Advertisement
E-Paper

‘আত্মবিশ্বাসী’ শাহরুখকে উদ্ধত ভেবেছিল বলিউড! আপনার ক্ষেত্রেও একই ভুল হলে কী করণীয়?

নিজের মতো করে নিজের শর্তে থাকতে চাওয়া মানুষকে সচরাচর ভুলই বোঝেন আশপাশের সহকর্মী, সহপাঠী, পরিচিতরা। উদ্ধত ভেবে মনে মনে বা প্রকাশ্যে দূরত্বও বজায় রাখেন।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:২৮

ছবি : ইনস্টাগ্রাম।

নিজের মতো থাকেন। নিজের কাজ করেন। চারপাশের মানুষ কাকে নিয়ে কী বলল, তা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামান না। স্বভাবগত ভাবে এমন যাঁরা, তাঁদের দেখে অনেকেই ভ্রু উঁচিয়ে ভাবতে পারেন, মানুষটি নিজেকে ‘হনু’ ভাবেন নাকি! কথায় কথায় খলখলিয়ে হেসে না পড়া গাম্ভীর্যকে ‘তেজে মট মট’ ভাবার মানুষও অনেক।

নিজের মতো করে নিজের শর্তে থাকতে চাওয়া মানুষকে সচরাচর ভুলই বোঝেন আশপাশের সহকর্মী, সহপাঠী, পরিচিতরা। উদ্ধত ভেবে মনে মনে বা প্রকাশ্যে দূরত্বও বজায় রাখেন। বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খানও এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন বলে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন শাহরুখ। বিবিসিকে দেওয়া এক পুরনো সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘বলিউডে আমার কিছু হারানোর ছিল না। তাই আমার মধ্যে নবাগত সুলভ বাড়তি বিনয় বা ভয় কোনওটাই ছিল না। স্বাভাবিক ভাবেই লোকে আমাকে উদ্ধত ভাবতে শুরু করেছিল। কিন্তু দেখুন তার পরেও তো আজও বলিউডে টিকে আছি!’’

কিন্তু শাহরুখ শুধু টিকে আছেন তা-ই নয়, বলিউডি রোম্যান্সের এক নম্বর নায়ক হয়ে টিকে আছেন। বলিউডের সবচেয়ে বড় তারকা বললে যাঁদের নাম প্রথম উচ্চারিত হয়, তাঁদের মধ্যে শাহরুখ অন্যতম। ফলে যাঁরা ওই পরিস্থিতির শিকার, শাহরুখ তাঁদের অনুপ্রেরণা হতে পারেন বলে জানাচ্ছেন মনোবিদ গুরলীন বরুয়া। পাশাপাশি, যাঁরা ওই ধরনের পরিস্থিতির শিকার, তাঁদের কী করা উচিত, সে ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন গুরলীন। তিনি বলছেন, ঔদ্ধত্য আর আত্মবিশ্বাসের মধ্যে একটা খুব সূক্ষ্ম তফাৎ আছে, যা বুঝতে পারেন না অনেকেই।

তফাৎ কোথায়?

গুরলীন দু’টি প্রাথমিক তফাতের কথা বলেছেন। প্রথমেই বলেছেন ঔদ্ধত্যের কথা। গুরলীনের মতে, ‘‘যিনি উদ্ধত তিনি নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন। তাঁর স্বভাবই হল বাকিদের নিয়ে উপহাস করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য বা ছোট করা অথবা ব্যাঙ্গাত্ম মন্তব্য করা। আসলে এঁরা অন্যদের ছোট দেখিয়ে নিজেরা বড় হতে চান। তবে এ-ও ঠিক ঔদ্ধত্যের মাত্রা সবার মধ্যে সমমাত্রায় থাকে না।’’ কিন্তু যিনি আত্মবিশ্বাসী, গুরলীনের মতে তিনি কখনওই অন্যদের ছোট করে নিজেকে বড় দেখানোর চেষ্টা করবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘যিনি আত্মবিশ্বাসী তিনি নিজের কাজে মন দেবেন। তবে বাকিদেরও বিষয়েও খেয়াল রাখবেন। কাউকে অসম্মান করার প্রয়োজন পড়বে না তাঁর।’’

কেন আত্মবিশ্বাসকে ঔদ্ধত্য মনে হতে পারে?

যে যা-ই ভাবুক, গুরলীন একটি বিষয় মাথায় রাখতে বলেছেন। তাঁর পরামর্শ, ‘‘সব সময়ে মনে রাখবেন, অন্য লোকে আপনার সম্পর্কে কী ভাবছে, তার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ কিন্তু আপনার হাতে নেই।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি এ-ও মানছেন, আত্মবিশ্বাসকে ঔদ্ধত্য ভেবে নেওয়ার ভুল অনেকেই করে থাকেন। আসলে আত্মবিশ্বাসী মানুষের নিজেকে নিয়ে কোনও গ্লানি নেই। আবার যিনি উদ্ধত তিনিও নিজেকে সেরা মনে করেন। দু’ক্ষেত্রেই ভাবের প্রকাশ একই রকম হওয়ার কথা। তাই ভুল হওয়ারও কথা।

এমন পরিস্থিতির শিকার যাঁরা তাঁরা কী করবেন?

কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাক্ষেত্রে বা সামাজিক ক্ষেত্রে কেউ যদি এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েন, তবে তাঁদের তিনটি বিষয় খেয়াল রাখতে বলছেন মনোবিদ।

১। বিনয়ী হওয়া: আশপাশের মানুষগুলির কাজের প্রশংসা করতে শিখুন। তাঁদের যেগুলি ভাল গুণ, সেগুলি প্রকাশ্যে মানতে শিখুন।

২। ভাল শ্রোতা: যদি আত্মবিশ্বাসী হন, তবে নিজের কথা প্রকাশ্যে বলার প্রয়োজন বোধ করেন না আপনি। কিন্তু বাকিদের কথা মন দিয়ে শোনার চেষ্টা করুন। কোনও বার্তালাপে নিজেই সবটুকু বলতে যাবেন না। বাকিদেরও বলার সুযোগ দিন।

৩। সহানুভূতি: আত্মবিশ্বাসের পাল্লা ভারী হলে অন্য পাল্লায় রাখুন সম পরিমাণ সহানুভূতি। বাকিদের কথা ভাবুন। তাঁদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে শিখুন।

তবে এ সবের পাশাপাশি, আপনাকে নিয়ে আশপাশের মানুষ কী ভাবছেন, তা জানতে বিশ্বস্ত বন্ধুর সাহায্য নিতে পারেন। মনোবিদ বলছেন, বাকিরা আপনাকে কী চোখে দেখে, তা অন্যের চোখ দিয়েই দেখা সম্ভব। তবে সেই মানুষটিকে অবশ্যই আপনার বিশ্বস্ত হতে হবে।

Shah Rukh Khan Arrogance Self confidence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy