Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
child care

শুরু নিউ নর্ম্যাল, ছোটদের সুরক্ষায় এই সব মানতেই হবে

প্রাপ্তবয়স্ক কোভিড রোগীর মধ্যে যদি ৫ শতাংশ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, শিশুদের ক্ষেত্রে জটিলতা হয় ০.৮ শতাংশ ক্ষেত্রে।

বাচ্চাদের সুরক্ষার পাঠ দিন এখন থেকেই। ছবি: শাটারস্টক

বাচ্চাদের সুরক্ষার পাঠ দিন এখন থেকেই। ছবি: শাটারস্টক

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:০২
Share: Save:

ধুলো বালি মেখে খেলাধুলার দিন শেষ হয়েছিল আগেই। তবে নিউ নর্ম্যালের ক্ষেত্রে বিষয়টা আরও একটু মুশকিলের। কারণ মা-বাবাকে কাজে বেরতে হবেই। যদিও বাচ্চাদের কোভিডের আশঙ্কা বড়দের চেয়ে অনেক কম। কারণ যে বিশেষ রিসেপটরে ভর করে শরীরে হানা দেয় কোভিড-১৯, সেই এসিই-২ রিসেপটর, প্রাপ্তবয়স্কদের শ্বাসনালি, ফুসফুস, অন্ত্র, পাকস্থলী ইত্যাদি জায়গায় থাকলেও, শিশুর শরীরে এর সংখ্যা অনেক কম। ফলে তাদের রোগ কম হয়, জটিলতাও হয় না বিশেষ।

প্রাপ্তবয়স্ক কোভিড রোগীর মধ্যে যদি ৫ শতাংশ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, শিশুদের ক্ষেত্রে জটিলতা হয় ০.৮ শতাংশ ক্ষেত্রে, জানাচ্ছে সাম্প্রতিক গবেষণা। কাজেই বাচ্চারা তুলনামূলক সুরক্ষিত এমনটা বলা চলে। এ দিকে স্কুল বন্ধ, বাইরে বেরিয়ে খেলা বন্ধ। পরিবারের গুরুজনরাও শিশুদের ব্যাপারে অতিরিক্ত স্পর্শকাতর, এটা একটা ভাল দিক। বাইরে থেকে এসে সম্পূর্ণ স্যানিটাইজ না করা পর্যন্ত তাদের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেন না বড়রা। কাজেই বাচ্চাদের বিপদ তুলনামূলকভাবে কম। আবার নানারকম ভ্যাকসিন দেওয়া হয় বলেও বিপদ কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নিশান্তদেব ঘটক। বিশেষ করে এমএমআর ও বিসিজি ভ্যাকসিন কোভিড ঠেকাতে পারে মনে করা হচ্ছে, জানালেন চিকিৎসক।

যতই সুরক্ষা থাক-না কেন, শিশুদের সংক্রমণ একেবারে হয় না, এমন নয়। তার উপর স্কুল কিংবা পার্কও চিরদিন বন্ধ থাকবে এমন নয়। ভাইরাস বিদায় নেওয়ার আগেই সে সব খুলে দেওয়া হবে। ফলে বাচ্চাদের বিপদ বাড়বে, যদি না এখন থেকেই সুরক্ষার নিয়ম শেখানো হয় তাদের।

আরও পড়ুন: বাইরে বেরচ্ছেন রোজ? করোনা ঠেকাতে এই সব মানতেই হবে নিউ নর্ম্যালে

সুরক্ষার নিয়ম

• সংক্রমণ ঠেকানোর সবচেয়ে বড় উপায় হল পরিচ্ছন্নতা। বাচ্চাকে এখন বেশিক্ষণ হাতের কাছে পাচ্ছেন। এই সুযোগে সেসব শিখিয়ে দিন। যেমন খাওয়ার আগে ও শৌচাগার থেকে এসে হাত ঘষে ঘষে সাবান দিয়ে ধোওয়া, বাইরে থেকে এসে হাত-পা সাবান দিয়ে ধোওয়া, দাঁত দিয়ে নখ না-কাটা, আঙুল না-খাওয়া, কথায় কথায় মুখে-নাকে-চোখে হাত না-দেওয়া, কারও সর্দি-কাশি হলে তার কাছে না-যাওয়া ইত্যাদি যেন তার মাথায় গেঁথে যায় মনে রাখতে হবে।

• মায়েদের নিজেদেরও কিছু অভ্যাস পালটানো দরকার। যেমন আঁচল বা ওড়না দিয়ে বাচ্চার মুখ-নাক না-মোছানো, মুখে মুখ লাগিয়ে আদর না-করা, পরিচ্ছন্ন না হয়ে বাচ্চাকে কোলে না-নেওয়া ইত্যাদি। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা কম থাকে।

শিশুদের সব সময় মাস্ক পরানোর প্রয়োজন নেই। অভিভাবককে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরতে হবে। রুমাল জাতীয় কাপড়ে মুখ ঢাকা যাবে না। ছবি:পিটিআই

• ‘‘ছোট বাচ্চাকে সামাজিক দূরত্বের পাঠ শেখানো বেশ কঠিন ব্যাপার’’ জানালেন এই চিকিৎসক। ‘‘সে যে বন্ধুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে খেলাধুলা করতে পারবে না, তা বুঝতে অনেক সময় লেগে যাবে। ধৈর্য ধরে, নিজেদের উদাহরণ দিয়ে ধীরে ধীরে বোঝান। নিজেরাও যে বিপদ এড়াতে সবার সঙ্গে দূরত্ব রেখে মিশছেন, সেটা যেন সে বোঝে। বাড়ির বয়স্ক সদস্যের সঙ্গে খেলতে পারে সে। তবে আত্মীয় বা বন্ধুদের বাড়ি যাতায়াত বন্ধ রাখুন। রোগ ঠেকাতে বেশিরভাগ সময় যে বাড়িতে থাকতে হবে, তা যেন ধীরে ধীরে বাচ্চা বুঝতে শেখে।’’

আরও পড়ুন:নিউ নর্মালে নানা রোগ বাড়াচ্ছে দূষণ​

• বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে কোনও জনবহুল জায়গায় যাবেন না। বাইরের কোনও জিনিসে হাত দিতে দেবেন না, এমনই মত চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের।

• অ্যালার্জিজনিত হাঁচি বা হাঁপানি থাকলে সাবধানে রাখুন। দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধপত্র বা ইনহেলার ব্যবহার করুন।

• দিনে দু-বার জীবাণুনাশক দিয়ে ঘর মুছে নিন। বাচ্চা যাতে কিছু মুখে না দিয়ে ফেলে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

• ছোট বাচ্চাদের মলত্যাগের পর তাকে ভাল করে পরিষ্কার করুন।

• কথায় কথায় বাইরের খাবার খাওয়াবেন না। ঘরোয়া পুষ্টিকর খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

আরও পড়ুন:‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে উঠতে আর কত দিন, ভ্যাকসিনই বা কবে?​

• সর্দি-কাশি ও জ্বর হলে দুশ্চিন্তা করবেন না। বাচ্চাদের কোভিডের উপসর্গ একটু অন্যরকম হয়। পেটের গোলমাল, ডায়ারিয়া, বমি থাকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। তবে উপসর্গ যা-ই হোক-না কেন, বাচ্চা অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

• শিশুদের সব সময় মাস্ক পরিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। স্কুল খুলে গেলে পরতে হবে। কাজেই অভ্যাস তৈরি করে রাখতে হবে।

আরও পড়ুন:অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় বাড়ছে এই সব রোগের আশঙ্কা, কী করবেন, কী করবেন না

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona COVID-19 Child Child Care Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE