মাছের ঝোল থেকে কষা মাংস, সব্জি হোক বা ভর্তা, বাঙালির ঘরে ঘরে ব্যবহৃত হয় আদা-রসুন বাটা। কেউ মিক্সার গ্রাইন্ডারে পিষে নেন, কেউ বা শিলে বেটে নেন। আদা আর রসুন কেউ একসঙ্গে বাটেন, কেউ আলাদা আলাদা ভাবে। কেউ আবার সময়ের অভাবে দোকান থেকে প্যাকেটজাত পেস্টও কিনে নেন। আদা আর রসুন বাটা একসঙ্গেই তেলে দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না, যে পদ্ধতিতে সেই বাটা রান্নায় ব্যবহার করা হয়, তাতে আদপে আদা ও রসুনের প্রকৃত স্বাদ খাবারে মেশে না। মুম্বইয়ের রন্ধনশিল্পী স্বপ্নিল দেশাই আদা ও রসুন বাটা দিয়ে রান্না করার একটি কৌশল শেখালেন ইনস্টাগ্রামে। তাঁর মতে, একমাত্র এই পদ্ধতিতে রাঁধলেই আদা এবং রসুনের স্বাদ ভাল ভাবে খাবারে মিশতে পারে।
আদা-রসুনবাটা দিয়ে রান্নার সঠিক কৌশল। ছবি: সংগৃহীত।
রসুনের মধ্যে যত গুণ, স্বাদ এবং গন্ধ রয়েছে, তা আসে অ্যালিসিন নামক এক যৌগ থেকে। রসুনের মধ্যে অ্যালিনেজ় নামক এনজ়াইম এবং অ্যালিন নামক প্রোটিন মিলেমিশে তৈরি হয় অ্যালিসিন। অ্যালিনেজ় এনজ়াইম তাপের কাছাকাছি এলে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। অন্য দিকে, আদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জল এবং কঠিন ফাইবার। ধীরে ধীরে তার স্বাদ খাবারে মেশে। আগেভাগে রান্নায় মিশিয়ে দিলে আদার জলে রসুন দ্রবীভূত হয়ে যেতে পারে। তাই আদা আর রসুন একসঙ্গে রান্নায় দিলে রসুন তেলে মেশার বদলে আদার জলে মিশে যায়। ফলে তেলে রসুন পড়ার যে স্বাদ বা গন্ধ, তা প্রকাশ পায় না। আদা যত ক্ষণে গরম হচ্ছে, তত ক্ষণে রসুন অনেকটাই রান্না হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
তা হলে উপায় কী?
এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে রন্ধনশিল্পী বিশেষ কৌশল শেখালেন। রসুন আর আদা বাটা একসঙ্গে না দিয়ে আগে রসুন দিতে হবে, তার পর আদা। কড়াইয়ে তেল গরম হওয়ার পর প্রথমে রসুন দিয়ে ১০-২০ সেকেন্ড রেখে তার পর আদা দিতে হবে।
কখনও সখনও এর উল্টোটিও ঘটতে পারে। যখন গরম তেলে কোনও কিছু হালকা নাড়াচাড়া করে নিতে চাইবেন, তখন আগে আদা দিয়ে পরে রসুন ঢালতে হবে। কারণ, রসুন চটজলদি পুড়ে যেতে পারে আর আদা রান্না হতে সময় লাগে।