Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Skin Care

ত্বক বাঁচিয়ে সুরক্ষা

অতিরিক্ত স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার হাতের ত্বকের ক্ষতি করে। জেনে নিন, কী ভাবে তা ব্যবহার করা উচিত করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি সকলে।

ঈপ্সিতা বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

যত লোশনই মাখছেন না কেন, হাত যেন শুষ্কই থেকে যাচ্ছে। নখও ভঙ্গুর হচ্ছে? হাতের চামড়া খসখসে তো হচ্ছে, তার সঙ্গে সেখানে লালচে স্পটও দেখা দিচ্ছে। এহেন সমস্যা ক’মাস ধরে বেড়েই চলেছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এর জন্য দায়ী স্যানিটাইজ়ারের অতিরিক্ত ব্যবহার।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি সকলে। স্যানিটাইজ়ারের অতিরিক্ত ব্যবহার ত্বকের শুষ্কতার কারণ। নখের রঙের পরিবর্তন ঘটিয়ে শ্রীহীন হওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি করতে পারে স্যানিটাইজ়ার।

• চর্মরোগবিশেষজ্ঞ সন্দীপন ধর বললেন, ‘‘ডায়াবিটিস, থাইরয়েডে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে যাঁদের বয়স, তাঁরা সমস্যায় ভুগছেন বেশি। অন্যদের তুলনায় এঁদের ত্বক শুষ্ক বেশি হওয়ায় স্যানিটাইজ়ারের অতিরিক্ত ব্যবহার ত্বকের মারাত্বক ক্ষতি ডেকে আনছে।’’ কী ভাবে? ডা. ধর বুঝিয়ে দিলেন, ‘‘স্যানিটাইজ়ারের মূল উপাদান অ্যালকোহল। এটি ত্বক জীবাণুমুক্ত করার সঙ্গেই শুষে নেয় ত্বকের স্বাভাবিক তেল। ত্বক শুষ্ক হয়ে বলিরেখা দেখা দেয়।’’

• স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার যত বেশি হবে, ততই ক্ষতিকর ব্যাকটিরিয়ার সঙ্গে ভাল ব্যাকটিরিয়াও মরে যাবে। অন্য দিকে শত্রু ব্যাকটিরিয়াও এর সঙ্গে পরিচিত হয়ে যাবে। ডা. ধরের মতে, ‘‘ব্যাকটিরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেড়ে যায়। যত বেশি হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করব, ততই অ্যালকোহল সহ্য করতে পারার ক্ষমতাও বাড়তে থাকে।’’

• ত্বকের ক্ষতি না করে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা যায়। যেখানে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সুযোগ রয়েছে, সেখানে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। ডা. সন্দীপন ধর বললেল, ‘‘কুড়ি সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুলে তা স্যানিটাইজ়ারের মতোই কার্যকর। তাই সাবান ও জল থাকলে স্যানিটাইজ়ার এড়ানো যায়। বাড়িতে-কাজের জায়গায় ব্যবহার না করে, রাস্তায় শুধুমাত্র প্রয়োজনেই এটি ব্যবহার করা ভাল।’’

• কাছাকাছি কেউ হাঁচলে বা কাশলে হাত স্যানিটাইজ় করেন অনেকে। ডা. ধরের কথায়, ‘‘দূষিত হাতেই শুধু সংক্রমণ ছড়ায় না, ড্রপলেট থেকেও হয়।’’ তাই মাস্ক পরুন। অবসেশনকে বশে আনা দরকার। কোনও কিছু স্পর্শ না করলে ঘন ঘন স্যানিটাইজ় করার কোনও দরকার নেই। এর সঙ্গেই কয়েকটি বিষয় মেনে চলুন।

• হাত নিয়মিত ময়শ্চারাইজ় করুন।

• দিনে যত বার স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করছেন, অন্তত তার অর্ধেক বার ময়শ্চারাইজ়ার বা ক্রিম অবশ্যই লাগাবেন।

• স্যানিটাইজ়ার কেনার আগে তাতে অ্যালো ভেরা জেল বা গ্লিসারিন আছে কি না, দেখে নিন। ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবেন অনেকটাই।

• ঘুমোতে যাওয়ার আগে হাতে ভাল করে হ্যান্ড ক্রিম মাসাজ করে নিন।

• স্যানিটাইজ় করার সঙ্গে সঙ্গে, হাত কখনও ঠোঁটে লাগাবেন না। ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।

• অ্যালকোহল বেসড হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার কিন্তু হাতের ধুলোময়লা দূর করতে পারে না। চিটচিটে বা ধুলোময়লা লেগে থাকা হাতে স্যানিটাইজ়ার লাগালে তা কম কাজ করে। বরং পরিষ্কার হাতে তা ব্যবহার করা ভাল।

ক্রমাগত স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের ফলে ত্বকে কোনও সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডা. ধর আরও বললেন, ‘‘স্যানিটাইজ়ার ছাড়াও ক্ষারযুক্ত সাবানের অতিরিক্ত ব্যবহারও ত্বকে সমস্যা তৈরি করে।’’ তবে নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে স্যানিটাইজ়ার ও সাবানই হবে সুরক্ষাকবচ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Skin Care Hand Sanitizer Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE