Advertisement
E-Paper

এই সব নিয়ম মানতে ভুল করবেন না, অসতর্ক হলেই থাবা বসাতে পারে করোনাভাইরাস

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই করোনাভাইরাস থেকে দূরে থাকতে বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ১৭:২১
করোনা-আতঙ্কে ভুগছে গোটা দেশ। ছবি: শাটারস্টক।

করোনা-আতঙ্কে ভুগছে গোটা দেশ। ছবি: শাটারস্টক।

কোভিড-১৯। ডাক নাম করোনাভাইরাস। হঠাৎ আমদানি হওয়া এই ভাইরাস নিয়ে বিশ্ব জুড়ে ক্রমে চিন্তা বাড়ছে। প্রথমে চিনের উহানে ধরা পড়লেও মহামারীর মতো এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের নানা দেশে। চিন, জাপান, ইরান, আমেরিকা, ফ্রান্স, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ইতালি— আক্রান্ত দেশের তালিকা ক্রমেই বড় হচ্ছে। সম্প্রতি এই তালিকায় ঢুকে পড়েছে ভারতও। আগরা, জয়পুর, দিল্লি, হায়দরাবাদে ইতিমধ্যেই থাবা বসিয়েছে এই মারণ ভাইরাস। এখনও এই ভাইরাস রোখার কোনও উপায় না পাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হচ্ছে চিকিৎসকদের।

ভায়ারোলজিস্ট সুশ্রুত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘জিনগত মিউটেশনের ফলে কোনও কোনও ভাইরাস তার স্বভাব, আকার, প্রকৃতি বদলে ফেলে। ফলে নতুন চেহারার সে সব ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। প্রয়োজনীয় হাতিয়ার মজুতে আগেই এরা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। করোনাও এই কারণেই এত মারণ আকার নিয়েছে।’’

সরকারি ও বেসরকারি নানা তরফেই করোনা নিয়ে সতর্কতার প্রচার এখন তুঙ্গে। তবে সেই সব সতর্কতার সঙ্গেই জেনে রাখা দরকার এই অসুখের ছড়িয়ে পড়ার পদ্ধতি ও উপসর্গও। অসুস্থ মানুষদের আয়ুষ্কাল কিছুটা বাড়িয়ে দিতে বা ভাইরাসের থাবাকে গুটিয়ে আনতে গিয়ে চিকিৎসকরা এর সংক্রমণের পদ্ধতি সম্পর্কেও অবগত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: নেই প্রতিষেধক, কী ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে জানলেই রোখা যাবে অসুখ

কেমন করে?

নাক-মুখ দিয়েই মূলত এই ভাইরাস প্রবেশ করে। এর পর শ্বসনতন্ত্রের (রেসপিরেটরি সিস্টেম) যে কোনও একটি কোষকে টার্গেট করে সে। সেই কোষটিই তখন হয়ে ওঠে ‘হোস্ট সেল’। বাড়িতে অতিথি এলে যেমন তাকে আদর-যত্ন করতে হয়, শ্বসনতন্ত্রও নতুন আসা এই ভাইরাসের যত্ন শুরু করে। যত্ন পেয়ে ফুলেফেঁপে ওঠে হোস্ট সেল। অবশেষে এই হোস্ট সেল ফেটে ভাইরাসকে উগড়ে দেয় বাইরে।

করোনার উপসর্গ

এই ভাইরাসের প্রধান ও অন্যতম উপসর্গ একটানা সর্দি-কাশি ও বুকে কফ জমে থাকা। তবে যে কোনও সাধারণ সর্দি-কাশিতে ভয়ের তেমন কিছু নেই। তখনই সচেতন হতে হবে, যখন কোনও প্রকার ওষুধেই শ্লেষ্মাজনিত সমস্যা সারছে না। সে ক্ষেত্রে পলিমারেস চেন রিঅ্যাকশন বা ‘পিসিআর’ পরীক্ষা করে এই ধরনের ভাইরাসের উপস্থিতির খোঁজ করা হয়।

• সর্দি-কাশির সঙ্গে জ্বরও ডেকে আনে এই ভাইরাস।

• সারা ক্ষণ নাক দিয়ে কাঁচা জল পড়ার সঙ্গে শ্বাসকষ্টও এই অসুখের অন্যতম উপসর্গ।

• বুকে কফ জমে যাওয়া, মাথা যন্ত্রণা, গলাব্যথা তো থাকেই। এর সঙ্গে শ্লেষ্মাজনিত অসুখ বেড়ে নিউমোনিয়া ডেকে আনে। তা বাড়তে বাড়তে সিভিয়ার নিউমোনিয়ার দিকে বাঁক নিতে পারে।

আরও পড়ুন: দেশে করোনা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, আক্রান্ত ২৮-এর মধ্যে ১৬ ইতালীয় পর্যটক

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অসুখ থেকে বাঁচতে কী করব?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই করোনাভাইরাস থেকে দূরে থাকতে বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে বার বার সচেতন করছেন বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের চিকিৎসক ও ভায়ারোলজিস্টরাও এই নিয়ে সচেতন করছেন সকলকে।

পর্যটকদের তাজ-দর্শনেও সঙ্গী হয়েছে ত্রিস্তরীয় মাস্ক। ছবি: পিটিআই।

• যে কোনও খাবার মূলত মাছ-মাংস ভাল করে ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফ্রিজেও এই ভাইরাস বেঁচে থাকে। তাই যে কোনও খাবার খুব ভাল করে গরম করে ও ফুটিয়ে খান।

• ফ্রিজে রান্না করা তরকারি ও কাঁচা তরকারি একসঙ্গে রাখবেন না। নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্কার করুন।

• বাদুড়ে খাওয়া ফল বা খুঁত আছে এমন ফল খাবেন না। দীর্ঘ সময় কেটে রাখা ফলও এড়িয়ে চলুন।

• মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধানিষেধ নেই। এই নিয়ে অকারণ আতঙ্ক করতেও নিষেধ করছেন চিকিৎসকরা। তবে যে কোনও মাংসই খুব ভাল করে পরিষ্কার করে ও সুসিদ্ধ করে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।

• প্যাকেটজাত ইমপোর্টেড মাংস আপাতত না কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

• সর্দি-কাশি এমনিতেই সংক্রামক অসুখ। করোনা-আতঙ্কের সময় তাই এ নিয়ে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। দীর্ঘ দিন সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত এমন মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন অন্তত এক মিটার। বাড়িতে এমন কেউ থাকলে তার ব্যবহৃত জিনিসও আলাদা করে রাখুন।

• কিন্তু এ তো গেল চেনা পরিচিত মানুষের কথা। রাস্তাঘাটে বেড়িয়ে কোন মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে আক্রান্ত তা বুঝবেন কী করে? তাই রাস্তায় বেরলেই মাস্ক ব্যবহার করুন। সাধারণ মাস্ক নয়, ত্রিস্তরীয় নীল বা সবুজ রঙের মাস্ক যা কেবলমাত্র ওষুধের দোকানে কিনতে পাওয়া যায়।

• ডিসপোজাল মাস্ক পরুন। মাস্ক ভিজে গেলে ও গোটা এক দিন ব্যবহার হয়ে গেলে তা বদলে ফেলুন।

• বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে খুব ভাল করে কনুই অবধি হাত ধুয়ে নিন। আঙুলের ফাঁক, নখের কোনা, হাতের উপরিভাগ সবটাই ভাল করে ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়ার জন্য কিছু ক্ষণ হাত উঁচু করে রাখুন। ইথাইল অ্যালকোহল বা পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিয়ে হাত ধুতে পারেন। তবে সাবান দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার করে নিলেও হবে।

• হাত উঁচু করে রেখে হাত শুকিয়ে তবেই কারও গায়ে হাত দিন। বিশেষ করে বাড়িতে শিশু থাকলে এই নিয়ম অবশ্য পালনীয়।

Coronavirus Virus Infection Symptoms Health Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy