Advertisement
E-Paper

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে কসবার আবাসিক স্কুলের ৩০ পড়ুয়া

মধ্যরাতে অসুস্থ হয়ে শহরের দু’টি হাসপাতালে ভর্তি হল একটি আবাসিক স্কুলের ৩০ জন পড়ুয়া। বুধবার সন্ধ্যায় কসবার বিবি চ্যাটার্জি রোডের ওই আবাসিক স্কুলের পড়ুয়াদের একাংশের মাথায় উকুন মারার ওষুধ দেওয়া হয় বলে সেখানকার শিক্ষিকারা জানান। রাতে খাওয়ার পরে তাদের বমি শুরু হয়। ছটফট করতে শুরু করে সকলে। পড়ুয়াদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন পড়শিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৭

মধ্যরাতে অসুস্থ হয়ে শহরের দু’টি হাসপাতালে ভর্তি হল একটি আবাসিক স্কুলের ৩০ জন পড়ুয়া। বুধবার সন্ধ্যায় কসবার বিবি চ্যাটার্জি রোডের ওই আবাসিক স্কুলের পড়ুয়াদের একাংশের মাথায় উকুন মারার ওষুধ দেওয়া হয় বলে সেখানকার শিক্ষিকারা জানান।

রাতে খাওয়ার পরে তাদের বমি শুরু হয়। ছটফট করতে শুরু করে সকলে। পড়ুয়াদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন পড়শিরা।

তাঁরাই স্কুলের দরজা খুলে দ্রুত আবাসিকদের হাসাপাতলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ পড়ুয়াদের প্রথমে দক্ষিণ কলকাতার রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উনিশ জন পড়ুয়াকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অসুস্থ পড়ুয়াদের এগারো জনকে ভর্তি রাখা হয় রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানেই। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও পড়ুয়াদের অবস্থা স্থিতিশীল।

এলাকার বাসিন্দা সোমেন ঘোষ বলেন, “রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ পড়ুয়াদের চিৎকার শুনে ছুটে আসি। দেখি, কেউ কেউ বমি করছে আর কয়েক জন শুয়ে কাতরাচ্ছে। তখন ওদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।”

কসবার এই স্কুলটিতে সকাল সাতটা থেকে প্রাথমিক বিভাগের ক্লাস হয়। বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে মাধ্যমিক বিভাগের ক্লাস শুরু হয়। অসুস্থ পড়ুয়ারা অধিকাংশই প্রাথমিক বিভাগের। এই স্কুলেই সর্বশিক্ষা মিশনের আওতায় একটি আবাসিক স্কুলও রয়েছে।

এখানকার অধিকাংশ পড়ুয়ার বাড়ি ক্যানিং, লক্ষ্মীকান্তপুর এলাকায়। কিছু পড়ুয়া আশপাশের এলাকার বলেও বাসিন্দারা জানান। স্কুলে মিড-ডে মিলেরও ব্যবস্থা রয়েছে। আবাসিক স্কুলটির পড়ুয়াদের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। স্কুল কর্তৃপক্ষ অসুস্থ পড়ুয়াদের নামের একটি তালিকা সাদা কাগজে লিখে স্কুলের গেটে ঝুলিয়ে দিয়েছেন। খবর পেয়ে সকালেই স্কুলের সামনে এসে পৌঁছন পড়ুয়াদের পরিজনেরা।

তাঁরা জানান, স্কুলের তরফে তাঁদের কোনও খবর দেওয়া হয়নি। টিভিতে খবর শুনে এসেছেন। এক পড়ুয়ার অভিভাবক নমিতা সাহা বলেন, “স্কুলের কেউ আমাদের কিছু বলেননি। পাড়ার এক জন আমাদের জানিয়েছেন ওদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”

এই সব নিয়ে মুখে কুলুপ এঁঁটেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাধ্যমিক বিভাগের টিচার ইনচার্জ সোমা রায় সরকার বলেন, “আবাসিক ছাড়া যে ষাট জন পড়ুয়া রয়েছে, আমরা তাঁদের দেখাশোনা করি। আবাসিকদের দেখার দায়িত্বে রয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।”

প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা বীথিকা মান্না বলেন, “অসুস্থদের মধ্যে অধিকাংশ পড়ুয়াই প্রাথমিক বিভাগের। শুনেছি ওরা এখন ভালো আছে।”

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় কাউন্সিলর সিপিএমের দীপঙ্কর দে। অসুস্থ পড়ুয়াদের মধ্যে যাঁদের বাড়ি স্কুলের কাছে, তাঁদের বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দীপঙ্করবাবু বলেন, “ঘটনার কথা পুরসভার শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদকে জানিয়ে তদন্তের দাবি করেছি।” দশ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, “ওই আবাসিক স্কুলটি সর্বশিক্ষা মিশনের আওতায় রয়েছে।”

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য শহরে পনেরোটা আবাসিক স্কুল চালানো হচ্ছে। কিন্তু মিশনের কর্মীর সংখ্যা কম হওয়ায় দেখভালের দায়িত্ব অনেক জায়গায় সেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। সর্বশিক্ষা মিশনের কলকাতার চেয়ারপার্সন কার্তিক মান্না দাবি করেন, পুলিশ উকুন মারার ওষুধের প্যাকেটগুলি স্কুল থেকে উদ্ধার করেছে। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখবেন। তিনি বলেন, “কর্মীদের গাফিলতিই এর জন্য দায়ী।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলের তরফে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করা হয়নি। বাসিন্দারা ঘটনার কথা জানানোয় স্কুলের গেটের সামনে পুলিশ পাঠানো হয়। এই আবাসিক স্কুলের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদিকা শীলা সেনগুপ্তের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে অন্য এক ব্যক্তি জানান, “শীলাদেবী নেই। তিনি ফোন ফেলে কাজে বেরিয়েছেন।”

kasba sick students hospitalised
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy