খুদের সঙ্গে কথা বলার সময় কোন কথাগুলি বলবেন, আর কোনগুলি বলবেন না, সেটি ভেবে দেখা দরকার। শিশুদের মনস্তত্ত্ব কিন্তু বেশ জটিল। আপনার অসতর্ক হয়ে বলা কোনও কথাও কিন্তু ওর মনের মধ্যে বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে।
শিশুর চারপাশের পরিবেশ তার বেড়ে ওঠার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। খুদের সঙ্গে কী কথা বলছেন, সেটি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই তার সামনে অন্যের সঙ্গে কথা বলার সময়েও কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। আপনি হয়তো ভাবছেন, খুদের সঙ্গে ঠিক আচরণই করছেন, কিন্তু অনবধানতাবশত কোনও প্রসঙ্গ নিয়ে ওকে হয়তো কিছু বললেন, তাতে ওর মনে গভীর ক্ষত তৈরি হল, এমন হতেই পারে। জেনে নিন, কোন কাজগুলি শিশুদের সামনে ভুলেও করবেন না।
তুলনা করবেন না: কোনও দিদি-ভাই-বোন কিংবা বন্ধুর সঙ্গে কখনও খুদের তুলনা করবেন না। এতে শিশুর মনে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। আপনার সন্তান যে রকম, সেই নিজস্বতাকে স্বীকৃতি দিয়েই ওকে এগিয়ে যেতে দিন। তাদের পরীক্ষার ফল দেখে কখনও ভুলেও বলবেন না যে, আরও ভাল হতে পারত। নম্বর নিয়ে তুলনা করতে হলে ওর নিজের নম্বরের সঙ্গে তুলনা করুন। আগের থেকে আদৌ তার কোনও উন্নতি হল কি না, তা ওর নম্বর দেখেই আপনি সবচেয়ে ভাল বুঝতে পারবেন।
নিরুৎসাহ করবেন না: কোনও কাজ ভুল করলে সেটি খুদেকে বলুন, কিন্তু শিশুর মধ্যে সেই ভুলের জন্য অপরাধবোধ জমতে দেবেন না। আপনার এই আচরণ ওর মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি করতে পারে। কখনওই তাকে বলবেন না, ‘কোনও কাজই তুমি ঠিক করতে পারো না।’
সময়ের ব্যাপারে কার্পণ্য করবেন না: শিশুর সঙ্গে একান্তে সময় কাটানো কিংবা তার সঙ্গে মন খুলে কথা বলারও সময় নেই আপনার হাতে? কঠোর হতে গিয়ে নিজের অনুভূতিগুলি খুদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখলে সে-ও কিন্তু ভবিষ্যতে অনুভূতিশূন্যতার সমস্যায় ভুগবে। দিনের একটি সময় কেবল শিশুর জন্যই বরাদ্দ রাখুন। সে নিজের মনের কথা বলতে চাইলে, তাকে থামিয়ে না দিয়ে বলতে দিন।
ছেলে ও মেয়ের তফাৎ করা চলবে না: ছেলে এবং মেয়ে, দু’জনকেই সমান চোখে দেখুন। ছেলেদেরকে যে সব কাজের জন্য স্বাধীনতা দিচ্ছেন, মেয়েদেরও তা থেকে বঞ্চিত করবেন না। ‘মেয়ে হয়ে এই কাজ তোমায় মানায় না’— এই প্রকার কোনও মন্তব্য কন্যার কাছে করবেন না।
প্রত্যাশার বোঝা চাপাবেন না: আপনি শিশুর জন্য কী কী করছেন, তা ওকে জানতে না দিলেও চলবে। এই প্রকার কোনও মন্তব্য শিশুর মনের উপর বোঝা হয়ে উঠতে পারে।