Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ভারত-রুশ উদ্যোগে তৈরি ব্রহ্মস বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী ক্রুজ মিসাইল!

পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগামী ক্রুজ মিসাইল এখন ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে। ব্রহ্মস— ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ক্রুজ মিসাইলের গতি চিন্তায় রাখছে ন্যাটো বাহিনীকেও। এমন সাংঘাতিক বেগে টার্গেটের দিকে ছুটে যায় ব্রহ্মস যে রেডার তার আভাস মিললেও ব্রহ্মসকে মাঝ পথে রুখে দেওয়া কঠিন।

ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস রাজপুত থেকে ছোঁড়া হয়েছে ব্রহ্মস।

ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস রাজপুত থেকে ছোঁড়া হয়েছে ব্রহ্মস।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১৯:৩১
Share: Save:

পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগামী ক্রুজ মিসাইল এখন ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে। ব্রহ্মস— ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ক্রুজ মিসাইলের গতি চিন্তায় রাখছে ন্যাটো বাহিনীকেও। এমন সাংঘাতিক বেগে টার্গেটের দিকে ছুটে যায় ব্রহ্মস যে রেডার তার আভাস মিললেও ব্রহ্মসকে মাঝ পথে রুখে দেওয়া কঠিন। ইরাক এবং আফগানিস্তানের যুদ্ধক্ষেত্রে আগুন ঝরিয়েছে যে মার্কিন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, সেই টোমাহক মিসাইলকেও গতিবেগে বহু পিছনে ফেলে দিয়েছে ব্রহ্মস।

১৯৮৭ সালে মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম (এমটিসিআর) নামে একটি সংগঠন তৈরি হয়। ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে সেই সময়ে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল যে সব দেশ, তারাই এই সংগঠন গড়ে তোলে। ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি বিভিন্ন দেশের হাতে ছড়িয়ে পড়া রুখতেই ওই সংগঠনের জন্ম। ভারত সে সময় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা শুরু করে দিলেও, খুব একটা অগ্রগতি তখনও হয়নি। তাই ভারতকে এমটিসিআর-এর সদস্য হতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু গত দেড় দশকে মিসাইল টেকনোলজিতে ভারতের এত দ্রুত উত্থান ঘটেছে যে এমটিসিআর-এর সদস্য দেশগুলির অনেকের থেকেই এগিয়ে গিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির অস্ত্রাগের এত রকমের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে এবং সেগুলির বৈশিষ্ট্য এতই বিধ্বংসী যে আমেরিকা, চিন, রাশিয়া ছাড়া অন্য যে কোনও দেশের পক্ষে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রের অনেকগুলির সঙ্গেই এঁটে ওঠা মুশকিল। ভারতের ব্রহ্মস কিন্তু আমেরিকা এবং চিনকেও টেক্কা দিয়ে দিয়েছে। পৃথিবীতে যত রকমের ক্রুজ মিসাইল রয়েছে, তার মধ্যে ব্রহ্মস সবচেয়ে দ্রুতগামী।

আমেরিকার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র টোমাহক এক সময় গোটা পৃথিবীর সম্ভ্রম আদায় করে নিয়েছিল। ইরাকে সাদ্দাম জমানার বিরুদ্ধে মার্কিন হামলা বা আফগানিস্তানে তালিবান শাসন হঠানোর লড়াই— সব যুদ্ধক্ষেত্রেই মার্কিন বাহিনীর অন্যতম বড় ভরসা ছিল টোমাহক ক্রুজ মিসাইল। ভারত ও রাশিয়া যৌথভাবে ব্রহ্মস তৈরি করে ফেলার পর গোটা বিশ্বের সমর বিশারদদের নজর কেড়ে নিয়েছে এই ক্রুজ মিসাইল। আমেরিকার টোমাহকের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯০ কিলোমিটার। ভারত-রাশিয়ার ব্রহ্মসের বেগ তার চার গুণ। ব্রহ্মস ঘণ্টায় ৩৭০০ কিলোমিটার বেগে ছুটে গিয়ে আঘাত হানে লক্ষ্যবস্তুতে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের নিশানাও নিখুঁত।

আরও পড়ুন:

কাবুলকে ‘উড়ন্ত ট্যাঙ্ক’ দিয়েছে দিল্লি, বিপদের মেঘ দেখছে পাকিস্তান

রাশিয়া নিজেদের বাহিনীর জন্য বহ্মসের যে সংস্করণ বানিয়েছে, তার পাল্লা কম রাখা হয়েছে। তবে ভারত ব্রহ্মসের পাল্লা বাড়িয়ে সেটিকে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে তৈরি করেছে। ব্রহ্মসের ভূমি এবং জাহাজ থেকে উৎক্ষেপণ যোগ্য দু’টি সংস্করণ ইতিমধ্যেই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যুদ্ধবিমান এবং সামবেরিন থেকে ছোঁড়া যায়, এমন দু’টি সংস্করণও তৈরি। সেগুলি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১৭ সালের বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে। ভারতকে নিয়ে খুব আশঙ্কা নেই ন্যাটোর। কারণ ন্যাটো-ভুক্ত দেশগুলির অধিকাংশের সঙ্গেই ভারতের সম্পর্ক এখন বন্ধুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্রহ্মস তৈরিতে ভারতের অংশীদার যে দেশ, সেই রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটো গোষ্ঠীর রেষারেষি সুবিদিত। ব্রহ্মসের মতো সর্বোচ্চ গতির ক্রুজ মিসাইল রাশিয়ার হাতেও থাকায় নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বেড়েছে ন্যাটোর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE