Advertisement
E-Paper

শেখা যায় সন্তানের থেকেও, মেয়ে নাইসার থেকে কী শিখেছিলেন অভিনেত্রী কাজল?

খাওয়া থেকে নানা বিষয়ে সন্তানের সঙ্গে মনোমালিন্য? অথচ তাদের কথা শুনলে শেখা যায় অনেক কিছুই। মাতৃত্ব নিয়ে কী বলছেন অভিনেত্রী কাজল?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৫ ১৬:৩৩
মেয়ে নায়সার সঙ্গে অভিনেত্রী কাজল।

মেয়ে নায়সার সঙ্গে অভিনেত্রী কাজল। ছবি: সংগৃহীত।

খাওয়ার টেবিলে মা-সন্তানের ‘যুদ্ধ’ নতুন নয়। মায়েরা চান ছেলে-মেয়েকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াতে। মায়ের চোখে যতটা খাবারে পেট ভরে, ততটা খাওয়াতে। আর ছোটরা তাতেই বিরক্ত হয়। এই নিত্য অশান্তি থেকে বাদ পড়েননি বলিউড অভিনেত্রী কাজলও।

যুগ এবং নাইসা— কাজল এবং অজয় দেবগনের দুই সন্তানই এখন অনেকটা বড়। বছর ২২ এর নাইসা সুইৎজ়ারল্যান্ডে পড়াশোনা করছেন। এক সাক্ষাৎকারে মাতৃত্ব নিয়ে কথা বলতে গিয়েই মেয়ের থেকে শেখার কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী।

কাজল মেনেও নিয়েছেন, যে কোনও বিষয়ে তিনি মত খাটাতে চান। সেই একই পন্থা তিনি সন্তানদের উপরেও প্রয়োগ করেছেন। খাবার টেবিলে বসে ছেলে-মেয়েকে শাসনও করেছেন। বিশেষত নাইসার সঙ্গে খাওয়া নিয়ে অশান্তি ছিল নিত্য বিষয়। এমন হলে মেয়ের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকাতেন অভিনেত্রী। কিন্তু এক দিন উল্টো ঘটনা ঘটে। কাজল বলেন, ‘‘দেখি, নাইসা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। শান্ত ভাবে ও আমায় বলল, মা, ঠিক আছে। আমার খিদে পেলে ঠিক খেয়ে নেব। আমি কী করছি, আমি জানি।’’

অভিনেত্রীর সে দিন মনে হয়েছিল, মেয়ে ঠিক কথাই বলছে। তার যখন খিদে পাবে, সে খাবে। জোর করে কোনও লাভ নেই। কাজল জানিয়েছেন, তাঁর মতকে ভুল প্রমাণ করে কোনও কিছু বোঝানো মোটেই সহজ নয়। কিন্তু সন্তান পালন করতে গিয়ে এমন অনেক মুহূর্ত তৈরি হয়েছে, যখন সন্তানেরা তাঁকে স্বল্প কথায় বা অভিব্যক্তিতে অনেক কিছু বুঝিয়েছে।

খাওয়ার টেবিলে মা-সন্তানের লড়াই কেন হয়?

‘‘সন্তানকে খাওয়ানো যে কী ঝক্কি’’, বলেন মায়েরা। কেউ খাবার মুখে নিয়ে বহু ক্ষণ বসে থাকে। কোনও শিশু চিপ‌্‌স, ডিম সেদ্ধয় আপত্তি না জানালেও, ভাত-ডাল, সব্জি খাওয়াতে গেলেই যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। সাইকোথেরাপিস্ট এবং কাউন্সেলর সোনাল খাঙ্গারোচ বলছেন, ‘‘খাওয়ার সময়টা পারিবারিক সময়। টেবিল ভর্তি খাবার সাজিয়ে অভিভাবকেরা আশা করেন, সন্তান পেট ভরে খাবে। ছেলে-মেয়েকে ভাল করে খেতে দেখা তাঁদের জন্য সন্তুষ্টির। অন্য দিকে, খেতে ইচ্ছা না হলেও অপছন্দের খাবার, জোর করে খাওয়ার ভয় কাজ করে সন্তানের মধ্যে। তৈরি হয় মানসিক চাপ। শুধু খিদে নেই বলেই যে ছোটরা খেতে চায় না, তা নয়। কখনও কখনও নেপথ্যে তাদের নিজস্ব ইচ্ছা জাহিরের মানসিকতাও থাকে।’’

মনো-সমাজকর্মী মোহিত রণদীপ বলছেন,‘‘ছোট থেকে সবরকম খাওয়া অভ্যাস করলে অবশ্যই সুবিধা। এটাও ঠিক, মায়ের পক্ষে পরিবারের সকলের মন জুগিয়ে রান্না করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে যতটা করা সম্ভব হচ্ছে, তার মধ্যে থেকে সন্তানকে পছন্দ অনুযায়ী খাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে।’’

সোনাল জানাচ্ছেন, কাউন্সেলর হিসাবে তিনি সন্তান কতটা খাচ্ছে, কী খাচ্ছে-র চেয়ে বেশি সন্তান তৃপ্তি করে খাচ্ছে কি না, সেই বিষয়ে অভিভাবকদের জোর দিতে বলেন। সন্তান কোনটি খাবে, তাকেই বেছে নিতে বলতে পারেন। এতে দু’পক্ষেরই সুবিধা হবে। এমনটাও হতে পারে, কোনও দিন অভিভাবকের পছন্দে খাওয়া হবে, কোনও দিন সন্তানের পছন্দ থাকবে।

সন্তানের থেকে কী শেখার থাকতে পারে?

সন্তানের থেকে অভিভাবকের শেখার অবকাশ রয়েছে। মনো-সমাজকর্মী মোহিত জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই দেখা গিয়েছে, সন্তানের মতামত এবং ভাবনা অভিভাবকের ভাবনাচিন্তাকে প্রভাবিত করে। সকলেই যে সব জানবেন এবং সেই জানাই যে সঠিক, তা কিন্তু নয়। নতুন প্রজন্ম নতুন বিষয় শেখে। সেই শিক্ষাটা হয়তো আগের প্রজন্মের নেই। সুতরাং সেই নতুন ভাবনা গ্রহণ করতে আপত্তি কোথায়?

সোনালের মতে, সন্তান তার বয়সের উপযোগী করে ভাবে। তার ধ্যানধারণা যে ভুল, তেমন কিন্তু নয়। অভিভাবকের সন্তানের কথা মন দিয়ে শোনাও উচিত। সন্তানের কথায় যুক্তি থাকলে, তা মানতে আপত্তি হওয়ার কথা নয়। এতে দু’পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক মজবুত হবে।

Kajol Nysa Devgn Parenting Tips Motherhood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy