মরদেহকে সাজিয়ে তোলার পেশা! —প্রতীকী ছবি
চলচ্চিত্র সুন্দর করতে যেমন প্রয়োজন হয় দক্ষ পরিচালক, তেমনই শেষকৃত্যেও যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে, তা নিশ্চিত করতে ডাক পড়ে মা ও মেয়ের। লন্ডনের বাসিন্দা মিশেল স্লিন ও তাঁর কন্যা জোডি পেশায় ‘শেষকৃত্য পরিচালক’। তবে দু’জনে মিলে কেবল শেষযাত্রা নয়, সাজিয়ে তোলেন মৃত ব্যক্তিকেও। মরদেহের মুখে রূপটান করেন তাঁরা। কলপ করে দেন চুল।
৫৬ বছর বয়সি মিশেল দীর্ঘ দিন ধরেই শেষকৃত্য আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত। কন্যা জোডি অবশ্য প্রাথমিক ভাবে কখনও ভাবেননি এই পেশায় আসার কথা। কিন্তু সব হিসাব বদলে যায় তাঁর বাবা লিওনার্ড মারা যাওয়ার পর। জোডি জানিয়েছেন, তিনি তার আগে বহু মানুষের শেষকৃত্যে গিয়েছেন। কিন্তু নিজের এত কাছের এক জন মানুষের মৃত্যু সেই প্রথম। তার উপর যাঁরা সে দিন তাঁর বাবার মৃতদেহ সামলাচ্ছিলেন, তাঁদের কাজ মোটেই পছন্দ হয়নি তাঁর। শেষ যাত্রায় বাবাকে অগোছালো দেখে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তার পরই সিদ্ধান্ত নেন, মায়ের সঙ্গেই কাজ করবেন। সেই মতো ২০১২ সালে একই পেশা বেছে নেন তিনি।
সম্প্রতি এই পেশায় এক দশক পূরণ করলেন মা-মেয়ে। জীবন কখন ফুরিয়ে যায়, বলতে পারেন না কেউই। তাই শেষযাত্রায় অযত্ন প্রাপ্য নয় কারও, মত দু’জনের। অনেক সময়েই বাড়ির লোক চান মৃত্যুর পরেও যেন বিকৃত না হয় প্রিয়জনের মুখ। তাই মুখ ও চুলের রূপটানের ব্যবস্থাও করেছেন তাঁরা। এক দশকের স্মৃতিচারণায় মা-মেয়ে জানিয়েছেন, এক বার এক তরুণীর শেষকৃত্যে গিয়েছিলেন তাঁরা। এক বার আবার দুই যমজ শিশুর শেষকৃত্যে যোগ দিতে হয়েছিল তাঁদের। দু’ক্ষেত্রেই মৃতের পরিজনেরা এতই সন্তপ্ত ছিলেন যে, কী করণীয় বুঝতে পারছিলেন না তাঁরা। শেষ পর্যন্ত মা-মেয়ে মিলেই শেষ বারের মতো সাজিয়ে তোলেন মৃতকে। মৃত্যু নিয়ে কাজ করতে করতে অবসাদ আসে না? মা-মেয়ের দাবি, অবসাদ নয়, বরং এই কাজই প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেয় জীবনের মর্ম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy