শখ করে কাঠের তেপায়া টেবিল কিনেছিলেন। দু’দিন পরেই নজরে পড়ল পায়ার গায়ে কেমন যেন দাগ। ভাল করে লক্ষ করতে দেখা গেল, দাঁতের দাগ। এ কাজ আর কারও নয়, করেছে আদরের পোষ্য সারমেয় শাবক। ইদানীং টুকিটাকি নানা জিনিস সামনে পেলেই চিবোচ্ছে। বাড়িতে পোষ্য থাকলে এমন পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত হবেন অনেকেই। কিন্তু কেন এমন করে কুকুরছানা? এটা করে কি তারা মজা পায়?
পশুরোগ চিকিৎসক বলছেন, ‘‘দাঁত ওঠার সময়েই এমনটা করে সারমেয় শাবক। এটা কিন্তু ওদের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পর্যায়। দুধের দাঁত পড়ে গিয়ে নতুন দাঁত গজানোর সময়ে তাদেরও দাঁত সুড়সুড় করে, অস্বস্তি হতে থাকে, তার ফলে এমনটা করে তারা।’’ চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ৩-৪ মাস বয়েস থেকে সারমেয় শাবকদের দুধের দাঁত পড়তে শুরু করে। সেই দাঁত পরে সমস্ত নতুন দাঁত গজাতে সময় লাগে আরও ২-৩ মাস। মোটামুটি ৬-৮ মাস বয়সে কুকুরের নতুন দাঁত গজিয়ে যায়।
কিন্তু দুধের দাঁত পড়া এবং নতুন দাঁত গজানোর সময়টাই গুরুত্বপূর্ণ। মনুষ্যসন্তানের যেমন দুধের দাঁত ওঠার সময় কোনও কিছু কামড়ে ধরা বা চিবোনোর প্রবণতা থাকে, সারমেয় শাবকের ক্ষেত্রেও তাই। এই সময় কোনও কোনও কুকুরছানার মুখ থেকে অতিরিক্ত লালা ঝরতে থাকে, কারও আবার মাড়িও ফুলে যায়। কোনও কোনও সময়ে খিদেও কমে যায়।
আরও পড়ুন:
সমস্যার সমাধানে চিকিৎসকের পরামর্শ, সারমেয়র উপযোগী ‘টিদার’ বা চিবোনোর উপযোগী জিনিসপত্র এনে দিতে হবে। নানা রকম জিনিস তার সামনে রাখতে হবে যেগুলি চিবিয়ে ফেললে ক্ষতি হবে না।
সাধারণত, দুয়েকটি জিনিস সামনে রাখলে বেশির ভাগ কুকুরছানা তুষ্ট হয় না। অনেক সময় দেখা যায়, বাজার চলতি 'টিদার' ফেলে ঘরোয়া জিনিসই সে বেছে নিতে চাইছে। চিকিৎসক সাবধান করছেন, সে কারণেই তার, নোংরা জুতো বা অন্য কিচু চিবোতে গিয়ে জিভ-মুখ কেটে যেতে পারে বা সারমেয় ব্যথা পেতে পারে এমন জিনিস তার নাগালের বাইরে রাখতে হবে।
তার সামনে যতই চিবোনোর জিনিস, খেলনা দেওয়া হোক না কেন, তার পরেও যে সে কাপড় বা আসবাব চিবোনোর চেষ্টা করবে না বা কামড়াবে না, তা কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যায় না। সে কারণে, নিমপাতার রস বা এমন কিছু এই সব জিনিসে স্প্রে করে দেওয়া যেতে পারে। সঠিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলেও এমন সমস্যার সমাধান মিলতে পারে। তবে যদি সর্ব ক্ষণ চোখে চোখে রাখা না যায়, বড় কোনও বাক্সে বা নির্দিষ্ট ঘরে তাকে রাখা যেতে পারে।