Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Baba Ka Dhaba

আরও চওড়া হল হাসি, ‘বাবা কি ধাবা’-র পাশে জোমাটো, টিন্ডার

রাতারাতি বদলে গিয়েছে দোকানের ছবিটা। সংবাদমাধ্যম থেকে স্থানীয় বিধায়ক– কত মানুষ এসেছেন। যাঁরা খাবার খেয়েছেন তাঁদের অনেকেই আবার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অন্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

কান্তা প্রসাদ, বাদামী দেবী। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেওয়া ছবি।

কান্তা প্রসাদ, বাদামী দেবী। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেওয়া ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ১৯:১১
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়া আর সংবাদমাধ্যমের দৌলতে গোটা দেশ এখন জেনে গিয়েছে 'বাবা কি ধাবা'-র নাম। স্বপ্নের মতো বদলে যাচ্ছে সব কিছু। দিন কয়েক আগেই দিল্লির অখ্যাত 'বাবা কি ধাবা'-র মালিক কান্তা প্রসাদ কেঁদে ফেলেছিলেন ক্যামেরার সামনে। চোখের জল ফেলতে ফেলতে নিজের দুঃখের কথা বলা সেই ভিডিও বুধবার রাত থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করে। আর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সব কিছু যেন স্বপ্নের মতো।

রাতারাতি বদলে গিয়েছে দোকানের ছবিটা। সংবাদমাধ্যম থেকে স্থানীয় বিধায়ক– কত মানুষ এসেছেন। যাঁরা খাবার খেয়েছেন তাঁদের অনেকেই আবার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অন্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এবার বাড়ি বাড়ি রেস্তরাঁর খাবার পরিবেশনকারী সংস্থা জোমাটোও পাশে দাঁড়াল। সংস্থা জানিয়েছে, 'বাবা কি ধাবা' এবার জোমাটোর তালিকায় থাকবে। শুধু তাই নয়, ডেটিং অ্যাপ টিন্ডার ইন্ডিয়াও ডেট ডেস্টিনেশন হিসেবে 'বাবা কি ধাবা'-র নাম রেকমেন্ড করেছে।

উত্তর দিল্লির মালব্য নগরের শিবালিক কলোনি। এখনেই এক হনুমান মন্দিরের উল্টো দিকে রয়েছে 'বাবা কা ধাবা'। আশি বছরের কান্তা প্রসাদ স্ত্রী বাদামী দেবীকে নিয়ে এই দোকানটা চালান প্রায় ৩০ বছর ধরে। ভোর থেকে শুরু করেন রান্নাবান্না। সকাল সকাল তৈরি হয়ে যায় ডাল, ভাত, সবজি, পরোটা। মেনু খুব বেশি কিছু নয়। দামও কম। মোটামুটি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে খাওয়া যায় ছোট্ট এই দোকানে। আর সেই দোকান চালিয়ে সংসারও চলে যাচ্ছিল বৃদ্ধ-বৃদ্ধার। কিন্তু লকডাউন মুশকিলে ফেলে দেয়। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পরে চালু হলেও তেমন ক্রেতাই জুটছিল না।

সম্প্রতি গৌরব ভাসান নামে এক ফুড ব্লগার কান্তা প্রসাদের দোকানে আসেন এবং ভিডিয়ো করেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি বৃদ্ধ। বলেন, এখন সারাদিনে আয় খুব জোর ৫০ টাকা। দেখান, বাক্সে মাত্র কয়েকটা ১০ টাকার নোট। কাঁদতে কাঁদতে কথা বলার ভিডিয়োটাই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ সেই ভিডিয়োটি টুইটারে পোস্ট করেন বসুন্ধরা তনখা শর্মা নামে এক মহিলা। এর পরে সেটা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। শুক্রবার সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং হয়ে যায় ভিডিয়োটি।

আরও পড়ুন: কান্না থেকে হাসি, চোখের জল মুছিয়ে জিতল সোশ্যাল মিডিয়া

আরও পড়ুন: খেলতে খেলতে প্রাণ গেল তরুণীর, চাকায় চুল আটকে দুর্ঘটনা​

এর পরে ক্রীড়া থেকে সিনেমা-- বিভিন্ন জগতের সেলেবরাও শেয়ার করতে শুরু করেন অরেঞ্জ টি-শার্ট পরা কান্তা প্রসাদের সেই ভিডিয়ো। সেই তালিকায় রবিনা টন্ডন, রনদীপ হুদা, স্বরা ভাস্কর, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, সোনম কপূর, সুনীল শেট্টি-সহ অনেকে রয়েছেন। ভিডিয়োয় দেখা যায়, চোখের জল মুছতে মুছতে নিজের দুঃসময়ের কথা বলছেন কান্তা প্রসাদ। সেই ভিডিয়ো এতটাই ভাইরাল হয় যে সব কিছু বদলে যেতে থাকে। শুক্রবার সকাল থেকে দোকানে ভিড় লেগে যায়। 'বাবা কি ধাবা'-র নতুন নতুন ভিডিয়ো তৈরি হয়ে ঘুরতে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরই মধ্যে ধাবায় চলে আসেন দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির বিধায়ক সোমনাথ ভারতী। জানিয়ে গিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি এই দম্পতির জন্য কিছু করার উদ্যোগ নেবেন তিনি। সোমনাথ নিজেও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিল্লিবাসীকে 'বাবা কি ধাবা'-য় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তারপরে শুক্রবার রাতেই জোমাটোর ঘোষণা, তাদের ওয়েবসাইট থেকেও এখন 'বাবা কি ধাবা'-র খাবার অর্ডার করা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE