Advertisement
E-Paper

নজরদারির নামে ভোগান্তি, অভিযোগ মার্কিন নার্সের

সাইরেনের শব্দে কান পাতা দায়। আগে-পিছে সব মিলিয়ে পুলিশের আটটি গাড়ি ছুটছে। দেখলে মনে হবে যেন কোনও দাগি আসামিকে কব্জায় এনেছে পুলিশ। সিয়েরা লিওন থেকে নিউ জার্সি ফিরে ঠিক এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পেশায় নার্স কেসি হিকক্স। তাঁর মতে, নজরদারির নামে ইবোলা-আক্রান্ত দেশগুলি থেকে ফিরে আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে অনেকটা দাগি আসামির মতোই আচরণ করছে মার্কিন প্রশাসন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১৬

সাইরেনের শব্দে কান পাতা দায়। আগে-পিছে সব মিলিয়ে পুলিশের আটটি গাড়ি ছুটছে। দেখলে মনে হবে যেন কোনও দাগি আসামিকে কব্জায় এনেছে পুলিশ। সিয়েরা লিওন থেকে নিউ জার্সি ফিরে ঠিক এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পেশায় নার্স কেসি হিকক্স। তাঁর মতে, নজরদারির নামে ইবোলা-আক্রান্ত দেশগুলি থেকে ফিরে আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে অনেকটা দাগি আসামির মতোই আচরণ করছে মার্কিন প্রশাসন। যেমনটা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। রবিবার ডালাসের এক দৈনিকে সেই অভিজ্ঞতার কথা লিখেওছেন কেসি।

বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে গিনি-ফেরত এক ডাক্তারের ইবোলা ধরা পড়ায় নজরদারির বাড়ানো হয়েছিল সেখানে। প্রশাসন জানিয়েছিল, এর পর থেকে গিনি, সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়া যে সব স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার বা নার্স কিংবা সাধারণ মানুষ নিউ ইয়র্কে ফিরবেন, তাঁদের প্রত্যেকের উপর বাধ্যতামূলক ২১ দিন পর্যন্ত নজরদারি চালানো হবে। প্রয়োজনে তাঁদের আলাদাও রাখা হতে পারে। একই নিয়ম চালু করে নিউ জার্সি। সম্প্রতি ইলিনয়ও সেই পথেই হেঁটেছে। প্রশাসনের ব্যাখ্যা, ইবোলার ওষুধ নেই। সুতরাং কড়া নজরদারি চালিয়েই ইবোলা-সংক্রমণ রুখতে হবে।

আর এই নিয়মের গেরোতেই নাস্তানাবুদ কেসি। ডালাসের দৈনিকে তিনি জানিয়েছেন, সিয়েরা লিওন থেকে ফেরার পর প্রথমে যখন তাঁর তাপমাত্রা মাপা হয়, তখন তা স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে আলাদা করে (আইসোলেশন) বসিয়ে রাখা হয়। চরম খিদে, ক্লান্তি সত্ত্বেও চার ঘণ্টা এ ভাবে বসে থাকার পর উত্তেজিত হয়ে ওঠেন কেসি। ফের তাঁর তাপমাত্রা মাপা হয়। তাতে ধরা পড়ে থার্মোমিটারের পারদ ১০১ টপকেছে। কেসির বয়ানে, “ওঁদের বুঝিয়েছিলাম আমি ভীষণ উত্তেজিত। তাই তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে।” কিন্তু কে শোনে কার কথা? তখনই হাসপাতালে ফোন যায়। এর পর আট গাড়ির কনভয় কেসিকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। সেখানেও আলাদা ঘরে রাখা হয়ে তাঁকে। এতেই শেষ নয়। দু’বার ইবোলার পরীক্ষা হয়েছে তাঁর। কিন্তু কিছুই মেলেনি। তা সত্ত্বেও নজরদারি চলবে। কেসির বয়ানে, “পশ্চিম আফ্রিকা থেকে যে সব স্বাস্থ্যকর্মী ফিরবেন তাঁদের কথা ভেবে আমি উদ্বিগ্ন। ...এ রকম অব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তাঁদেরও।”

নিউ জার্সি অবশ্য এই অভিযোগে পাত্তা দিতে নারাজ। গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টি বলেন, “উপসর্গ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভিড়ে ঘুরে বেড়ানো ব্যক্তিদের আটকানো এর থেকে ঢের বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’ তবে যে হাসপাতালে কেসি রয়েছেন সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রোগীর স্বাচ্ছন্দ্যের সব রকম ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। কেসির অবশ্য বক্তব্য, পুরোটাই ভীষণ অনিয়ন্ত্রিত। তাই এত ভোগান্তি।

ভোগান্তির অভিযোগ এনেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন দূত সামান্থা পওয়ারও। সামান্থার বক্তব্য, “ইবোলা রুখতে মার্কিন ও ব্রিটিশ উদ্যোগের প্রশংসা করলেও অনেক দেশই সাহায্য বাড়িয়ে দিচ্ছে না। অর্থ, চিকিৎসক কিংবা সরঞ্জাম কোনওটাই যথেষ্ট পরিমাণে পাঠাচ্ছে না তারা।” তাঁর আর্জি, ইবোলার বিরুদ্ধে লড়াইটা বিশাল মাপের। তাতে এই সাহায্য যথেষ্ট নয়।

সম্ভবত সে কারণেই নিজেদের অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে ১০০ কোটি ইউরো করার কথা ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু এই অর্থ কি আদৌ কোনও কাজে আসবে যদি পশ্চিম আফ্রিকা ফেরত প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীকে কেসির মতো ভোগান্তি সইতে হয়? অনেকেই সেখানে যেতে নারাজ। অনেকে আবার ক্রেগ স্পেন্সারের উদাহরণ দিচ্ছেন। নিউ ইউর্কের এই ডাক্তার ইবোলায় আক্রান্ত। তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয় বলে খবর।

ebola america kaci hickox ebola
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy