভ আসছে কি না। ম্যালেরিয়ার জ্বরের ক্ষেত্রে যেমন স্বাদ-গন্ধ চলে গেল, লিভার বড়-এমন দেখা গেল আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক ম্যালেরিয়া ধরে এগোতে পারেন তাও। কিন্তু কোভিডের ক্ষেত্রে বিষয়টা আরও বেশি জটিল। উপসর্গ দেখা গেলে তার পর টেস্ট করে তবেই কোভিডের চিকিৎসা করা হচ্ছে।
নাকের ভিতরে পলিপ থাকলে, কিংবা ডায়াবিটিস, অ্যালঝাইমার্স ও পার্কিনসনসের মতো অসুখ হলে অনেক সময় রোগীরা ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তা হলে?
এই প্রসঙ্গে বেলেঘাটা আইডির চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বললেন, শুধু মাত্র স্বাদ-গন্ধ হারিয়ে যাওয়া নয়, কোভিডের ক্ষেত্রে আরও কোনও একটা অস্বস্তি থাকবে শরীরে। হতে পারে মাথা ব্যথা বা অল্প জ্বর। গা-হাত পা ব্যথার সঙ্গে স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি চলে যাওয়া এমনও হয়েছে কোভিডে। অনেক ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয়েছে। তাই টানা চার পাঁচ দিন এ জাতীয় সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একটা নতুন অসুখ এটা। তাই এ নিয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এখনও পর্যন্ত করোনার কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায়, আপাতত অনুসন্ধানী চিকিৎসাতেই ভরসা রাখছেন চিকিৎসকরা।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)