মানুষটি খুবই কাজের। কিন্তু দেখলেন, আপনার সঙ্গীর সঙ্গে তিনি ভাল ব্যবহার করেন না। কী করবেন? কাজের খাতিরে, প্রয়োজন বলেই কি তাঁর অন্যায় এড়িয়ে যাবেন?
এ নিয়ে নানা মানুষের নানা মত হতে পারে। তবে এমন পরিস্থিতিতে দু’বার না ভেবেই স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অভিনেতা রাজকুমার রাও। স্ত্রীর অসম্মান দেখে মুহূর্তে প্রিয় রন্ধনশিল্পীকে বলেছিলেন ‘‘ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যান।’’ অথচ সেই রন্ধনশিল্পীর রান্নায় তিনি অভিভূত ছিলেন।
অতীতে এক সাক্ষাৎকারে কথায় কথায় এমনই ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন রাজকুমার রাও। এক দশক ধরে সম্পর্কে থাকার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজকুমার রাও এবং পত্রলেখা। স্ত্রীর সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে গর্ববোধ করেন তিনি। তাঁদের দাম্পত্যের অনেক কথাই প্রকাশ্যে এসেছে।
পত্রলেখা অভিযোগ করেছিলেন ওই রন্ধনশিল্পী তাঁর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন না। বিষয়টিকে প্রথমে খুব বেশি গুরুত্ব দেননি রাজকুমার। ভেবেছিলেন, দু’জনের মধ্যে কোথাও কোনও সমস্যা হচ্ছে, তিনি কথা বলে বোঝার চেষ্টা করবেন। কিন্তু এর দু’দিনের মাথায় রাজকুমারই চাক্ষুষ করেন তাঁর স্ত্রীর প্রতি রন্ধনশিল্পীর ব্যবহার ঠিক নয়। পত্রলেখার সাধারণ কথাতেই তাঁর মুখের অভিব্যক্তি বলে দিচ্ছিল সে কথা। তা দেখার পর মুহূর্তের জন্য দেরি না করে বছর আটচল্লিশের রন্ধনশিল্পীকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেন তিনি।
মানুষের মন নিয়ে কাজ করেন চাঁদনি তুগনাইত। গুরুগ্রামের ওই সাইকোথেরাপিস্টের কথায়, রাজকুমার রাওয়ের এমন সিদ্ধান্ত ও আচরণ শুধু যে স্ত্রীকে সমস্ত রকম ঝড়ঝাপটা থেকে বাঁচানোর মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ তা নয়, বরং স্ত্রীর প্রতি তাঁর সম্মানের জায়গাকেও তুলে ধরে।
অন্যের অসম্মানে পাশে থাকা কতটা জরুরি?
মনোবিদের কথায়, একটি সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাস এবং সম্মানের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। রাজকুমারের এই ব্যবহার সেই দিকটিকেই তুলে ধরছে। এক জনের অসম্মান হলে, অন্য জন বর্ম হয়ে দাঁড়াচ্ছেন, সমর্থন করছেন, এটা সম্পর্কের মজবুত বাঁধনের ইঙ্গিতবাহী। অনেকেই, সঙ্গীর ছোটখাটো অসম্মান এড়িয়ে যান। এ ক্ষেত্রে রাজকুমার তা করেননি। তাঁর আচরণ প্রমাণ করছে, তিনি দু’পক্ষের সম্মান নিয়ে কতটা ভাবেন।