Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪
Sheila Dikshit

দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত প্রয়াত

এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের তরফে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করা হলেও, টুইটারে শোক প্রকাশ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।

শীলা দীক্ষিত। —ফাইল চিত্র।

শীলা দীক্ষিত। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ১৬:৩০
Share: Save:

দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেত্রী শীলা দীক্ষিত প্রয়াত। ৮১ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে সম্প্রতি দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। শনিবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানেই মারা যান শীলা।

দিল্লির যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন শীলা, সেখানকার চিকিৎসক অশোক শেঠ সংবাদমাধ্যমকে জানান, চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন দুপুর সওয়া তিনটে নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে। সেখানেই ৩টে ৫৫ মিনিটে নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

এ বছরের জানুয়ারিতে দিল্লি কংগ্রেসের দায়িত্ব গ্রহণ করেন শীলা দীক্ষিত। তাঁর মৃত্যুতে দলের তরফে শোকপ্রকাশ করা হয়। তাদের টুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘শীলা দীক্ষিতের প্রয়াণে আমরা শোকাহত। আজীবন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। তিন-তিন বার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে দিল্লির ভোলই পাল্টে দিয়েছিলেন। ওঁর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সমবেদনা জানাই।’

আরও পড়ুন: কেশরীনাথের জায়গায় বাংলায় আসছেন নয়া রাজ্যপাল জগদীপ, উত্তরপ্রদেশে আনন্দীবেন​

কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির নিজামুদ্দিনের বাসভবনেই শীলা দীক্ষিতের দেহ রাখা হবে, যাতে সেখানে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন সমর্থকরা। রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ নিগম বোধ ঘাটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। আগামী কাল জম্মু-কাশ্মীরে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের। শীলা দীক্ষিতের প্রয়াণের খবর পেয়ে সফর বাতিল করেছেন তিনিও।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটারে লেখেন, ‘শীলা দীক্ষিতজির প্রয়াণে শোকস্তব্ধ। প্রাণবন্ত এবং অমায়িক ব্যক্তিত্বের জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি। দিল্লির উন্নয়নে ওঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ওঁর পরিবার ও সমর্থকদের সমবেদনা জানাই।’

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ টুইটারে লেখেন, ‘ওঁর হাতেই দিল্লির ভোল পাল্টে যায়। এ জন্য চির দিন মানুষ ওঁকে মনে রাখবেন। ওঁর পরিবার এবং সহযোগীদের সমবেদনা জানাই।’

লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের দায় নিয়ে ইস্তফা দিলে রাহুল গাঁধীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন শীলা দীক্ষিত। আচমকা তাঁর প্রয়াণে প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেন রাহুল গাঁধীও। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘কংগ্রেসের স্নেহভাজন কন্যা, ব্যক্তিগত ভাবে যাঁর ঘনিষ্ঠ ছিলাম, সেই শীলা দীক্ষিতজির প্রয়াণে বিধ্বস্ত আমি। তিন দফায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে গিয়েছেন। ওঁর পরিবার এবং দিল্লিবাসীকে সমবেদনা জানাই।’

পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র ফেসবুকে লেখেন, ‘দিল্লি কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন এবং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের প্রয়াণে আমরা গভীর ভাবে শোকস্তব্ধ। এক মহান নেত্রীকে হারাল দেশ। তাঁর মৃত্যুতে শুধু কংগ্রেসের ক্ষতি হল তা নয়, উন্নয়নকামী মানুষ এক জন সহযোগী কারিগরকে হারালেন।’

১৯৯৮-২০১৩, লাগাতার তিন দফায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শীলা দীক্ষিত। তাঁকে পরাজিত করেই দিল্লির মসনদে আসেন আম আদমি পার্টি (আপ)-র অরবিন্দ কেজরীবাল। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘এইমাত্র শীলা দীক্ষিতজির চলে যাওয়ার খবর পেলাম। দিল্লির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। দিল্লির উন্নতিতে ওঁর অবদান চিরকাল মনে থাকবে। ওঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাই। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’

১৯৯৮ থেকে ২০১৩— দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিন দফায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শীলা দীক্ষিত। তাঁর আমলেই আমূল পাল্টে যায় রাজধানীর পরিকাঠামো। সড়ক এবং উড়ালপুল নির্মাণে বিশেষ গুরুত্ব দেন তিনি। রাশ টানেন পরিবেশ দূষণে। সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকেও সহজলভ্য করে তোলেন।

আরও পড়ুন: ২১ জুলাইয়ের ভিড়় সামলাতে ৫ হাজার পুলিশ, ব্যবস্থা খতিয়ে দেখলেন মমতা​

২০১৩ সালে অরবিন্দ কেজরীবালের কাছে পরাজিত হলে, পরের বছরই কেরলের রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেন শীলা দীক্ষিত। কিন্তু চার মাস পরই সেই পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এ বছর লোকসভা নির্বাচনেও উত্তর-পূর্ব দিল্লি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু বিজেপির মনোজ তিওয়ারির কাছে পরাজিত হন। তবে তা সত্ত্বেও হার মানেনি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা ইন্দিরা গাঁধী সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী উমাশঙ্কর দীক্ষিতের পুত্রবধূ শীলা দীক্ষিত। তাঁর ছেলে সন্দীপ দীক্ষিতও কংগ্রেস নেতা। বরাবরই গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। রাজীব গাঁধীর মন্ত্রিসভায় সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এমনকি রাষ্ট্রপুঞ্জের মহিলা কমিশনে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেছিলেন। শীলা দীক্ষিতের ছেলে সন্দীপ দীক্ষিতও কংগ্রেসের সদস্য। ইউপিএ-২ আমলে পূর্ব দিল্লি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE