Advertisement
E-Paper

আজহার ‘জি’-তে হইচই, পুরনো অস্ত্র ফেরাতে গিয়ে বিতর্কে রাহুল

প্রশ্ন করে থামতেই স্টেডিয়ামের কংগ্রেসের কিছু কর্মী বলতে শুরু করলেন, ‘‘চৌকিদার, চৌকিদার।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৬
দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে বুথ কর্মীদের সঙ্গে সম্মেলনে রাহুল গাঁধী। সোমবার। পিটিআই

দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে বুথ কর্মীদের সঙ্গে সম্মেলনে রাহুল গাঁধী। সোমবার। পিটিআই

পুলওয়ামার বাসে কে বোমা ফাটাল?

জবাবটা রাহুল গাঁধী নিজেই দিচ্ছিলেন। প্রশ্ন করে থামতেই স্টেডিয়ামের কংগ্রেসের কিছু কর্মী বলতে শুরু করলেন, ‘‘চৌকিদার, চৌকিদার।’’

রাহুল তাঁদের থামিয়ে বললেন, ‘‘না, শুনুন। বোমা ফাটিয়েছে জইশ-ই-মহম্মদ। মাসুদ আজহার। কিন্তু এই ৫৬ ইঞ্চি ছাতিওয়ালার মনে থাকবে, তাঁর আগের সরকারে কী হয়েছিল। আজকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মাসুদ আজহার‘জি’কে বিমানে কন্দহরে ছেড়ে এসেছিলেন।’’

সদ্য গতকালই ভোট ঘোষণা হয়েছে। পুলওয়ামার ঘটনার পর সার্জিকাল স্ট্রাইককে পুঁজি করে নরেন্দ্র মোদী আগে থেকেই জাতীয়তাবাদের তাস খেলছেন। মোদীর সেই প্রচার ভোঁতা করে রাফাল, বেকারত্ব, কৃষি সঙ্কটের বিষয়গুলি ফিরিয়ে আনতে আক্রমণাত্মক হচ্ছিলেন রাহুল গাঁধী। দিল্লিতে বুথ কর্মীদের সম্মেলনে। ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে।

শুরুতেই তাই তাতিয়ে দিয়েছিলেন কর্মীদের। বললেন, ‘‘রাস্তায় হাঁটার সময় কারও কানে ফিসফিস করে বলে দেখুন না— চৌকিদার। উত্তর পাবেন ‘চোর হ্যায়’। চেঁচিয়ে বলুন কিংবা মোলায়েম স্বরে। সবসময় উত্তর পাবেন ‘চোর হ্যায়। এটাই কংগ্রেস কর্মীদের কামাল। দেশের কোণায় কোণায় পৌঁছে দিয়েছেন স্লোগানটিকে।’’ গোটা স্টেডিয়াম তখন গমগম করছে, ‘‘চৌকিদার চোর হ্যায়।’’

দিল্লিতে তখন অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, অরুণ জেটলির সঙ্গে আলাদা আলাদা ভোটের বৈঠক হচ্ছিল। রাহুলের মুখে ‘মাসুদ আজহারজি’ শুনে ঝাঁপিয়ে পড়ল গোটা বিজেপি। রবিশঙ্কর প্রসাদ থেকে স্মৃতি ইরানিরা বললেন, ‘‘রাহুলের মনের কথা মুখে এসেছে। এটি মুখ ফস্কে করা মন্তব্য নয়। এর পিছনে ছক আছে। ঠিক যে ভাবে আগেও রাহুল গাঁধীর ‘গুরু’ দিগ্বিজয় সিংহ লাদেনকে ‘ওসামাজি’ বলেছেন, হাফিজ সইদকে ‘সাহেব’ বলা হত।’’


আরও পড়ুন: শুক্রবার থেকেই রাজ্যে নামছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বললেন, ‘‘রাহুল গাঁধীর কটাক্ষও বোঝার ক্ষমতা নেই বিজেপির। মাসুদ আজহারকে সম্মান দিয়ে নিয়ে গেছেন তো ডোভালই। আইএসআইকে এ দেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তো নরেন্দ্র মোদীই।’’ কন্দহর-কাণ্ডের সূত্রে বিজেপিকে ‘ভাজপা জইশ প্রেমী’ বলে অভিহিত করে পাল্টা প্রচারেও নামতে চলেছে কংগ্রেস।

আসলে বিজেপি নেতৃত্ব যেমন জাতীয়তাবাদেই রাহুল ও বিরোধীদের বেঁধে রাখার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন, তেমন রাহুলও পণ করেছেন, যে কোনও মূল্যে পুরনো বিষয়গুলিতে ফিরে আসতেই হবে। সে কারণে আজ পরতে পরতে বিঁধলেন মোদীকে। বললেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে ৫৬ ইঞ্চি ছাতির মুখে শুনতেন, চৌকিদার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে এসেছেন। আর তাঁর ১০-১৫ জন লোক চেঁচাতেন, মোদী-মোদী-মোদী। নরেন্দ্র মোদী বলতেন, ‘অচ্ছে দিন’, লোক বলত ‘আয়েঙ্গে’। মোদী বলতেন, ‘কংগ্রেস-মুক্ত’ ভারত গড়বেন। এখন সংসদে চোখে চোখ মেলান না, বুক চিতিয়ে না দাঁড়িয়ে ঝুঁকে কথা বলেন। আর নেহরু-গাঁধী নিয়ে বলেন, অনিল অম্বানী নিয়ে বলেন না। রাফাল নিয়ে বলেন না।’’

শুধু তাই নয়, চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দোলনায় চড়ার প্রসঙ্গ টেনে রাহুল বললেন, যখন নরেন্দ্র মোদী দোলনায় দুলছেন, তখনই ডোকলাম হল। চিনা রাষ্ট্রপতি নরেন্দ্র মোদীকে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি বুঝে গিয়েছেন, মোদীর দম নেই। তিনি দুর্বল, ভীতু।’’ আরএসএসকেও ছাড়লেন না। মোদী এবং আরএসএস ঘৃণা ছড়াচ্ছেন, অভিযোগ করে কংগ্রেস সভাপতির প্রশ্ন, ‘‘গাঁধীর ভারত চান, না গডসের?’’

Rahul Gandhi Masood Azhar JeM Congress BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy