Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনে লাভবান ক’জন? মিলছেই না হিসেব

বিজেপি তথা আরএসএস নেতাদের অঙ্ক, গোটা দেশে অন্তত এক থেকে দেড় কোটি শরণার্থী নাগরিকত্ব পাবেন।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১১
Share: Save:

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনের ফলে লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবেন।

বিজেপি তথা আরএসএস নেতাদের অঙ্ক, গোটা দেশে অন্তত এক থেকে দেড় কোটি শরণার্থী নাগরিকত্ব পাবেন। এই ‘হিন্দু’ তথা অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দিয়ে ভোটের বাক্সে তার সুফল কুড়োনো যাবে। মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর দাবি করেছেন, শুধুমাত্র মতুয়া সম্প্রদায়েরই ৭০ লক্ষ মানুষ বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মালদহ ও কোচবিহারে বসবাসকারী এই সব মানুষ নাগরিকত্ব পাবেন।

কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হিসেব, নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের সুবিধা পাবেন গোটা দেশে মাত্র ৩১,৩১৩ জন। যাঁদের মধ্যে ২৫,৪৪৭ জন হিন্দু। ৫,৮০৭ জন শিখ। খ্রিস্টান ৫৫ জন। ২ জন বৌদ্ধ। ২ জন পার্সি।

আরও পড়ুন: নয়া নাগরিকত্ব আইন সাভারকরের মতের বিরোধী: উদ্ধব

নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তানে ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, খ্রিস্টান ও পার্সি শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে মোদী সরকার। এই বিল নিয়ে আলোচনায় সময়ে ইন্টেলিজেন্স বুরো (আইবি)-র কাছে সংসদের যৌথ কমিটি জানতে চেয়েছিল, কত জন এর সুবিধা পাবেন। আইবি-র ডিরেক্টর জানান, তাঁদের রেকর্ড অনুযায়ী ওই তিন দেশের ৩১,৩১৩ জন ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন। যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেওয়া হয়েছে। সংখ্যাটা এত কম কি না, তা নিয়ে ডিরেক্টরের ব্যাখ্যা, আরও অনেকেই থাকতে পারেন যাঁরা এসেছেন। কিন্তু হয়তো তাঁরা নাগরিকত্ব, রেশন কার্ড, পাসপোর্ট পেয়ে গিয়েছেন।

যৌথ কমিটির সামনে মন্ত্রক জানায়, বাংলাদেশ থেকে এসে কোন রাজ্যে কত জন বাস করছেন, তার পরিসংখ্যান নেই। এই তথ্য রাখা খুব মুশকিল। কারণ তাঁরা আর নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চলে বসবাস করেন না।

তা হলে বিজেপি নেতৃত্ব ‘লক্ষ লক্ষ মানুষের’ সন্ধান পেলেন কী করে? বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, এখনও নাগরিকত্ব না-পাওয়া অনেকেই বাংলাদেশ থেকে আসার সময়ে জানাননি যে, তাঁরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে এসেছেন। এখন তাঁরা তা জানিয়ে নাগরিকত্বের আবেদন করবেন। যাঁরা ভারতে আসার সময় ধর্মীয় উৎপীড়নের কথা জানাননি, এখন জানালে কি তা মেনে নেওয়া হবে? কী করে তা প্রমাণ হবে? যৌথ কমিটিও আইবি-র কাছে সেই প্রশ্ন তুলেছিল। কমিটির রিপোর্ট বলছে, আইবি-র ডিরেক্টর জানান, নাগরিকত্বের আর্জি জানাতে তাঁদের ধর্মীয় উৎপীড়নের প্রমাণ দিতে হবে। আসার সময়ে এ কথা না-বললে এখন তা প্রমাণ করা কঠিন হবে। এমন দাবি উঠলে তা গুপ্তচর সংস্থা র’-সহ অন্যান্য সংস্থা তদন্ত করে দেখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE