বর্ষার সময়ে নানা অসুখবিসুখ হয় পোষা কুকুরেরও। তবে বিরল এক রকম রোগ ছড়াচ্ছে কুকুরের। তা হচ্ছে পরজীবী থেকে। এই নিয়ে সতর্ক করেছেন গবেষকেরা। কেবল কুকুরের নয়, মানুষেরও হতে পারে এই রোগ। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, দূষিত জল, বাসি খাবার থেকে ঘটতে পারে সংক্রমণ। ইঁদুরই ওই পরজীবীর বাহক। মানুষের যেমন মেনিনজাইটিস রোগ হয়, পরজীবীর সংক্রমণে তেমনই কিছু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কুকুরেরও।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা রোগটি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। অস্ট্রেলিয়ার নানা জায়গায় ওই পরজীবীর সংক্রমণে আক্রান্ত পোষা কুকুরেরা। পোষ্যের থেকে মানুষের শরীরেও সংক্রমণ ঘটছে বলে খবর। রোগটির নাম ‘র্যাট লাংওয়ার্ম ডিজ়িজ়’। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। ‘অ্যাঞ্জিয়োস্ট্রনজিলাস ক্যান্টোনেনসিস’ নামক পরজীবীর থেকে রোগটি ছড়ায়। এই পরজীবী বাসা বাঁধে ইঁদুরের শরীরে। ইঁদুরের মলমূত্র, দেহাংশ থেকে তা মাটিতে মিশে যায়। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, মাটি থেকে শামুক জাতীয় প্রাণীদের শরীরে ফের বাসা বাঁধে ওই পরজীবী। সেখানেই বংশবিস্তার করতে থাকে। বৃষ্টির দিনে শামুকের খোলা বা শামুকের দেহাংশ থেকে রোগটি ছড়াতে পারে। কুকুরের পেটে যদি সে সব যায়, তা হলে খাদ্যনালিতে ভয়ঙ্কর সংক্রমণ হতে পারে।
আরও পড়ুন:
কী লক্ষণ দেখা দেবে পোষ্যের শরীরে?
পরজীবী থেকে কুকুরের শরীরে যে রোগ ছড়ায় তার নাম ‘অ্যাঞ্জিয়োস্ট্রনজিলাইসিস’। এই রোগটি অনেকটা মেনিনজাইটিসের মতো। রোগে আক্রান্ত হলে জ্বর হয়, ঘন ঘন বমি, খিঁচুনি ধরতে পারে। নিস্তেজ হয়ে পড়বে পোষ্য। শ্বাসনালিতে সংক্রমণ দেখা দেবে। হাঁটাচলা করতে পারবে না। শুধু তা-ই নয়, এই পরজীবীর থেকে স্নায়ুর রোগও হতে পারে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে পোষ্য।
সতর্ক থাকার উপায়
বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ইদুরের উপদ্রব হচ্ছে কি না, তা খেয়াল রাখুন।
বৃষ্টির দিনে পোষ্যকে নিয়ে বেশি বাইরে না যাওয়াই ভাল। যদি যান তা হলে খেয়াল রাখতে হবে, পোষ্য যেন রাস্তায় জমে থাকা জল বা নোংরায় মুখ না দেয়।
জল ফুটিয়ে দিতে হবে রোজ, বাসি খাবার পোষা কুকুরকে দেওয়া যাবে না।
পোষ্যের শোয়ার জায়গা, খাওয়ার পাত্র বা খেলনা রোজ পরিষ্কার করতে হবে।
বাজার থেকে কিনে আনা ফল বা সব্জি না ধুয়ে পোষ্যকে দেবেন না।
ঘরদোরও নিয়ম করে পরিষ্কার রাখতে হবে।
কুকুরের ঘন ঘন বমি, ডায়েরিয়া হলে অথবা খিঁচুনি শুরু হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।