Advertisement
E-Paper

ফুটন্ত ফুলই দেবে জীবনের শিক্ষা! জাপানি পন্থা ‘ওবাইটোরি’ কেন শিশুর বিকাশে সহায়ক হতে পারে?

জাপানি জীবন দর্শন অনুপ্রাণিত ফুটন্ত ফুল থেকে। জীবনবোধের শিক্ষা মিলবে প্রকৃতি থেকে? কী বলে জাপানি দর্শন ‘ওবাইটোরি’?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৫ ১০:৩১
ফোটা ফুলই জীবনের পাঠ দেয়? কী শেখা যায় জাপানি দর্শন থেকে?

ফোটা ফুলই জীবনের পাঠ দেয়? কী শেখা যায় জাপানি দর্শন থেকে? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

কখনও ভেবেছেন কি, ফুটে ওঠা ফুলও জীবনের শিক্ষা দিতে পারে? জোগাতে পারে নিজের শর্তে, নিজের মতো করে বাঁচার আশ্বাস? ফুটে ওঠা ফুল থেকেই জীবনের আদর্শের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে জাপান। এ এক এমন দেশ, যেখানকার মানুষজনের জীবনযাপন, ভাবনা-দর্শন নিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তের আগ্রহ রয়েছে।

জাপানি দর্শনই বলছে 'ওবাইটোরি'-র কথা। যার অর্থ কারও সঙ্গে তুলনা না টেনে, নিজের শর্তে, নিজের মতো করে বেড়ে ওঠা। ওবাইটোরি মনে করে, একজনের সাফল্য দেখিয়ে তুলনা টানা আসলে এক জন মানুষের বা শিশুর প্রতিভাকে নষ্ট করে দিতে পারে।

জাপানের দর্শন যা বলছে, তা বলেন ভারতীয় মনোবিদেরাও। মনো-সমাজকর্মী মোহিত রণদীপ বার বার বলেন, শিশুর বেড়ে ওঠার সময়ে বা সন্তান বড় হয়ে গেলেও পরিবারের অন্য কাউকে দেখিয়ে সাফল্যের নিদর্শন তুলে ধরা বা তুলনা টানা অনুচিত। এতে শিশু নিজেকে আরও গুটিয়ে নিতে পারে।

অদ্ভুত ভাবে জাপান এই শিক্ষা নিয়েছে প্রকৃতির কাছ থেকে। ওবাইটোরি শব্দটি চেরি, প্লাম, পিচ এবং অ্যাপ্রিকট ফুল ফোটার ভাবনা থেকে গৃহীত। এই চার ফুল ফোটে বিভিন্ন ঋতুতে। প্রতিটি ফুলই নিজের মতো করে সুন্দর। তাদের প্রত্যেকের নিজস্বতা রয়েছে। ওবাইটোরি মনে করায়, প্রতিটি শিশু, প্রতিটি মানুষই স্বতন্ত্র। প্রত্যেকেই তার নিজের মতো করে সুন্দর। তাই অহেতুক কাজ বা সাফল্য নিয়ে তুলনা টানা অর্থহীন।

বাস্তবে চোখে রাখলে দেখা যাবে, প্রতি দিনই এই তুলনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। শিশুরাও বাদ পড়ে না। অনেক তারকা সন্তানকেও এমন তুলনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যা তাঁদের কাছে বাড়তি চাপের কারণ হয়ে ওঠে।

অথচ প্রত্যেক শিশুই কিন্তু আলাদা পরিসরে বেড়ে ওঠে। তাদের বুদ্ধিমত্তা, ভাবনা, আদর্শ সবই আলাদা হয়। একই পরিবারে একই সঙ্গে বেড়ে ওঠা যমজ সন্তানদের মধ্যেও ভাবনা, স্বভাবে বিস্তর ফারাক থাকে। তাই প্রত্যেকের সাফল্যের সংজ্ঞাও আলাদা। গাছের বেড়ে ওঠার জন্য যেমন উপযুক্ত পরিবেশ দরকার, শিশুর বড় হওয়ার জন্যও ঠিক তাই। বেড়ে ওঠার সঠিক আবহাওয়া পেলে এক সময় সে তার মতো করেই সফল হবে।

কেন প্রাসঙ্গিক ওবাইটোরি?

সমাজমাধ্যমের যুগে অনেকেই তাঁদের সাফল্যের ছবি তুলে ধরেন। তা দেখেই কারও নিজেরই মনে হয়ে, ছোটবেলার বন্ধু আজ কোথায় পৌঁছে গিয়েছে, অথচ তিনি কোথায়! মনে মনে ঈর্ষা হয়, কারও আবার হতাশা আসে। পরিবারের অনেকে এ সব দেখেশুনে তুলনাও টানেন। বিশেষত পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফল না করলে বা ভাল কলেজে পড়ার সুযোগ না পেলে এমন তুলনার সম্মুখীন হতেই হয়। আসলে এই তুলনা যে কাউকে জীবনে এগিয়ে দিতে পারে না, বরং সময় এলে সাফল্য নিশ্চয়ই আসবে, এমন দর্শনকে উস্কে দেয় ওবাইটোরি।

কী ভাবে এই দর্শনকে জীবনে প্রয়োগ করবেন?

নিজেকে গ্রহণ: গুণ, খামতি দুই নিয়েই একজন মানুষ। প্রথমে কেউ যেমন, তেমন ভাবেই তাঁকে গ্রহণ করতে হবে। অনেকেই নিজেকে নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। সেই ভাবনা থেকে বেরোতে হবে।

গুণের পরিচর্যা: প্রত্যেকরই কোনও না কোনও গুণ থাকে। নিজের ক্ষমতাগুলি বুঝতে হবে। সেই গুণগুলির বিকাশে মন দিলেই আত্মিক উন্নয়ন সম্ভব। একই ভাবে অভিভাবকদেরও সন্তানের ইতিবাচক দিকগুলি চিহ্নিত করে তাকে এগিয়ে যাওয়ার পথে সাহায্য করতে হবে।

জীবনের প্রাপ্তিগুলিকে উপভোগ করতে পারা বড় ক্ষমতা। অন্যকে দেখে ঈর্ষান্বিত হওয়া নয়, বরং নিজের ভাললাগাগুলিকে নিয়ে কী ভাবে জীবনে এগোনো যায়, সেগুলি থেকে সাফল্য আসতে পারে, তা নিয়ে ভাবতে হবে।

Oibaitori Japanese Techniques japanese
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy