Advertisement
E-Paper

বিশ্ব জুড়েই জন্মের হার কমছে, দাবি করল রাষ্ট্রপুঞ্জ, তালিকায় আছে ভারতও

রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘পপুলেশন ফান্ড’-এর (ইউএনএফপিএ) সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বর্তমান বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ তাঁদের ইচ্ছে অনুযায়ী সন্তানধারণ করতে পারছেন না। ভারত-সহ ১৩টি দেশের উপর সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৫ ১৬:২৬
UNFPA fertility intentions survey revealed that falling fertility rate has increased

প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম। মূল ছবি: ফ্রিপিক।

‘হম দো হামারে দো’ নীতি বাস্তবায়িত হওয়ার পর পাঁচ দশক অতিক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে সমাজজীবনে পরিবর্তন এসেছে। পরিবার গঠনের ক্ষেত্রে দম্পতিদের মধ্যেও চিন্তাধারার নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। দম্পতির দুই সন্তান নীতি থেকে বেরিয়ে এসে সন্তানধারণের ক্ষেত্রে সমাজ এখন অন্য পথে হাঁটছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘পপুলেশন ফান্ড’-এর (ইউএনএফপিএ) সাম্প্রতিক সমীক্ষা সে দিকেই ইঙ্গিত করছে, যেখানে বলা হয়েছে, বর্তমান বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ তাঁদের ইচ্ছে অনুযায়ী সন্তানধারণ করতে পারছেন না।

১৪টি দেশের ১৪ হাজার মহিলাদের উপর এই সমীক্ষাটি করা হয়। সেখানে মূলত বিশ্বের (ভারত, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইল্যান্ড, ইটালি, হাঙ্গেরি, জার্মানি, সুইডেন, ব্রাজ়িল, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, মরোক্কো এবং নাইজ়েরিয়া) অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নত ও পিছিয়ে থাকা দেশের মানুষদের বক্তব্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিশ্বে প্রজননের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে বলে সমীক্ষাটিতে দাবি করা হয়েছে। নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণের দিকে চোখ রাখা যাক—

১) সন্তানধারণের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৪ জন (৩৯ শতাংশ) বলেছেন, অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণেই তাঁরা মনের মতো পরিবার গঠন করতে পারেননি।

২) চাকরির নিরাপত্তাহীনতা (২১ শতাংশ), সাংসারিক খরচ (২২ শতাংশ), শিশু চিকিৎসার অভাব (১৮ শতাংশ) বাবা-মা হওয়াকে অনেকের নাগালের বাইরে ঠেলে দিয়েছে।

৩) বাবা-মায়ের দুর্বল স্বাস্থ্য (১৫ শতাংশ), মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব (১৩ শতাংশ) এবং গর্ভধারণ সংক্রান্ত চিকিৎসা ব্যবস্থার অভাব (১৪ শতাংশ) বিষয়টিকে আরও কঠিনতর করে তুলেছে।

৪) অনেকেই আবার রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অবশ্যই ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার কারণে সন্তান ধারণ করতে চাইছেন না বলে জানিয়েছেন।

৫) সমীক্ষায় ১৯ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরা শুধুমাত্র সঙ্গী বা পরিবারের চাপে ইচ্ছামতো সন্তান ধারণ করতে পারেননি।

জনবিস্ফোরণ যে মূল সমস্যা নয়, সমীক্ষায় তা আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত জোর দেওয়া হয়েছে, ইচ্ছানুযায়ী সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার দিকে। ভারতে নিয়োজিত ‘ইউএনএফপিএ’র মুখপাত্র আন্দ্রিয়া এম ওজনার বলেছেন, ‘‘প্রজনন হার হ্রাসের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান উল্লেখযোগ্য। ১৯৭০ সালে যেখানে প্রতি এক জন মহিলা পিছু ৫ সন্তান ছিল, সেটা এখন ২-এ এসে দাঁড়িয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ মা তাঁদের সন্তানকে বড় করে তুলছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজ্য, জাতি এবং জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক বৈষম্য লক্ষণীয়।’’

মানুষের গড় আয়ু এখন বেড়েছে। জেরেন্টোলজিস্ট ধীরেশ চৌধুরীর মতে, মানুষের জীবনে বিভিন্ন পর্যায় এখন পিছিয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে বিবাহও রয়েছে। সকলের ক্ষেত্রে না হলেও তাঁর কথায়, ‘‘৩০-এর শেষের দিকে বা ৪০ বছরের পরেও অনেক মহিলা এখন বিয়ে করছেন। উচ্চবিত্ত পরিবারে সন্তানধারণের ইচ্ছা এখন কমছে। কারণ, এখন দৈনন্দিন জীবনে নানা চাপ রয়েছে। সেখানে দম্পতিরা স্বাধীন জীবনযাপন করতে চাইছেন।’’

বর্তমান সময়ে নিউক্লিয়ার পরিবার বেড়েছে। অনেকেই মনে করছেন, প্রথম সন্তানের পর দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে ঝক্কি পোহাতে চাইছেন না বহু দম্পতি। পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পায়েল ঘোষ বললেন, ‘‘বহু মহিলা এখন কর্মরত। বার বার মাতৃত্বকালীন ছুটি পাওয়া কঠিন হতে পারে।’’ পাশাপাশি, সন্তানধারণে অনিচ্ছার ক্ষেত্রে মায়েদের শারীরিক ক্লান্তিও অন্যতম কারণ হতে পারে বলেই জানালেন পায়েল।

Fertility Female Fertility Family Planning United Nations report survey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy