প্রতীকী ছবি।
আর বার, বিয়ার পাব বা রেস্তরাঁয় গিয়ে মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে না। অর্ডার দিলে যে ভাবে খাবারদাবার, আনাজপাতি ও মণিহারি জিনিসপত্র দিয়ে যায়, এ বার সেই ভাবেই বাড়িতে বাড়িতে মদের হোম ডেলিভারি শুরু করার কথা ভাবছে মহারাষ্ট্র সরকার। চালু হলে, এটা নজিরবিহীন ঘটনা হবে দেশে।
মহারাষ্ট্রের আবগারি মন্ত্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘এর উদ্দেশ্য একটাই। মদ খেয়ে রাজ্যে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে আর তাতে বাড়ছে মৃত্যুর হার, তাতে মদের হোম ডেলিভারি শুরু করার কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলির মাধ্যমেই অর্ডার দেওয়া যাবে।’’ সে ক্ষেত্রে ২১ বছর বয়সীরা অর্ডার দিলে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে বিয়ার। আর বয়স ২৫ বছর বা তার বেশি হলে যাঁরা অর্ডার দিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে দেশি ও বিদেশি ব্র্যান্ডের মদ পৌঁছে যাবে।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ২০১৫ সালে যে ৪ লক্ষ ৬৪ হাজার পথ দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তার দেড় শতাংশই ঘটেছিল মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর জন্য। পুলিশের পরিভাষায় যা, ‘ড্রাগ ড্রাইভিং’। যাতে মৃতের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৮৮। গুরুতর জখম হয়েছিলেন ৬ হাজার ২৯৫ জন। যার অর্থ, ওই বছর মদ খেয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে দিনে গড়ে ৮ জনেরও বেশি পথ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- সরছেন আকবর? বিমানবন্দরে নামতেই পদত্যাগ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে
আরও পড়ুন- পরপর দু’দিন মদ খেলে বাড়িতে হানা মহিলাদের
মহারাষ্ট্রের আবগারি মন্ত্রী জানিয়েছেন, অনলাইন বা টেলিফোনে মদের অর্ডার দেওয়ার সময় দোকান বা ডিলারদের অনেক কিছু জানাতে হবে। বয়সটা জানানো আবশ্যিক। আর তার প্রমাণ হিসেবে পাঠাতে হবে আধার কার্ডের ছবি ও নম্বর। তার ফলে, কোথায় মদের ডেলিভারি দেওয়া হল, কাকে দেওয়া হল, তার সব কিছু রেকর্ডে থাকবে।
আবগারি মন্ত্রী বাওয়ানকুলের কথায়, ‘‘যেখান থেকে ও যেখানে মদের ডেলিভারি হবে, সেই গোটা পথের ওপর থাকবে সরকারি নজরদারি। যাতে পাচার বা চোরাচালান না হয়। কেউ সেই মদের বোতলের সিল ভাঙতে না পারে। তার জন্য মদের বোতলের মুখে একটা বিশেষ ধরনের ট্যাগিং থাকবে।
মহারাষ্ট্র সরকারের এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে আইনজীবী মহলের একাংশ। বোম্বে হাইকোর্টের আইনজীবী শ্রীরং ভান্ডারকর বলছেন, ‘‘এটা শুধুই পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাবে, তা নয়; বহু লোকের চাকরিও হবে। যাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মদের ডেলিভারি দেবেন।’’
তবে সরকারি এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করতে পারেননি সমাজকর্মী পারমিতা গোস্বামী। তাঁর কথায়, ‘‘এটা অসাংবিধানিক। এতে মদের প্রতি আসক্তি বাড়বে বই কমবে না। সরকার আরও এক বার ভাবুক, পরিকল্পনার বাস্তবায়নের আগে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy