Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দু’আঙুলের ফাঁকে জ্বলছে জীবন, কী করবেন, ভাবুন আজ

আজ তামাককে ‘না’ বলার দিন। কী ভাবছেন সেলেবরা? সন্ধানে স্বরলিপি ভট্টাচার্য‘পিউবার্টি’ নামের স্টেশনে জীবন-প্যাসে়ঞ্জার পৌঁছল কি না জানার অনেক উপায়ের মধ্যে একটি সে। তামাকের ছড়ানো সংসারে সিগারেটই ফার্স্ট বেঞ্চের সদস্য। আজ ৩১ মে ‘ওয়ার্ল্ড নো টোব্যাকো ডে’ পালনের হরেক আয়োজনে সামিল হই আমরা। কিন্তু তার পরই ভুলে যাই ওই বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ‘তামাক একটি ক্ষতিকারক পদার্থ। এটির সেবনে ক্যানসার হতে পারে।’ এমনকী, ‘ওয়ার্ল্ড নো টোব্যাকো ডে’-র অনুষ্ঠানেও পোড়া ছাই মাড়িয়ে হেঁটে যাই বুক ফুলিয়ে।

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ১২:০১
Share: Save:

যাবতীয় বিধিনিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, স্কুলফেরত পথের নানা অলিগলিতে সদ্য কৈশোর থেকে হঠাত্ যৌবনের অনুঘটক একরত্তি এক সাদা কাঠি।

‘পিউবার্টি’ নামের স্টেশনে জীবন-প্যাসে়ঞ্জার পৌঁছল কি না জানার অনেক উপায়ের মধ্যে একটি সে। তামাকের ছড়ানো সংসারে সিগারেটই ফার্স্ট বেঞ্চের সদস্য। আজ ৩১ মে ‘ওয়ার্ল্ড নো টোব্যাকো ডে’ পালনের হরেক আয়োজনে সামিল হই আমরা। কিন্তু তার পরই ভুলে যাই ওই বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ‘তামাক একটি ক্ষতিকারক পদার্থ। এটির সেবনে ক্যানসার হতে পারে।’ এমনকী, ‘ওয়ার্ল্ড নো টোব্যাকো ডে’-র অনুষ্ঠানেও পোড়া ছাই মাড়িয়ে হেঁটে যাই বুক ফুলিয়ে।

সব কিছু জেনেও সিগারেট যাঁদের জীবনে ‘চিরসখা’ আজ না হয় তাঁদের কথাই হোক! উঁকি দেওয়া যাক টলিউডে। নিজেদের হলদেটে আঙুলকে সাক্ষী রেখে প্রথম ধোঁয়ার স্মৃতি ছুঁয়ে দেখতে ডাউন মেমারি লেনে পা বাড়ালেন সেলেবরা। নরম বিকেলের আড্ডায় উঁকি দিল কলেজ বেলায় সিগারেট খেতে গিয়ে বড়দের হাতে ধরা পড়া বা সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার বাত্সরিক অঙ্গীকার। ‘ওয়ার্ল্ড নো টোব্যাকো ডে’-তে কেউ আরও আঁকড়ে ধরলেন তাকে। কেউ বা ‘নন স্মোকার’ হওয়ার শপথ নিলেন আরও এক বার।

পুজো প্যান্ডেলে সিগারেট ঠোঁটে ভিড় ম্যানেজ করতে করতে কাকার হাতে ধরা পড়া ক্লাস ইলেভেনের ছেলেটাকে ষাটের দোরগোড়ায় পৌঁছেও স্পষ্ট দেখতে পান অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী। “বাড়ি ফিরে কাকা বলেছিলেন, ভিড় ভালই সামলাচ্ছিলে। তবে সিগারেটটা মুখে না নিয়ে করলেই ভাল করতে। এর পর ভেবেছিলাম লুকিয়ে খাব”— জানালেন তিনি।

একটু সুখটানের লোভে বেপাড়ায় হঠাত্ ইভনিং ওয়াকের দিনগুলোয় মেয়েরাও প্রথম কাউন্টার পায় কোনও দুপুর চিলেকোঠায়। কিংবা সন্ধ্যে লেকের এঁটোয়। মুখে মুখে লাল ফুলকি জ্বলে ওঠে। বাবার খুচরোর হিসেব থাকে না। হিসেব থাকে না সিগারেটেরও। তাই মেয়েদের থেকেই চেয়ে খাওয়া! এমনই এক বাবার গল্প ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। “দিদিরা রাতে লুকিয়ে সিগারেট খেত। আর আমি মাকে নালিশ করতাম। তবে এমনও হয়েছে, বাবার কাছে নেই, আমাদের থেকে চেয়ে খেয়েছেন।” মুঠোফোনে জানালেন সুদীপ্তা। “তবে তিন মাস হল আমি সিগারেট ছেড়ে দিয়েছি।” সত্যি বলছেন? “মানে খুব স্ট্রেস হলে বরের থেকে দু’টান দিই।” তা হলে আর ছাড়লেন কই? “খুব চেষ্টা করছি জানেন। গত ৬-৭ বছর ধরে প্রত্যেক ফার্স্ট জানুয়ারিতে রেজোলিউশন নিই। যত বয়স বাড়ছে সিনেমা শুরুর আগের ওই সতর্কবার্তা বেশ ভাবাচ্ছে।”

রেজোলিউশনের কথা জানতে চাইলে সব্যসাচী চক্রবর্তী উল্টে প্রশ্ন করলেন, “আপনি আমায় গ্যারান্টি দিতে পারবেন, সিগারেট না খেলে আরও একশো বছর বাঁচব? যে জিনিসটা ভাল লাগে সেটা দুম করে ছাড়ব কেন?” ‘তামাক একটি ক্ষতিকারক পদার্থ’ ফের এক বার চেনা ট্যাগলাইন মনে করিয়ে দিয়ে জানতে চাইলাম, আপনি কি জ্ঞানপাপী? পর্দার ফেলুদার সহাস্য জবাব, “হান্ড্রেড পার্সেন্ট।”

রক্ষণশীল গার্লস স্কুলে মেয়েবেলা কাটানো অভিনেত্রী জুন সিগারেট খান না। তাই মেয়েবেলায় নিজে ধরা না পড়লেও ছেলে শিবেনকে ধরেছিলেন হাতেনাতে। “গাড়িতে প্যাকেটটা দেখেই সন্দেহ হয়েছিল। মায়ের মন তো। তাই বুঝিয়েছি ছেলেকে।” বললেন উদ্বিগ্ন জুন।

মেয়েদের ইমপ্রেস করতে আর ম্যানলি হতে যে সিগারেট খেতেই হবে এমন গবেট বুদ্ধি মাথায় গাঁতিয়ে দেওয়ার বন্ধুও প্রচুর জুটে যায় নেশার সঙ্গে প্রথম ডেটেই। নায়কের উত্তমকুমার থেকে ধোবিঘাটের আমির খান হয়ে ওঠার চেষ্টায় বিকেলগুলো গঙ্গার পাড়ে স্রেফ ফুঁকে যায়। সেক্স, সিগারেট, সিনেমা (এ মার্কা) নিয়ে পিউবার্টি দৌড় লাগায়। বাকি দু’জন এক সময় আঙুল ছেড়ে গেলেও এক জন আঙুল ধরেই থাকে। যেমন ধরে আছে কলার টিউনে ‘অকাল বসন্ত’ এনে দেওয়া গায়ক অনুপমের। তিনি জানালেন, “সিগারেট খেতে আমার কোনও দিনই ভাল লাগে না। এখন মাঝে মাঝে খাই দলে পড়ে।” তাই নন স্মোকারদের দলে তিনিও বাদ।

কিন্তু ব্যতিক্রমও কখনও কখনও রুট ম্যাপ বদলে দেয়। নতুন ছন্দে বাঁচতে শেখায়। তেমনই এক জন অধুনা নন স্মোকার আইকন প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়। কোনও রেজোলিউশন ছাড়াই সিগারেট ছেড়েছেন তিনি। ‘ওয়ার্ল্ড নো টোব্যাকো ডে’তে প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় যেন এক বদলে যাওয়া রোদ্দুরের বার্তাবাহক!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE