E-Paper

মোবাইলে আসক্তি কমাতে পড়ুয়াদের মাঠে ফেরানোর উদ্যোগ স্কুলে স্কুলে

সিআইএসসিই বোর্ড সম্প্রতি তাদের অধীনস্থ স্কুলগুলিকে নিয়ে দেশ জুড়ে আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৭
ড়ুয়াদের খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ।

ড়ুয়াদের খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ। ছবি সংগৃহীত।

অনলাইনে ‘মোটরবাইক রেস’ নয়, বরং বাস্তবের মাঠে পড়ুয়াদের দৌড় প্রতিযোগিতায় নামাতে চাইছেন শিক্ষকেরা। মোবাইলে ‘ভার্চুয়াল’ ফুটবলের বদলে ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিজেদের পায়ে বল নিয়ে দৌড়য়, সেই ব্যবস্থাও করছে স্কুলগুলি। শহরের বিভিন্ন স্কুলের অধ্যক্ষদের মতে, বাগুইআটির জোড়া খুনের ঘটনায় যে ভাবে দশম শ্রেণির পড়ুয়ার মোবাইলে গেম খেলার প্রতি প্রবল আসক্তির কথা উঠে এসেছে, তাতে তাঁদের মনে হয়েছে, পড়ুয়াদের খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনাটা খুব জরুরি। একমাত্র তা হলেই কমতে পারে গেম খেলার আসক্তি।

সিআইএসসিই বোর্ড সম্প্রতি তাদের অধীনস্থ স্কুলগুলিকে নিয়ে দেশ জুড়ে আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। গোটা দেশে ওই বোর্ডের যে ১২টি ‘রিজিয়ন’ বা অঞ্চল রয়েছে, সেখানকার স্কুলগুলিকে নিয়েই হবে প্রতিযোগিতা। যে স্কুল জিতবে, তারা জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ পাবে। সমস্ত শ্রেণির পড়ুয়ারাই যাতে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে, তারও ব্যবস্থা করেছে বোর্ড। রয়েছে সাব-জুনিয়র বয়েজ়, সাব-জুনিয়র গার্লস, জুনিয়র বয়েজ়, জুনিয়র গার্লস এবং সিনিয়র বয়েজ় ও সিনিয়র গার্লস বিভাগ। লিগ ও নক-আউট পর্যায়ে খেলা হবে। অংশগ্রহণ করলেই মিলবে শংসাপত্র। তা ছাড়া, নানা ধরনের পুরস্কারও দেওয়া হবে। ওই প্রতিযোগিতায় দৌড়, সাঁতার থেকে শুরু করে, ব্যাডমিন্টন, তিরন্দাজি, ফুটবল, হকি, ক্রিকেট, কবাডি-সহ ২৪ রকমের খেলা রয়েছে।

সিআইএসসিই বোর্ডের অধীনস্থ স্কুলের অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, পড়ুয়াদের অনেকেরই খেলাধুলোয় ভাল রকম উৎসাহ রয়েছে। তবে তাতে গেম খেলার প্রবণতা যে পুরোপুরি কমে গিয়েছে, তা নয়। কয়েক জন অধ্যক্ষ জানাচ্ছেন, অভিভাবকেরা অনেকে তাঁদের জানিয়েছেন, স্কুলে মোবাইল নিয়ে আসা বন্ধ করা সম্ভব হলেও বাড়িতে মোবাইল ঘাঁটার নেশা কমানো যাচ্ছে না।

করোনা-পর্বে অনলাইন ক্লাসের সুবাদে পড়ুয়াদের অনেকের হাতেই এখন নিজস্ব মোবাইল রয়েছে। সেই ফোন আর শুধু পড়াশোনা নয়, নানা ধরনের গেম খেলা বা শর্ট ভিডিয়ো তোলার কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘ফোন নিয়ে ছেলেমেয়েরা কী করছে, তা সব সময়ে নজরে রাখা সম্ভব নয়। ফোন কেড়ে নিলে আবার রাগ করে দরজা বন্ধ করে বসে থাকছে। তখন আবার অন্য আশঙ্কা হচ্ছে।’’

ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা বলেন, ‘‘খেলাধুলোর পাশাপাশি বিতর্কসভা ও কুইজ়েরও আয়োজন করছি আমরা। পড়ুয়াদের মধ্যে খুব উৎসাহ রয়েছে।’’ মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী কর মনে করেন, ‘‘খেলাধুলোর মাধ্যমে মোবাইলে আসক্তি কমানো যেতেই পারে। তবে সব সময়ে প্রতিযোগিতা নয়, আনন্দ পেতেও খেলাধুলো করুক পড়ুয়ারা।’’ রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘বোর্ডের এই প্রতিযোগিতায় যারা সুযোগ পাচ্ছে, তারা তো খেলছেই। যারা সুযোগ পাচ্ছে না, তারাও স্কুলে ভাল খেলে প্রতিযোগিতায় নামার চেষ্টা করছে। সব দিক থেকেই উৎসাহ খুব বেশি। আশা করি, এ ভাবেই মোবাইলে আসক্তি কমবে পড়ুয়াদের মধ্যে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mobile Addiction Playground

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy