Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
LAC

লাদাখ উস্কে দিচ্ছে ইন্দো-চিনের ৪৫ বছর আগের স্মৃতি

এ বারের সংঘর্ষে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল মাসখানেক আগে থেকেই।

সেই বুলেটের ক্ষত দেখাচ্ছেন তাপির সামচুং। —নিজস্ব চিত্র

সেই বুলেটের ক্ষত দেখাচ্ছেন তাপির সামচুং। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৫:২৪
Share: Save:

সোমবার রাতে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২০ জন সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা উস্কে দিচ্ছে ৪৫ বছর আগের আর একটি একটি রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের স্মৃতি। ১৯৭৫ সালের ২০ অক্টোবর অরুণাচল প্রদেশের টুলুং লা এলাকায় অসম রাইফেলসের টহলদার বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে চার জওয়ানকে মেরেছিল চিনা সেনা। তার পর থেকে ভারত-চিনের মধ্যে লাদাখে এই প্রথম লড়াই, যেখানে সেনাবাহিনীর কেউ নিহত হলেন।

এ বারের সংঘর্ষে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল মাসখানেক আগে থেকেই। কিন্তু ১৯৭৫ সালে অরুণাচলের সেই লড়াইয়ের আগে উত্তেজনার কোনও ইঙ্গিতই ছিল না। এমনকি, অরুণাচলের তাওয়াং জেলার দুর্গম পাহাড়ি গ্রাম মাগোতে অসম রাইফেলসের জওয়ানদের উপর চিনা সেনারা যে গুলি চালিয়েছিল, সেই ঘটনা জানতেই পারেননি স্থানীয় মানুষ। ওই এলাকায় জনবসতি ছিল না। উদ্ভিদ না জন্মানোয় পশুপালকেরাও আসতেন না। বিষয়টি তখনই সামনে আসেনি। ঘটনার ১৫ দিন পরে ভারতীয় সেনা চিনা আক্রমণ নিয়ে প্রথমবার মুখ খোলে।

১৯৭৫ সালের ২০ অক্টোবরের সকালে রোজকার মতোই টহল দিতে বেরিয়েছিলেন অসম রাইফেলসের জওয়ানেরা। টহলের রাস্তার শেষ গ্রাম মাগো ছাড়িয়ে টুলুং লা-র দিকে পৌঁছেছিলেন তাঁরা। কৌশলগত কারণে এলাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই সময়ে চিনা বাহিনী সবার অলক্ষ্যে সুবিধাজনক অবস্থানে ওৎ পেতে ছিল।

আরও পড়ুন: মোদীর ‘দোলনা নীতি’ নিয়ে প্রশ্ন বিরোধীর

আরও পড়ুন: রাতের সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত, চিনের তরফেও হতাহত ৪৩

অসম রাইফেলসের টহলদারি বাহিনীর উপর অতর্কিতে আক্রমণ হলে প্রাণ হারান চার জওয়ান। কিন্তু ময়দান ছাড়েননি ২৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের সদস্যেরা। পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করেন তাঁরা। ফলে চিনা বাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে নিজেদের ভূখণ্ডে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পুরনো সংঘাত

• ১৯৫৯: ২১ অক্টোবর কঙ্গকা পাসের কাছে চিনা সেনার সঙ্গে লড়াইয়ে ভারতীয় বাহিনীর ৯ জওয়ান নিহত।
• ১৯৬২: চিন-ভারত যুদ্ধ
• ১৯৬৭ সালে সিকিমের নাথু লা এবং চো লা-য় অনুপ্রবেশকারী লাল ফৌজকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে এলাকা ছাড়া করেছিল ভারতীয় সেনা।
• ১৯৭৫: অরুণাচল প্রদেশের টুলুং লা এলাকায় অসম রাইফেলসের টহলদার বাহিনীর উপরে হামলা চালিয়ে চার জওয়ানকে মেরেছিল
চিনা সেনা। তার পর
থেকে এই প্রথম লড়াই, যেখানে সেনাবাহিনীর কেউ নিহত হলেন।
• ২০১৭: ভারত-ভুটান-চিন সীমান্তের ডোকলামে ৭৩ দিন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিল দু’দেশের সেনা।

তার পর থেকে অবশ্য তাওয়াং সেক্টরে পরিস্থিতি অনেক বদলে গিয়েছে। প্রতি বছর ভারতের স্বাধীনতা দিবস ও চিনের জাতীয় দিবস পালিত হয় সেখানে। সীমান্ত বৈঠকের পরে থাকে নাচগান, খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও। অংশ নেন দু’দেশের আমজনতাও। ডোকলামের ঘটনার পরে এই ধরনের বৈঠক বন্ধ ছিল। কিন্তু গত বছর থেকে ফের তা চালু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

LAC India China Ladakh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE