Advertisement
E-Paper

‘আটক’ বিধায়ক ফেরাতে শাহকেই চিঠি কমল নাথের

রাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলের দাবি, তাঁর দলের ২২ জন বিধায়ককে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০৩:৫২
কমল নাথ ও অমিত শাহ।

কমল নাথ ও অমিত শাহ।

অমিত শাহের বিজেপি মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের সরকার ফেলতে মরিয়া। গদি বাঁচাতে সেই অমিত শাহকেই চিঠি লিখলেন কমল নাথ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলের দাবি, তাঁর দলের ২২ জন বিধায়ককে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে। বিজেপির নেতারাই এ কাজ করেছেন। তাঁরা যাতে নির্ভয়ে ভোপালে ফিরে এসে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে পারেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার ব্যবস্থা করুন।

বিজেপির শিবিরে চলে যাওয়া ‘বিক্ষুব্ধ’ কংগ্রেস বিধায়কেরা শুধু ভোপালে ফিরলেই তো হবে না। তাঁদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে আবার নিজের দিকে টেনে আনতেও হবে!। তার জন্য সময় চাই। হাতে সেই সময় রাখতে করোনাভাইরাস সতর্কতাকে কাজে লাগাতে চাইছেন কমল নাথ।

মধ্যপ্রদেশের বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা সোমবার। রাজ্যপাল লালজি টন্ডনের নির্দেশ, সে দিন তাঁর বক্তৃতার পরেই গরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথকে। কিন্তু কমল নাথ আজ, রবিবার সকালে রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে করোনাভাইরাসের জন্য বিধানসভার অধিবেশন ২৬ মার্চ পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব নেওয়া হতে পারে। তারপর সেই প্রস্তাব পাঠানো হবে বিধানসভার স্পিকারের কাছে। এখানেও নরেন্দ্র মোদী সরকারের নির্দেশিকাকেই অস্ত্র করছেন কমল। তাঁর সরকারের মন্ত্রী পি সি শর্মার যুক্তি, কেন্দ্রই তো বলেছে এক স্থানে অনেকের জমায়েত বিপজ্জনক। অধিবেশনের সময়ে সেখানে রাজ্যের বহু মানুষ সেখানে জড়ো হবেন। এতে বিপদ থেকেই যাবে।

আরও এক ধাপ এগিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে ২২ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক ভোপালে ফিরলে তাঁদের শরীরে করোনাভাইরাস খুঁজতে সব রকম পরীক্ষা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে কমল নাথের স্বাস্থ্য দফতর। কারণ মধ্যপ্রদেশে করোনাভাইরাসে কেউ আক্রান্ত না হলেও কর্নাটকে করোনাভাইরাস ভালই ছড়িয়েছে। জ্যোতিরাদিত্যের ঘনিষ্ঠ ছ’জন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার পর রাজ্যের নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তরুণ ভানোট করোনাভাইরাস মোকাবিলা নিয়ে বৈঠকেও সেরেছেন। তাঁর যুক্তি, মধ্যপ্রদেশে এক জনও রোগী মেলেনি বটে। কিন্তু সাবধানের মার নেই।

বিজেপির আশঙ্কা, ওই ২২ জন বিধায়ককে কোয়ারেন্টাইন বা আলাদা করে রাখা হতে পারে। যাতে তাঁরা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে বিধানসভাতেই যেতে না পারেন। বিপদের গন্ধ পেয়ে বিজেপি নেতা শিবরাজ সিংহ চৌহান শনিবারই রাজ্যপাল লালজি টন্ডনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর যুক্তি, কমল নাথ সরকার ইতিমধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। তাই সে সরকারের বাজেট অধিবেশন ডাকা বা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই। তাই রাজ্যপাল নিজের বিশেষ ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বিধানসভায় সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ভোটাভুটির নির্দেশ দিন।

বিজেপি শিবিরের অভিযোগ, শুক্রবার ওই ২২ জন বিধায়কের পরিবারের সদস্যদের মুখ্যমন্ত্রীর বাংলোয় ডেকে নানা ভাবে ভয় ও লোভ দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। কমল শিবিরে থাকলে মন্ত্রিত্ব বা অন্য সরকারি পদের প্রস্তাব দিয়েছে কংগ্রেস। ভয় দেখাতে বলা হয়েছে, বিধানসভায় তাঁরা অনেকেই সামান্য ব্যবধানে জিতেছিলেন। এখন পদত্যাগ করে বিজেপির টিকিটে লড়লে তাঁরা জিততে না-ও পারেন। কারণ কংগ্রেস সে ক্ষেত্রে বিজেপিতে যিনি টিকিট পাবেন না, তাঁকে প্রার্থী করে দেবে। ফলে এ কূল, ও কূল, দুই-ই যাবে। শুক্রবার কংগ্রেস বিধায়কেরা ভোপালে ফিরলে তাঁদেরও তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বাংলোয় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও শিবরাজ সিংহ চৌহান বিপদের গন্ধ পাওয়ায় সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি।

মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ আজ অমিত শাহকে চিঠি লিখে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন, বিজেপি নেতারাই ৩ মার্চ তাঁর দলের তিন জন বিধায়ক, সরকারের সমর্থনকারী বিএসপি বিধায়ক ও এক নির্দল বিধায়ককে মানেসরে নিয়ে যান। তার পর তাঁদের বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৬ মার্চ তিনটি চার্টার্ড বিমানে করে আরও ১৯ জন বিধায়ককে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিমানের যাত্রিতালিকা থেকেই স্পষ্ট, বিজেপি নেতারাই নাটের গুরু। অতএব দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অমিত শাহ বিধায়কদের নির্ভয়ে রাজ্যে ফেরার ব্যবস্থা করুন।

কংগ্রেস নেতারা আজ মধ্যপ্রদেশের নালখেড়ায় সুবিখ্যাত বগলামুখী মন্দিরে ‘শত্রু বিনাশক’ যজ্ঞ করেছেন। ভেলকি হোক বা তুকতাক, গদি বাঁচানো নিয়ে কথা!

Madhya Pradesh Kamal Nath Amit Shah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy