Advertisement
E-Paper

পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে যা ঘটছে, কাল বাকিদেরও এক সমস্যা হবে না তো? প্রশ্ন তুললেন গবেষকেরা

বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা ঠেকাতে চাই বিশদ তথ্যভাণ্ডার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ। কলকাতার প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সভায় দাবি তুললেন গবেষকেরা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৫ ১৮:৪০
Researchers point out the lack of data in the context of ongoing harassment of Bengali migrant workers

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত বিশিষ্টেরা। — নিজস্ব চিত্র।

বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের হেনস্থা ঠেকাতে সর্বদলীয় অনুসন্ধান কমিটি গঠনের দাবি গবেষকদের। তথ্যের অপ্রতুলতা যে জটিলতা আরও বাড়াচ্ছে, উঠে এল সেই প্রসঙ্গও।

নানা রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর ঘটে চলা হিংসার প্রতিবাদে কলকাতার প্রেস ক্লাবে সভার আয়োজন করে ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপ (সিআরজি) এবং ‘নো ইয়োর নেবার’। সিআরজি-র অন্যতম সদস্য, তথা সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা সমতা বিশ্বাস মনে করিয়ে দেন ভিন্‌ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাঙালি শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে দেগে দেওয়ার দীর্ঘ ইতিহাস। সমতার বক্তব্য, কোনও রকম আইনি প্রক্রিয়ার তোয়াক্কা না করেই বাঙালি শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ বলে ‘পুশব্যাক’ করা হচ্ছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ, ফরেনার্স ট্রাইবুনালে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও থাকছে না তাঁদের। নো ইয়োর নেবারের আহ্বায়ক সাবির আহমেদের দাবি, কেরল, ঝাড়খণ্ড বা ওড়িশার মতো রাজ্যভিত্তিক পরিযায়ী শ্রমিকের রিপোর্ট তৈরি হোক পশ্চিমবঙ্গেও। সেটা না হওয়া পর্যন্ত, এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা কখনওই দৃশ্যমান হবেন না। সাবিরের প্রশ্ন, পরিযায়ী শ্রমিকদের উন্নয়নে বোর্ড তৈরি হলেও তার জন্য কি কোনও বাজেট নির্ধারিত করেছে রাজ্য সরকার? অধ্যাপক সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরীর বয়ানে নয়াউদারনীতিবাদের বিশেষ কাঠামোর কথা। যেখানে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পুঁজি বা প্রযুক্তি যাতায়াত সুগম হলেও শ্রমিকদের যাতায়াতে নানা বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে। অধ্যাপক বসু রায়চৌধুরী চান ১৯৭৯ সালের ‘আন্তঃরাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক আইন’টি যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করা হোক।

১৯৭৯ সালের ওই আইনের কথা শোনা গেল সিআরজি-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক রণবীর সমাদ্দারের গলাতেও। তাঁর বক্তব্য, শ্রমিক আন্দোলনের ফলেই ওই আইনের জন্ম। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে সে ভাবে কখওনই মাথা ঘামায় না কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো। অধ্যাপত সমাদ্দার বলছেন, এক দিকে বাঙালি সত্ত্বার উপর আক্রমণের অভিযোগ, অন্য দিকে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ। এই দুইয়ের মাঝে সংসদের আলোচনা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকারের প্রশ্ন উধাও হয়ে গিয়েছে। সভার অন্যতম বক্তা পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারপার্সন আহমেদ হাসান ইমরানের আঙুল অবশ্য সরাসরি কেন্দ্রের শাসকদলের দিকেই। তাঁর দাবি, ভোটের আগে বিদ্বেষ ছড়াতেই বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে হেনস্থা করা হচ্ছে।

সমতার আশঙ্কা, আজ পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে যা ঘটছে, ভবিষ্যতে সেটা দেশের অন্য নাগরিকদের সঙ্গেও ঘটতে পারে। কী ভাবে এই হেনস্থা ঠেকানো যাবে? সভায় উপস্থিত গবেষকেরা খানিকটা দিক্‌নির্দেশের চেষ্টা করছেন। ১৯৭৯-এর পরিযায়ী শ্রমিক আইনকে আরও পোক্ত ভাবে প্রয়োগের পাশাপাশি ভিন্‌রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের সম্পর্কে বিশদে তথ্য জোগাড়ের কথা বলছেন তাঁরা। রাজনৈতিক দলগুলোর আরও ধারাবাহিক পদক্ষেপের দাবিও তুলছেন। ই-শ্রম পোর্টালের গণ্ডি ছাড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আরও কার্যকরী পদক্ষেপের আশা করছেন তাঁরা।

Bengali Migrant Worker Migrant Workers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy