Advertisement
E-Paper

এক চিকিৎসকই ভরসা ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালে

থাকার কথা চারজন চিকিৎসকের, অথচ রয়েছেন মাত্র একজন। অভিযোগ, সেই চিকিৎসকও রোগী দেখে উঠতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে বেশিরভাগ রোগীকে অন্যত্র রেফার করে দিতে হচ্ছে। এটাই ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালের প্রকৃত চিত্র।

কৌশিক মিশ্র

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১০
বন্ধ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ।

বন্ধ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ।

থাকার কথা চারজন চিকিৎসকের, অথচ রয়েছেন মাত্র একজন। অভিযোগ, সেই চিকিৎসকও রোগী দেখে উঠতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে বেশিরভাগ রোগীকে অন্যত্র রেফার করে দিতে হচ্ছে। এটাই ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালের প্রকৃত চিত্র।

সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক শৈবাল ব্যানার্জি। তিনি বলেন, “ওই গ্রামীণ হাসপাতালে সমস্যার কথা শুনেছি। আরও একজন চিকিৎসকের জন্য আমি ইতিমধ্যেই অর্ডার দিয়ে দিয়েছি। রবিবার এক চিকিৎসক কাজে যোগ দেবেন।” এগরা মহকুমাশাসক অসীম কুমার বিশ্বাস বলেন, “আসলে ডাক্তারের সংখ্যা কম থাকায় সর্বত্র সমস্যা হচ্ছে। আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটির দ্রুত মেটানোর চেষ্টা করছি।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এগরা গ্রামীণ হাসপাতালের উপর বাজকুল থেকে ভগবানপুর ও চণ্ডীপুরের কিছু অংশ ছাড়া আরও ১০-১২টি অঞ্চলের প্রায় আড়াই লক্ষেরও বেশি মানুষ নির্ভরশীল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গ্রামীণ এই হাসপাতালে থাকার কথা চারজন চিকিৎসকের। অথচ সেখানে রয়েছেন মোটে একজন। একজন চিকিৎসককে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়েছে, একজন দিন কয়েকের ছুটিতে রয়েছেন। ফলে সব রোগীকে দেখার দায়িত্ব পড়েছে হাসপাতালের একমাত্র ডাক্তার মোম ভট্টাচার্য (সামন্ত)-র উপর। তিনি বলেন, “এখানে আমি ছাড়া আর কেউ নেই। একজন গত সোমবার থেকে বদলি হয়েছেন। অন্য জন ছুটিতে রয়েছেন। আমি একা দিনরাত কাজ করে আর পেরে উঠছি না।” তবে তিনি জানিয়েছেন, রবিবার বিকেলে একজন চিকিৎসক কাজে যোগ দিয়েছেন।

ফাঁকা পড়ে হাসপাতালের বেড।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অল্প সুস্থ রোগীদের বাড়ি পাঠিয়ে পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে সমস্যা শুধু চিকিৎসকের নয়, নার্সদের সংখ্যাও হাসপাতালে যথেষ্ট কম। নার্স টুলু শ্যামল বলেন, “এখানে ১৫ জন নার্স থাকার কথা। কিন্তু আমরা রয়েছি মাত্র ৬জন।” এই কারণেই হাসপাতালে রোগীর সমস্যাও দিনের পর দিন কমছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, অন্তর্বিভাগে রোগী নেই বললেই চলে। বেশির ভাগ বেডই ফাঁকা। হাসপাতালে ঢোকার মুখেই মহিলা, প্রসূতি, বন্ধ্যাকরণ, চক্ষু সার্জারি-সহ বহু বিভাগের নাম উল্লেখ করে বোর্ড টাঙানো রয়েছে। অথচ সাধারণ পরিষেবা ছাড়া অন্যান্য বিভাগগুলির বেশির ভাগ বন্ধ। ভগবানপুরের লালপুরের বাসিন্দা ৭৫ বছরের শেখ কাদের আলি বলেন, “শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছি। অন্যত্র যাবার মতো টাকা নেই। একজন ডাক্তারই সকলের চিকিৎসা করেন দেখছি।” আবার আবাসবেড়িয়ার গীতা মাইতি বলেন, “দিন কয়েক আগে জ্বর গায়ে স্বামীকে ভর্তি করিয়েছি। এখন দেখছি একজন ডাক্তার সব কাজ করে উঠতে পারছে না। আমরা গরিব, তাই অন্যত্রও যেতে পারব না।”

হাসপাতালের বেহাল পরিষেবা নিয়ে ভগবানপুরের তৃণমূল নেতা স্বপন রায় বলেন, “কয়েক দিন ধরে এমন অব্যবস্থা চলছে। আমরা জেলা ও রাজ্য স্তরে সব জানিয়েছি।” বিডিও উমাশঙ্কর দাস বলেন, “হাসপাতালের সমস্যার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

—নিজস্ব চিত্র।

bhagabanpur gramin hospital doctor kaushik mishra bhagabanpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy