পুজো শুরু। মাসখানেক ধরে জামাকাপড় কিনে এমনিতেই পকেটে টান। তার উপর পুজোর আসল দিনগুলিতে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া, মণ্ডপসফর তো করতেই হবে। কিন্তু তার মানেই কি লাগামছাড়া খরচ? একটু হিসেব করে চললেই উৎসব থেকে বাঁচে আনন্দও, রয়ে যায় কিছু সঞ্চয়ও। যাতে পুজোর শেষে মাথায় হাত না পড়ে। উৎসবের মরসুমে সাশ্রয়ী হওয়ার কিছু কৌশল মাথায় রাখতে হবে। তা হলেই সপ্তমী থেকে পুজোর বাকি ক’টা দিন দুশ্চিন্তায় কাটাতে হবে না।
পুজোয় খরচ কমানোর কিছু কার্যকরী পন্থা
১. দুর্গাপুজোর সময় বাইরে খাওয়াদাওয়া করতে গিয়েই বড় অঙ্কের টাকা বেরিয়ে যায়। সেখানেই কৌশলী হতে হবে আপনাকে। সপ্তমী থেকে খাবারের বাজেট ঠিক করতে পারেন। দুই থেকে তিন বেলাই যদি বাইরের খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তা হলে এক বেলা অন্তত মণ্ডপ সন্নিহিত খাবারের স্টলগুলিতে খেতে পারেন। সেখানে অনেক সময়ে কম দামে খাবার পাওয়া যায়। রেস্তরাঁর বদলে কোনও কোনও দিন কোনও বেলায় রাস্তার ধারের স্টলগুলি থেকেও সাশ্রয়ী মূল্যের খাবার খুঁজে নিতে পারেন।
২. রেস্তরাঁয় গিয়ে খাবার খেতে হলে প্রথমেই যা খুশি অর্ডার করে দেবেন না। শেষে অত খাবার পেটে না আঁটলে অপচয়ও হবে, টাকাও খসবে। তাই চেষ্টা করুন খাবার ভাগাভাগি করে খেতে। পেট না ভরলে শেষে অর্ডার করে নেবেন আবার।
৩. বিশেষ অফার ও ছাড়ের খোঁজ করুন। অনেক রেস্তোরাঁ ও স্টল পুজোর সময় বিশেষ অফার দিয়ে থাকে। সেগুলি খুঁজে বার করে কাজে লাগান। তা হলে বাজেটের মধ্যে থাকার সুযোগ পাবেন।
৪. জলখাবার ও পানীয়ের খরচ কমানোর চেষ্টা করুন। সকালে বাড়ি থেকে পেট ভরে খেয়ে বেরোলে বাইরের খাবার কম খেলেও চলবে। তা ছাড়া বাড়ি থেকে কিছু পানীয় তৈরি করে নিয়ে যান। যেমন লেবুর জল বা ডিটক্স ওয়াটার। তাতে শরীরও ভাল থাকে, কোল্ড ড্রিঙ্কসের পিছনে টাকাও খরচ হয় না।
৫. বিশেষ প্রয়োজন অনুসারে খরচের কথা ভেবে তবেই বাড়ি থেকে বেরোন। ধরা যাক, গাড়িঘোড়ার পিছনে কত খরচ হতে পারে, ভেবে নিন। কোন খাবার খাবেন, সেখানে কত খরচ হবে, হিসেব করে নিন। যেগুলি না হলেও চলে, সেগুলিকে বাদ দিয়ে দিন। রাস্তায় কিছু কেনাকাটা করার ইচ্ছে হলে, বিবেচনা করে দেখুন, আদৌ আবশ্যিক কি না। তাতে অপ্রত্যাশিত এবং অতিরিক্ত ব্যয় কম হবে।
৬. বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বেরিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় বিল মেটানোর সময়ে বার বার নিজে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবেন না। দেখবেন, কারও উপর যেন চাপ বেশি না পড়ে। সকলে মিলে ভাগাভাগি করে খরচ করার চেষ্টা করবেন।
৭. সব খরচের রসিদ বা ডিজিটাল নথি সংরক্ষণ করুন। তাতে কত খরচ হচ্ছে, না হচ্ছে, তার একটি হিসেব রাখতে সুবিধা হবে।
৮. অপ্রয়োজনীয় ঋণ বা ধার এড়িয়ে চলুন। টাকা কমে এলে সেই বুঝে উদ্যাপনে রাশ টানুন। অন্যের থেকে ধার নিলে মনে রাখবেন, সে টাকা ফেরত দেওয়ার সময়ে চাপ হতে পারে।
৯. ক্রেডিট কার্ডের বদলে ডেবিট কার্ড বা নগদ বেশি ব্যবহার করুন। হাতে খরচের লাগাম আপনার হাতেই থাকবে। নয়তো সুদে-আসলে পরে টাকা মেটাতে গেলে বিপদে পড়তে হতে পারে।