সম্পর্কে অশান্তি এড়াতে মেনে চলুন কয়েকটা নিয়ম। ছবি: শাটারস্টক।
সময়ের হাত ধরে চলা সম্পর্কের গায়ে কখনও সখনও দীর্ঘ দিনের ক্লান্তির ছাপ পড়ে। প্রাথমিক উত্তেজনা ও আবেগ থিতিয়ে যত এগোয় সম্পর্ক, ততই কংক্রিটের জমি খুঁজে নিতে চায় সে। কিন্তু এই স্থায়ী হয়ে ওঠার পথে কোথাও উদাসীনতা আসে, কখনও বা অল্পবিস্তর ভুলচুকও। কোনও কোনও ক্ষেত্রে উল্টো দিকের মানুষটার প্রতি ভুল বার্তা পৌঁছয় নিজেরই দোষে। আবার সময়ের সঙ্গে ইগো, মুগ্ধতার পরত কমে যাওয়া এ সবও হাজির হয়।
আর এদের সঙ্গেই চোরাপথে হাজির হয় অশান্তি। মতের অমিল থেকে ছোটখাটো কথাতেও যেন জোর করে অশান্তি ডেকে আনা। যতই ভিতরে ভিতরে ভালবাসা থাক, প্রকাশের অভাবটাওই তখন মুখ্য হয়ে ওঠে। এ ভাবে নিস্তরঙ্গ দাম্পত্যকেই অনেকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেন।
কিন্তু জানবেন, মোটেও তা সত্যি নয়। বরং দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে ভাল আছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। ভাল থাকতে হলে কিছু কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে আপনাকেও। জানেন সে সব কী কী? অশান্তি এড়াতে ও আগের মতো সম্পর্কে উষ্ণতা ফেরাতে মেনে চলুন এ সব।
আরও পড়ুন: কালো রং বা হেনা ছাড়ুন, ঘরোয়া উপায়ে চুল কালো করে ফেলুন এ সব উপায়ে
ভুলেও কথা বন্ধ নয়।
অভিযোগ নয়, আলোচনা: একটা সময়ের পর কথায় কথায় অভিযোগ করা অনেকের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যায়। একসঙ্গে থাকা বা প্রেমের সম্পর্কে মতের অমিল, মনের অমিল হতেই পারে। কিন্তু সেই অমিলকে কী ভাবে সামলাচ্ছেন আপনি, সেটাই সম্পর্ক কেমন থাকবে তার চাবিকাঠি। সঙ্গীর কোনও স্বভাব বা আচরণ যদি পছন্দ না হয়, তা হলে সব সময় অভিযোগ করবেন না। বরং সরাসরি কথা বলুন তাঁর সঙ্গে। মাথা ঠান্ডা করে, শান্ত হয়ে বোঝান। উল্টে তিনি রাগারাগি করতে পারেন, এমন আশঙ্কা থাকলে এমন ভাবে বলুন, যাতে তাঁর মেজাজ না গরম হয়। কারণ, অকারণে মেজাজ হারালে কিন্তু কথা বলাটাই ভেস্তে যাবে।
মেনে নিন: কোনও মানুষই পারফেক্ট নন। তাই কিছু কিছু বিষয় অপছন্দের থাকবেই। সব বদলাতে যাবেন না যেন! এতে ভিতরে ভিতরে সমস্যা তৈরি হয়। তিনিও অস্বস্তিতে থাকেন। তাই যে সব ভুলত্রুটি একেবারেই অমার্জনীয় নয়, বা ক্ষতিকারক নয়, তাদের ছাড় দিন। বরং এ সব হালকা ভুলভ্রান্তি মেনে নেন জানলে, তিনিও মনে মনে তৃপ্ত হবেন। সম্পর্কও ভাল থাকবে।
আরও পড়ুন: মেদ বৃদ্ধি থেকে অনিদ্রা, রাতে এ সব খাবার বাদ দিলে ওষুধ ছাড়াই কাটবে সমস্যা
কথা বন্ধ নয়: মনোবিদদের মতে, যতই ঝগড়া হোক, কথা বন্ধ করা চলবে না একেবারেই। প্রয়োজনে ঝগড়া বাড়িয়ে চলুন কথায় কথায়, কিন্তু কথা বন্ধ করবেন না। চুপ করে কথা বন্ধ করে দেওয়ার প্রভাব ঝগড়ার চেয়েও মারাত্মক। এতে দরকারে-অদরকারে কথা বন্ধের জেরে কিছু সমস্যাকে একাই মোকাবিলা করতে হতে পারে। তাই এ কারণে অভিমান এলে কিন্তু সেটা সামলানো কঠিন হয়। বরং ঝগড়া মেটাতে শান্ত হোন। ইগো ঝাড়ুন। কে আগে কথা বললেন, কে পরে এ সব না ভেবে নিজেই যান। সমস্যাটা মেটাতে আলোচনা করুন। দরকারে হালকা করে একটা সরি বলে রাখুন। এই এক শব্দে কিন্তু আশাতীত কাজ হয়।
শারীরিক ভাবে দূরে সরে গেলে সহজ হওয়ার পথে আরও বাধা আসে।
শারীরিক ভাবে দূরে নয়: পরস্পরের কাছাকাছি আসার এই মাধ্যমকে কখনও অবহেলা করবেন না। অনেক সমস্যারই সমাধান হয় এই ভাবে। এতে কোনও দোষ নেই। শুধু দেখবেন, এই বিষয়টাকে হাতিয়ার করে কউ যেন সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা না করেন বা কেবল এই পর্বটুকুর জন্যই সমস্যা মেটাতে আগ্রহী না হন। আসলে কাদা ছোড়াছুড়ি ও দোষারোপের তিরে ফালা ফালা হয় সম্পর্ক। তায় শারীরিক ভাবে দূরে সরে গেলে সহজ হওয়ার পথে আরও বাধা আসে। নিজেকের অশান্তিকে বাড়িয়ে তুলবেন না এ ভাবে।
সকলের কথা ভাবুন: যে পরিবারে আছেন, বা প্রেমিক/প্রেমিকার নিজের পরিবারে যাঁরা আছেন তাঁদের কথা, সঙ্গে নিজের পরিবারের মানুষদের কথাও বাবুন। স্বার্থপর হতে শুরু করলে সমস্যা আরও বাড়বে। এতে আপনাদের অশান্তি হলেও তা বাড়ির সুস্থ পরিবেশে ও সকলের সাহায্যে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
বদভ্যাসে রাশ: সম্পর্ক শুরু হলে বেশ কিছু স্বার্থত্যাগ করতেই হয়। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে লাগামছাড়া মদ্যপান, ধূমপান এ সব অভ্যাসে রাশ টানুন। প্রিয় মানমুষটির পছন্দ-অপছন্দের দামও দিতে হয় বইকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy