Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
জোর যার /৩

সাংসদ-রক্ষীদের অপহরণ, পাল্টা চাপ গ্রামসভার

পাল্টা চাপ দিতে লোকসভার প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার ও বিজেপি সাংসদ কাড়িয়া মুণ্ডার তিন দেহরক্ষীকে তুলে নিয়ে গেল পথল্লগড়ি আন্দোলনের সমর্থকেরা। আজ দুপুরে খুঁটি জেলার আন্নাগড়া গ্রামে সাংসদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। চারটি ইনস্যাস রাইফেলের খোঁজ মিলছে না বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দিবাকর রায়
খুঁটি শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

পাঁচ আদিবাসী তরুণীর গণধর্ষণের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে যুক্ত থাকার অভিযোগে নিয়মিত পুলিশি অভিযান হচ্ছে পথল্লগড়ি নেতাদের বাড়িতে। পাল্টা চাপ দিতে লোকসভার প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার ও বিজেপি সাংসদ কাড়িয়া মুণ্ডার তিন দেহরক্ষীকে তুলে নিয়ে গেল পথল্লগড়ি আন্দোলনের সমর্থকেরা। আজ দুপুরে খুঁটি জেলার আন্নাগড়া গ্রামে সাংসদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। চারটি ইনস্যাস রাইফেলের খোঁজ মিলছে না বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

আন্দোলনকারীদের এমন কাণ্ডে রীতিমতো হতচকিত রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন। তড়িঘড়ি খুঁটি জেলা সদরে বৈঠক করেছে তারা। তবে পিছপা হতে রাজি নন পথল্লগড়ি আন্দোলনের নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘বদনাম করার জন্যই গণধর্ষণের অভিযোগে আমাদের জড়ানো হয়েছে।’’ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ইউসুফ পুর্তি এ দিন বলেন, ‘‘আদিবাসীদের ওপরে অত্যাচার করা হচ্ছে। জেলে পাঠানো হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে মাওবাদীদের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। আন্দোলন নিয়ে সরকারের মনোভাব না পাল্টানো পর্যন্ত ওই তিন জওয়ানকে গ্রামসভার হেফাজতে রাখা হবে। সে কারণেই গ্রামসভা ওই তিন জওয়ানকে নিয়ে এসেছে।’’ তাঁদের ঘাঘড়া গ্রামসভার হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজ শিক্ষক ইউসুফ। পুলিশ জানিয়েছে, অপহৃত জওয়ানদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। জন কিডু, ইউসুফ পুর্তি-সহ ন’জন নেতাকে ধর্ষণের ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনাকারী বলে মনে করছে পুলিশ। নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতেই পথল্লগড়ি নেতারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তাদের ধারণা।

গ্রামসভার পাল্টা দাবি, পাঁচ আদিবাসী তরুণীর গণধর্ষণকে কাজে লাগিয়ে আদিবাসীদের অধিকারের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখছে পুলিশ- প্রশাসন। পথল্লগড়ি আন্দোলনের অন্যতম নেতা সুখরাম মুন্ডা এবং দয়াল কাণ্ডের এ দিন হাজির ছিলেন ধর্ষণের ঘটনাস্থল কোচাং গ্রামেই। ষড়যন্ত্রকারীদের তালিকায় তাঁদের নাম রয়েছে। পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে তাঁদের। গ্রামের বাজার এলাকায় কয়েকশো সমর্থক নিয়ে ঘুরছিলেন দুই নেতা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘গণধর্ষণ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাতে আন্দোলনকারীরা জড়িত নন। কারা করেছে তা স্পষ্ট নয়। পুলিশও এমন ঘটাতে পারে।’’ তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে প্রায় ৫০০ আদিবাসীকে মাওবাদী বলে আত্মসমর্পণ করানোর অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, অন্যায় ঢাকতে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন ওই নেতারা।

গত কাল রাতে আন্দোলনকারীদের নেতা ইউসুফ পুর্তির উর্দগুরু গ্রামের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। বাড়িতে থাকা সমস্ত বই এবং জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। অভিযানে রাজ্য পুলিশ এবং সিআরপিএফের দু’শো জওয়ান ছিলেন। তবে ইউসুফ বাড়ি থেকে পালান। এ দিনই কোচাং গ্রামের মতো খুঁটি জেলা সদর লাগোয়া ঘাঘড়া, হুদাডিহ এবং মতগড়া গ্রামে বিক্ষোভ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আদিবাসী গ্রামসভা। সে সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ আন্দোলনকারীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে হটিয়ে দেয়। এরপরেই তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সাংসদের দেহরক্ষীদের।

(চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE