Advertisement
E-Paper

দেশের প্রথম রূপান্তরকামী বাবা-মা হতে চলেছেন জ়াহাদ-জিয়া! কী ভাবে সন্তানধারণ করলেন তাঁরা?

কেরলের রূপান্তরকামী যুগল জ়াহাদ পাভাল ও জিয়া পাভাল এখন তাঁদের প্রথম সন্তানের অপেক্ষায়। দেশে এমন ঘটনা এই প্রথম। কী ভাবে সম্ভব হল সন্তানধারণ?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৪২
২১ বছর বয়সি রূপান্তরিত মহিলা জিয়া নিজেই ইনস্টাগ্রামে স্বামীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

২১ বছর বয়সি রূপান্তরিত মহিলা জিয়া নিজেই ইনস্টাগ্রামে স্বামীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা ঘোষণা করেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

শারীরিক ভাবে নারী হলেও মনেপ্রাণে পুরুষসত্তা নিয়ে বেঁচে আছেন অনেকেই। আবার উল্টোটাও হয়। সেই সত্তাকে বাস্তব রূপ দিতে নিজের খোলনলচে পাল্টে রূপান্তরিত হওয়ার দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন, খুঁজলে এমন উদাহরণ পাওয়া অসম্ভব নয়। মনের বাঁধন সব সময়েই সমাজ এবং সংস্কারের অনেক ঊর্ধ্বে। সে কথাই ফের এক বার প্রমাণ করে দেখালেন কেরলের এক প্রেমিক যুগল। এঁরা দু’জনেই রূপান্তরকামী।

কেরলের রূপান্তরকামী যুগল জ়াহাদ পাভাল ও জিয়া পাভাল এখন তাঁদের প্রথম সন্তানের অপেক্ষায়। ২৩ বছর বয়সি জ়াহাদ রূপান্তরিত পুরুষ। ২১ বছর বয়সি রূপান্তরিত মহিলা জিয়া নিজেই ইনস্টাগ্রামে স্বামীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা ঘোষণা করেন। দেশে এমন ঘটনা এই প্রথম। ইনস্টাগ্রামে জিয়া লেখেন, ‘‘আমার মা হওয়ার স্বপ্ন ও জ়াহাদের বাবা হওয়ার স্বপ্ন অবশেষে সত্যি হতে চলেছে।’’

তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন জ়াহাদ-জিয়া। দেখা হওয়ার পরেও তাঁরা হরমোন থেরাপির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে তাঁদের মনে অভিভাবক হওয়ার ইচ্ছে জাগে। তাই কিছু দিনের জন্য তাঁরা তাঁদের হরমোন থেরাপি বন্ধ রেখেছিলেন। শিশুর জন্মের পর আবার তাঁরা হরমোন থেরাপি শুরু করবেন। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জিয়া বলেন, ‘‘বেশির ভাগ রূপান্তরকামীদেরই সমাজ বয়কট করে। অনেকের ক্ষেত্রে পরিবারের লোকজনও পাশে থাকেন না। আমরা প্রথম থেকেই একটি সন্তান চেয়েছিলাম, যাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে পারি। আমাদের পরেও যাতে আমাদের অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে থাকে। অনেক রূপান্তরকামীরা আমাদের মতোই বা-মা হতে চান। তবে সমাজের চোখরাঙানির ভয়, তাঁরা সেই সিদ্ধান্তটি নিয়ে উঠতে পারেন না। রূপান্তরকামীরাও সাধারণ নিয়মেই অভিভাবক হতে পারেন। সেই উদাহরণই সকলের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছি আমরা। প্রথম দত্তক নেওয়ার দিদ্ধান্ত নিলেও আইনি পথে নানা বাধা আসে। তার পরেই স্থির করি, সমাজের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে নিজেরাই বাবা-মা হব।’’

অভিভাবক হতে পেরে জ়াহাদ-জিয়া দু’জনেই বেজায় খুশি। আর পাঁচ জন সাধারণ অভিভাবকদের মতো তাঁরাও উপভোগ করছেন জীবনের এই নতুন পর্যায়। অন্তঃসত্ত্বাকালীন ফটোশুটও করিয়েছেন তাঁরা। জিয়া ইনস্টাগ্রামে ভাগ করে নিয়েছেন সেই সব ছবি। ছবিগুলি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতেই ব্যাপক চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে নানা মহলে। খালি গায়ে স্ফীত উদরে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রয়েছেন জ়াহাদ। চোখেমুখে খুশির জেল্লা! শাড়ি পরে দক্ষিণী সাজে তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছেন জিয়া।

নেটিজ়েনরা কেউ কেউ এই এই ফটোগুলি দেখে শুভেচ্ছা জানান রূপান্তরকামী যুগলকে। অনেকে আবার ফটোগুলি দেখে নিন্দার ঝড়ও তোলেন। তবে নিন্দকদের পাত্তা দিতে নারাজ এই যুগল। জ়াহাদ আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মার্চেই তাঁদের জীবনে আসতে চলেছে নতুন অতিথি।

Transgender Community Trans parents
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy