অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
‘বিটলস্’-এর অনেক গানই তাঁর কণ্ঠস্থ। নিজে একটি ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট। তাঁর তৈরি করা মিনিট চারেকের একটি গান (লিপ সার্ভিস) গত দু’বছর ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। জন লেননের ভক্ত, আমেরিকার বিদেশসচিব পদে নির্বাচিত এই অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকেই আবার দেখা গিয়েছে, গোটা বিশ্বের উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে বারবার সরব হতে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকাই প্রথম’ নীতি থেকে বাইডেন সরকার কতটা সরে আসবে, তা এখনই স্পষ্ট নয়। কিন্তু তাঁর নতুন জুড়িদার ব্লিঙ্কেন যে অবশ্যই উদ্বাস্তু অধিকারের হয়ে গলা তুলবেন তা এখনই স্পষ্ট। ভবিষ্যতে মোদী সরকারের কাশ্মীর নীতি অথবা অনুপ্রবেশ তত্ত্ব নিয়েও তাঁকে কঠোর ভূমিকায় দেখা যাবে বলে মনেই করেছেন কূটনৈতিক শিবির।
কয়েক মাস আগেই আমেরিকায় যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে প্রচার তুঙ্গে, ব্লিঙ্কেন তখন হাডসন ইনস্টিটিউট-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “মোদী সরকারের বেশ কিছু পদক্ষেপ প্রকৃত উদ্বেগ তৈরি করেছে। কাশ্মীরে বাক্স্বাধীনতা, গতিবিধির অধিকার— সমস্ত ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। নাগরিকত্ব সংক্রান্ত কিছু আইনও উদ্বেগের।” নিঃসন্দেহে তাঁর এই মন্তব্য চিন্তায় রেখেছে সাউথ ব্লককে। পাশাপাশি তিনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, চিনের সঙ্গে সমস্ত রকম সংযোগ ছিন্ন করে ফেলা একেবারেই অবাস্তব ঘটনা। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগেই সে দেশের বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো ভারতে এসে চিনের উদ্দেশ্যে তোপ দেগেছিলেন। তার আগে আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের বৈঠকেও একই ভাবে সরব হয়েছিল ওয়াশিংটন। বাইডেন-ব্লিঙ্কেন জুটি আসার পর এই কথার তোড় কমবে বলেই মনে করছে নয়াদিল্লি। কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের অবস্থান আগাম ব্যাখ্যা করার জন্য আমেরিকার ডেমোক্র্যাট নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই দৌত্য শুরু করা হয়েছে। আবার কাশ্মীরে সন্ত্রাস পাচার করার প্রশ্নে পাকিস্তান সরকারের ভূমিকা নিয়েও পি-৫ দেশগুলির রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বিশেষ ভাবে দৌত্য শুরু করেছে সাউথ ব্লক।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় সার্কভুক্ত দেশগুলির (পাকিস্তান বাদে) কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি ধোয়ামোছা করে তকতকে করে তোলার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে মোদী সরকার। সে কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সার্বিক দৌত্য চলছে শীর্ষ স্তরে। নেপালে গিয়েছেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। একই ভাবে মলদ্বীপ, ভুটান, মায়ানমারের মতো দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো, অতিমারি মোকাবিলায় দরাজহস্ত হওয়া, টিকা সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রতিবেশীদের কাছে উদার নীতি নেওয়ার কথা বারবার বলছে নয়াদিল্লি। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আমেরিকার সঙ্গে দর কষাকষির প্রশ্নে নিজেদের ভূকৌশলগত গুরুত্ব বাড়িয়ে রাখতে তৎপর ভারত। বাইডেন-ব্লিঙ্কেনের কার্যভার গ্রহণ করার আগেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy