Advertisement
E-Paper

মুখের কথা খসালেই জিনিস চাই? না পেলেই বায়না, কী ভাবে অবাধ্য সন্তানকে বাগে আনবেন?

রাস্তা হোক বা আত্মীয়ের বাড়ি কোনও জিনিস দেখলেই বায়না শুরু খুদের? রাস্তাঘাটে চিৎকার, কান্না জুড়ে দেয়? অবাধ্য সন্তানকে সামলাবেন কী করে?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫ ০৯:৫৮
সন্তানের বায়না সামলাতে গিয়ে নাজেহাল? কী ভাবে শান্ত করবেন তাকে?

সন্তানের বায়না সামলাতে গিয়ে নাজেহাল? কী ভাবে শান্ত করবেন তাকে? ছবি: এআই।

মুখের কথা শুধু খসার অপেক্ষা! জিনিস না পেলেই চিলচিৎকার। রাস্তাঘাট, লোকজনের সামনে সে এক বিব্রত অবস্থা। এই ছবি কি চেনা লাগছে? সন্তানের বায়নার জন্য এমন অনেক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় বাবা-মাকে। বকে, ধমকেও বশে আনা যায় না খুদেকে। কী ভাবে সামাল দেবেন সন্তানের বায়না?

মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘সন্তানের এমন অবাধ্য হয়ে ওঠার জন্য কিছুটা হলেও অভিভাবকদের একাংশ দায়ী। বেশি আহ্লাদ দিতে গিয়ে চাইতে না চাইতেই জিনিসপত্র হাজির করেন তাঁরা। পেতে পেতে এক সময় চাহিদাও হয়ে যায় লাগামছাড়া। বিশেষত সে যদি জানে কেঁদে, চেঁচিয়ে কার্যোদ্ধার করা যায়, তা হলে তো কথাই নেই। আবার অভিভাবকের কাউকে যদি সে দেখে, চিৎকার করলেই কাজ হচ্ছে, একই জিনিস শিখবে সে।’’

দিদিমা, ঠাকুরমারা যেমন নাতি-নাতনিদের শখ, আহ্লাদ পূরণ করেন, তেমনই অনেক সময় বয়স্কেরা পরামর্শ দেন, সন্তান কিছু চাইলে সঙ্গে সঙ্গেই তা দেওয়া ঠিক নয়। দিলেও, সময় হাতে রেখে দেওয়া দরকার। আবার কোনও কোনও অভিভাবকের মত, তাঁদের ছোটবেলায় যে অপূর্ণতা ছিল, তা তাঁরা সন্তানদের জীবনে রাখতে চান না। দুই মত দু’রকম। তা হলে ঠিক কোনটি? অনিন্দিতা পরামর্শ, এ ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য থাকা দরকার। সন্তানকে কিছু দিতে হলে সেটি ভাল আচরণ বা কোনও কাজের পুরস্কার বাবদ দেওয়া দরকার। এতে সন্তান পুরস্কারের গুরুত্ব বুঝবে। তা ছাড়া, তার পছন্দের জিনিস তাকে একটু অপেক্ষা করিয়ে দেওয়া হলে সে ধৈর্য ধরতেও শিখবে। চাইলেই যে তা মেলে না, তার জন্য হয় কাজ করতে হয়, না হলে সময় লাগে— এই শিক্ষাটুকু তার বড় হওয়ার জন্য জরুরি।

সন্তানের বায়না সামলাবেন কী ভাবে? পরামর্শ মনোবিদের।

সন্তানের বায়না সামলাবেন কী ভাবে? পরামর্শ মনোবিদের। ছবি:এআই।

শিশু যদি অবাধ্য হয়ে ওঠে, তখন কী করবেন?

শিশু বায়না করছে ঠিকই। কিন্তু তার কারণে যে বাবা-মা বিব্রত হচ্ছেন, সেটা সে বোঝে না। কোনও জিনিস ভাল লেগেছে, সেটা তার চাই, এ ভাবেই বিষয়টি দেখে সে। কিন্তু সন্তানকে বোঝানোর দায়িত্ব অভিভাবকেরই।

রূপক দিয়ে বোঝান: দু’টি গাড়ি রাখুন। একটি ব্যাটারি আছে, অন্যটির ব্যাটারি খুলে নিন। সন্তানকে চালাতে বলুন দুটোই। একটি চলবে, দ্বিতীয়টি নয়। সন্তানকে বোঝান, গাড়ি চলার জন্য জ্বালানি প্রয়োজন। তেমনই জিনিস কিনতে হলে টাকা দরকার। টাকা না থাকলে কিন্তু তা কেনা যাবে না।

মনোযোগ ঘুরিয়ে দিন: খুদেকে ভোলানোর চেষ্টা করতে হবে। তার মন অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিলেও কাজ হতে পারে। শিশুদের ভোলানো খুব কঠিন হয় না সবসময়ে।

প্রশ্রয় দেওয়া অনুচিত: বায়না করলেই জিনিস পাওয়া যায়, এই ধারণা বদ্ধমূল হলেই বিপদ। অনিন্দিতা বলছেন, ‘‘শিশু যদি একটু হাত-পা ছোড়ে, কাঁদে তাকে সেটা করতে দিন। একটু পরে সে ভুলে যাবে। কিন্তু বায়নাক্কা দেখে জিনিস কিনে দিলে সে বুঝবে, এটাই খেলনা বা জিনিস পাওয়ার পন্থা।’’

শান্ত করুন: কান্নাকাটির সময় উত্তেজিত হয়ে পড়লে তাকে শান্ত করুন। একটু আদর, জড়িয়ে ধরাও কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে ভাল উপায় হতে পারে। এতেও সন্তান শান্ত হবে। যদি মনে হয়, সে যে জিনিসটি চাইছে সেটি দেওয়া যায়, তা হলে প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন পরে কিনে দেবেন। ভাল ফল করলে পুরস্কার হিসেবে সেটি পেতে পারে সে।

বকাবকি নয়: রাস্তার মধ্যে বা খেলনার দোকানে শিশু বায়না করছে বলে সকলের সামনে ধমক দেওয়াটা কাজের কথা নয়। বরং তার জেদকে প্রশ্রয় না দিয়ে চুপ করে থাকতে পারেন। বেশি কথা না বলে এড়িয়ে যেতে পারেন। এক সময় সে থেমে যাবে।

Child Tantrum Parenting Tips child childhood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy