Advertisement
E-Paper

স্বাস্থ্যবিমায় আগ্রহ হারাচ্ছে জঙ্গিপুর

রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন জঙ্গিপুরের বাসিন্দারা। গত চার দিনে রঘুনাথগঞ্জ শহরের সাতটি ওয়ার্ডের ১৬৮৩টি বিপিএল পরিবারকে ডাকা হয়েছিল জঙ্গিপুর পুরসভার শিবিরে স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কার্ড নবীকরণের জন্য। সোমবার পর্যন্ত মাত্র ৫৪৬টি পরিবার সেই শিবিরে হাজির হয়ে কার্ড নবীকরণ করিয়েছে। সোমবার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৪৮টি পরিবারের জন্য বিকেল পর্যন্ত পুরকর্মীরা অপেক্ষা করলেও আসে মাত্র ১১০টি পরিবার।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০১:৫১

রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন জঙ্গিপুরের বাসিন্দারা।

গত চার দিনে রঘুনাথগঞ্জ শহরের সাতটি ওয়ার্ডের ১৬৮৩টি বিপিএল পরিবারকে ডাকা হয়েছিল জঙ্গিপুর পুরসভার শিবিরে স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কার্ড নবীকরণের জন্য। সোমবার পর্যন্ত মাত্র ৫৪৬টি পরিবার সেই শিবিরে হাজির হয়ে কার্ড নবীকরণ করিয়েছে। সোমবার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৪৮টি পরিবারের জন্য বিকেল পর্যন্ত পুরকর্মীরা অপেক্ষা করলেও আসে মাত্র ১১০টি পরিবার। বিড়িশ্রমিক অধ্যুষিত জঙ্গিপুর ও রঘুনাথগঞ্জ শহরে স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ নিতে গত তিন বছরে ১০০ শতাংশ পরিবার ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেখানে এবার তারা সরকারি স্বাস্থ্য বিমার প্রতি এত বিমুখ কেন, ভেবে পাচ্ছেন না পুরকর্তারা।

বছরে মাত্র ৩০ টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য বিমার কার্ড করাতে হয়। বিনিময়ে ওই কার্ড দেখিয়ে প্রতিটি বিপিএল পরিবারের ৫ জন সদস্য ৩০ হাজার টাকার মধ্যে যে কোনও চিকিৎসা বিনামূল্যে করাতে পারেন জেলার ৩৬টি নির্দিষ্ট নার্সিংহোম ও সমস্ত সরকারি হাসপাতালে। রাজ্যের মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কার্ড বণ্টনের ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদ জেলা সবার উপরে। এ পর্যন্ত ৬ লক্ষ ২৯ হাজার পরিবারের হাতে এই বিমা কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিপুর পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডে ৭০৩৩টি বিপিএল পরিবারের বর্তমানে স্বাস্থ্য বিমার কার্ড রয়েছে। প্রতি বছর বিমা কার্ড নবীকরণ করতে হয়। কিন্তু এ বার সেই কাজে মোটেই সাড়া মিলছে না জঙ্গিপুরে। পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম জানান, মাইকে, হ্যান্ডবিলে প্রচার করার পরেও গত ৪ দিনে সাতটি ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ কার্ড পুনর্নবীকরণ হয়েছে। তাই ১৭ মে পর্যন্ত প্রতিদিনই শিবির চালানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। এমনটা হচ্ছে কেন?

কেউ মনে করছেন, পুরসভার তরফে যথেষ্ট প্রচার হয়নি। আবার কেউ স্থানীয় নার্সিংহোমগুলিকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছেন। মুর্শিদাবাদ জেলার নোডাল অফিসার রঞ্জন কুমার দাস বলেন, “জেলার সর্বত্রই তো ভাল আগ্রহ রয়েছে এই প্রকল্প নিয়ে। রঘুনাথগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে এমনটা হচ্ছে কেন বুঝতে পারছি না। গত ৪ দিনে মাত্র ৩০ শতাংশ পরিবার কার্ড নবীকরণ করিয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে কোথাও একটা ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ঘাটতিটা পুরসভার প্রচারের, নাকি মানুষের আগ্রহের তা দেখতে হবে।” বিমা প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক শান্তনু সরকার অবশ্য মনে করছেন, স্থানীয় নার্সিংহোমগুলিতে চিকিৎসা করাতে গেলে মানুষকে হেনস্থা হতে হচ্ছে। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই তারা আর বিমা কার্ড পুনর্নবীকরণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। পুরসভার উপপুরপ্রধান অশোক সাহাও মনে করছেন স্থানীয় নার্সিংহোমগুলির দুর্ব্যবহারের জন্যই মানুষ স্বাস্থ্যবিমার কার্ড করাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তিনি বলেন, “নার্সিংহোমের এই দুর্ব্যবহারের কথা বিমা সংক্রান্ত বৈঠকে জেলার স্বাস্থ্য কর্তা ও প্রশাসনের আধিকারিকদের বহু বার বলেছি। আমার ওয়ার্ডের এক বাসিন্দাকে বিমার কার্ড থাকা সত্ত্বেও বাড়তি তিন হাজার টাকা জুলুম করে আদায় করে রঘুনাথগঞ্জের এক নার্সিংহোম। আমি নিজে অভিযোগ করলেও ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ওই ব্যক্তি এবারে কার্ড পুর্নবীকরণ করাতে আসেননি। আমার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বহু প্রচার করেও ১২৬টির মধ্যে ৬০টির বেশি পরিবারকে শিবিরে আনা যায়নি।”

এই প্রেক্ষিতে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার শাশ্বত মণ্ডলের আবেদন, “নার্সিংহোম খারাপ ব্যবহার করলে যেতে হবে না সেখানে। সরকারি হাসপাতালে আসুক মানুষ। এতে স্বাস্থ্য দফতরেরও আয় হবে বিমা প্রকল্পে।”

biman hazra raghunathganj health policy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy