Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Anuttama Banerjee

Prisoner’s Freedom: জেল থেকে মুক্ত হয়েও কি স্বাধীন হওয়া যায়? সংশোধনাগারের মনোবিদের সঙ্গে আলোচনায় অনুত্তমা

লোকে কী বলবে? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এ সপ্তাহের বিষয় ‘জেল থেকে মুক্তি’!

লোকে কী বলবে? সঙ্গে অনুত্তমা।

লোকে কী বলবে? সঙ্গে অনুত্তমা। গ্রাফিকঃ সনৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২২ ২০:৪৮
Share: Save:

আইনের চোখে প্রত্যেকে অভিযুক্ত। কারও কারও অপরাধ গর্হিত। কিন্তু সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেকেই। প্রত্যেকেই দীর্ঘ দিন হাজতবাস করেছেন। তার পর জেল থেকে যখন কেউ মুক্তি পান, তাঁর জীবন কতটা স্বাধীন থাকে? জেল থেকে ছাড়া পেলেও সমাজ কি তাঁকে ছাড় দেয়? আদৌ কি তাঁরা মুক্ত?

মুক্তির এই অন্বেষণের সংলাপ নিয়েই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদ্‌যাপনের মাসে ‘লোকে কী বলবে’-তে মুক্তির একটি ধারাবাহিক পর্ব চলছে। ‘লোকে কী বলবে! সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এ সপ্তাহের বিষয় ‘জেল থেকে মুক্তি’। প্রতি পর্বের আগেই অনুত্তমার কাছে পাঠানো যায় প্রশ্ন। এই পর্বে তেমন কিছু প্রশ্ন পেয়েছিলেন মনোবিদ। তবে অনুত্তমা একা নন, এই পর্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংশোধনাগারের মনোবিদ বসুন্ধরা গোস্বামী।

এখন আর জেল বলা হয় না, বলা হয় সংশোধানাগার। সেখান থেকে বেরিয়ে যদি কেউ সত্যিই মনে করেন নতুন করে জীবন শুরু করবেন, সমাজ কি তাঁদের সেই সুযোগ দেয়? অবজ্ঞা, ঘৃণা, অবিশ্বাস পেরিয়ে সত্যিই কি তাঁদের জন্য নতুন অধ্যায় শুরু করা সম্ভব হয়? এমন সব প্রশ্নই বার বার উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

এক জন লিখেছেন, ‘আমার এক প্রিয় মানুষ চাকরিসূত্রে ছিলেন সিআরপিএফ-এ। প্রায় ১৯ বছর তিনি দেশের জন্য কাজ করেছেন। তবে চাকরির একেবারে শেষ সময়ে তিনি তাঁর এক সহকর্মীর সঙ্গে বচশার মধ্যে আঘাত করে ফেললেন। এতে তাঁর চাকরি চলে যায়। ১৫ বছরের সাজাও হয়। সাজা কাটিয়ে বাড়ি ফেরার পর পরিবারের সঙ্গে ঠিক মানিয়ে উঠতে পারছেন না তিনি। ওঁর মধ্যেও অপরাধবোধ কাজ করছে। পরিবারের সদস্যরাও ওঁকে ঠিক আর আগের চোখে দেখে না। সমাজের অন্যরাও তাঁকে আর ভাল নজরে দেখছেন না।’

দীর্ঘ দিন ধরে জেলবন্দিদের মনের শুশ্রূষা করেছেন বসুন্ধরা। জেলের ভিতরের পরিবেশ, বন্দিদের দৈনন্দিন যাপন সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। সবটা দেখেছেন খুব কাছ থেকে। অনুত্তমা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘সংশোধানাগার থেকে মুক্তির ঠিক আগে বন্দিদের কি এই বিষয়ে কোনও রকম কাউন্সিলিং করানো হয়?’’

বসুন্ধরা বললেন, ‘‘সংশোধানাগার থেকে বন্দিদের বার করার আগে আমাদের বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। ব্যক্তির হাতে যেন সামান্য টাকা থাকে, তাঁর জন্য একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেই ব্যক্তি যে পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা, সে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে আমরা আগে থেকেই যোগাযোগ করি। আমরা চেষ্টা করি তাঁকে বোঝানোর যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ইতিমধ্যেই তাঁর সাজা কাটিয়ে ফেলেছেন। তাঁকে যেন সমাজ থেকে বঞ্চিত করে আর নতুন করে সাজা না দেওয়া হয়। সবের আগে সমাজের মানসিকতা বদলানো প্রয়োজন। অনেক বন্দির আবার ‘ওপেন জেলে’ পাঠানো হয়। ১২ থেকে ১৪ বছর সাজা কাটানোর পর এই ‘ওপেন জেলে’ ব্যবস্থায় বন্দিদের পুনরায় সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর ভাবনা দেখা যায়। সেখানে তাঁরা পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ পান, লোন নিয়ে ব্যবসা করারও সুযোগ থাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anuttama Banerjee loke ki bolbe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE