এনসেফ্যালাইটিস নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সোমবার সকাল থেকেই সরগরম হল শিলিগুড়ি পুরসভা। দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের নেতৃত্বে শিলিগুড়ির পুর কমিশনারকে ঘেরাও করে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাঁদের অভিযোগ, এনসেফ্যালাইটিস রোধে পুরসভা ব্যর্থ। এদিন বিকেলে পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে দু’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন চেয়ারম্যান অরিন্দম মিত্র ও পুরসভার কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া।
কংগ্রেস নেতৃত্ব রাজ্য সরকারকেও কাঠগড়ায় তুলেছে। শঙ্করবাবু বলেন, “আমরা সর্বদলীয় বৈঠক করে সমাধানের উপায় চাইছি। কয়েক জনকে সাসপেন্ড করে রাজ্য সরকার দায়িত্ব এড়াতে চাইছে। শহরে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিরোধ ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। শহরে বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর খোঁয়াড় রয়েছে, তা নিয়ে কারও হেলদোল নেই। রাজ্যের মন্ত্রী শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দা। তাও কেন অব্যবস্থা সরকারকে তার জবাব দিতে হবে।”
এদিন শিলিগুড়ি পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন পুর কমিশনার ও পুর চেয়ারম্যান। বৈঠকে তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের ৩১ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকে চব্বিশ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম চালুর সিদ্ধান্ত ছাড়া আর তেমন কোনও উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। সিদ্ধান্ত হয়েছে, কন্ট্রোল রুমে ফোন করে কেউ যদি জ্বর বা শুয়োর সংক্রান্ত কোনও তথ্য দেয়, সঙ্গে সঙ্গে সেখানে দল পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলরকেও জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হবে বলে চেয়ারম্যান জানান। কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, “কাউন্সিলরদের কাছ থেকে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। আমরা বেশি করে ব্লিচিং ছড়ানো এবং মশা মারার জন্য কামান দাগার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বরো ভিত্তিক শুয়োর ধরার অভিযানও চলবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা নিয়েছি। এতদিন কংগ্রেসই বোর্ড চালিয়েছে। তারা কোনও কাজ করেনি বলেই এই অবস্থা।”
বৈঠকের পর তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “পুরসভার তরফে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সরকার এনসেফ্যালাইটিস প্রতিরোধে কাজ শুরু করেছে। দলের উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্লিচিং ছড়ানো, নদর্মা পরিষ্কার হচ্ছে অনেক আগে থেকেই।” কংগ্রেসের কাউন্সিলর দেবশঙ্কর সাহা বলেন, আমরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার আশ্বাস মিলেছে। কন্ট্রোল রুম খোলা হলে তাতে ফল মিলবে বলে মনে করছি।”
বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে অবশ্য এই বৈঠক আরও আগে ডাকা উচিত ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। সিপিএম কাউন্সিলর মুকুল সেনগুপ্ত জানান, তাঁরা ২৪ জুলাই কমিশনারকে সমস্ত কাউন্সিলরদের নিয়ে মিটিং ডাকার প্রস্তাব দেন। তার পর বৈঠক ডাকেন চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান বলেন “শহরে রোগ ছড়ায়নি। তাই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে সময়েই। চিঠি পাওয়া গিয়েছে ঠিকই। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছিল। সবটাই আয়ত্তে রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy