সকাল-রাতে গরম তেমন না থাকলেও, বেলা বাড়তেই উধাও হচ্ছে বসন্ত-বাতাস। মার্চে রোদের চোখরাঙানিতে কলকাতায় বসে বোঝা দায়, এটা আদৌ বসন্ত কি না!
তবে ক্যালেন্ডারের পাতা অনুযায়ী গরম পড়ার আগে ঘুরে নিতে পারেন তিন রাজ্যের বেশ কয়েকটি ঠিকানা। মার্চ মাসেও সেখানে বরফ ছোড়াছুড়ির সুযোগ পাবেন। খুদেকে নিয়ে হুটোপাটি করতে পারবেন তুষার চাদরে।
সিকিম

বরফে মোড়া নাথুলা। ছবি:সংগৃহীত।
সিকিমের অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটনস্থল ছাঙ্গু, বাবা মন্দির, নাথুলা। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মূলত তুষারপাতের সময়। এই বছর মার্চে ছাঙ্গু, বাবা মন্দিরে বরফ কমে গেলেও একেবারে ফুরিয়ে যায়নি। এই সপ্তাহের মধ্যে বেরিয়ে পড়লে, পড়ে থাকা বরফ কুড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে ছাঙ্গু থেকে আরও খানিক উপরে নাথুলাতে বরফ পাবেন আর একটু বেশি। ছাঙ্গু না গিয়ে সিল্ক রুট ধরে থাম্বি ভিউ পয়েন্ট পৌঁছলে বরফের বল বানিয়ে দিব্যি ছো়ড়াছু়ড়ি করতে পারবেন। জ়িগজ়্যাগ রুট, নিউ বাবা মন্দিরের আশপাশে এমন সময় বরফ দেখতে পারবেন আশ মিটিয়ে। তবে মার্চ মাস পর্যন্তই। নতুন করে তুষারপাত না হলে এপ্রিলের শুরুতেই ফুরিয়ে যাবে সব।
আরও পড়ুন:
বরফ দেখার জন্য নর্থ সিকিমও বেছে নিতে পারেন। ১৭ হাজার ২০০ ফুট উচ্চতায় গুরুদোংমার হ্রদেও এখন অনুমতি সাপেক্ষে যাওয়ার ছাড়পত্র মিলছে। ইয়ুমথাঙের পথে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছলেও দু’চোখ সার্থক করে শ্বেতশুভ্র তুষার, নদীর নীচে জমাট বাঁধা পাথর দেখে নিতে পারেন।
হিমাচল প্রদেশ

মার্চে সোলাং ভ্যালি। বরফ দেখতে পর্যটকদের ভিড়। ছবি:সংগৃহীত।
বরফ দেখতে হলে চলে যাওয়া যায় হিমাচল প্রদেশেও। পুরু বরফে ঢাকা থাকে কুঞ্জুম পাস, রোটাং পাস, অটল টানেল-সহ বিস্তীর্ণ জায়গা। মার্চে হিমাচল প্রদেশ গেলে বরফ-উপভোগে বেছে নিতে পারেন কুফরি, সোলাং ভ্যালি। আর যদি কিন্নরের দিকে যেতে চান, তা হলে রয়েছে সাংলা, ছিটকুল। সর্বত্রই রয়েছে তুষার চাদর।
শিমলা এবং মানালির দিকে বেড়াতে গেলে চলুন কুফরি এবং সোলাং ভ্যালি। শিমলা থেকে কুফরির দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। সেখান থেকে ঘোড়ায় চেপে ভিউ পয়েন্টে পৌঁছনো যায়। এই পথে মার্চেও বরফ পাবেন। আর যদি চান বরফে গড়াগড়ি খেয়ে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের আনন্দ উপভোগ করতে, তা হলে অবশ্যই গন্তব্যের তালিকায় রাখুন সোলাং ভ্যালি। স্লেজ়ে চাপা, স্কি করার সুযোগ আছে সেখানে। রয়েছে বরফের উপরে আরও নানা ধরনের খেলা। রাস্তা বরফে ঢাকা থাকায় রোটাং পাস এই সময়ে বন্ধ থাকে। যাওয়া যায় না অটল টানেল দিয়েও। তবে রোটাং যাওয়ার পথে গুলাবা নামে একটি জায়গা রয়েছে। এখন বরফের সন্ধানে যাচ্ছেন অনেকে।
শিমলা-মানালি বাদ দিয়ে যেতে পারেন কিন্নরের পথে। সেপ্টেম্বরে এ পথে গাছ ভরা আপেল দেখতে যান পর্যটকেরা। আর মার্চে বরফ দেখতে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিচারে সাংলা, ছিটকুল, কল্পা যে কোনও জায়গাই অতুলনীয়। তবে যদি আরও বরফের সন্ধান চান যেতে পারেন টাবো, নাকো হয়ে কাজ়া। তবে এই পথে প্রচুর বরফ থাকে, ঠান্ডাও খুব বেশি। এমন মরসুমে জল, বিদ্যুতের অভাবও হতে পারে অতিরিক্ত তুষারপাত হলে। প্রবল ঠান্ডাও থাকে। সে ক্ষেত্রে শরীর এবং পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভাল।
কাশ্মীর

মার্চে বরফ মিলবে গুলমার্গ, সোনমার্গ এবং দুধ পাথরিতে। ছবি:সংগৃহীত।
প্রতি মরসুমে রূপ বদলায় কাশ্মীরের। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চে ফুটে ওঠে সাদা-কালো ছবি। চারদিক তুষার চাদরে ঢাকা। তবে মার্চের মাঝামাঝি থেকেই বরফ গলা শুরু হয়। শ্রীনগরে এই সময়ে বরফ না মিললেও, হতাশ করবে না গুলমার্গ। রোপওয়ে চেপে উঠতে হবে পাহাড়ের উপরে। সেখানেই বরফে রকমারি ক্রীড়ার আয়োজন। এখনও গুলমার্গের নীচের অংশে বরফ রয়েছে। চলে যেতে পারেন সোনমার্গ এবং দুধ পাথরি। এখন পহেলগাঁও তে বরফ না থাকলেও, এই দুই জায়গায় বরফের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।