Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Economy

সরকার ধার করুক, দাওয়াই মনমোহনের

লকডাউনের ধাক্কা থেকে অর্থনীতিকে উদ্ধার করতে মোদী সরকার ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেও তাতে মূলত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে শিল্পসংস্থা ও ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণের বন্দোবস্ত হয়েছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২০ ০৬:৫৭
Share: Save:

অর্থনীতির ভাঙন রুখতে তিন দাওয়াই বাতলালেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁর মতে, প্রথমত, জীবন ও জীবিকা বাঁচাতে এবং খরচের ক্ষমতা বাড়াতে আমজনতার হাতে যথেষ্ট পরিমাণে নগদ টাকা তুলে দেওয়া হোক। দ্বিতীয়ত, ব্যবসার জন্য পুঁজির জোগান নিশ্চিত করা হোক। তৃতীয়ত, আর্থিক ক্ষেত্রকে স্বাধীন ভাবে চলতে দেওয়া হোক।

লকডাউনের ধাক্কা থেকে অর্থনীতিকে উদ্ধার করতে মোদী সরকার ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেও তাতে মূলত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে শিল্পসংস্থা ও ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণের বন্দোবস্ত হয়েছে। কিন্তু গরিব মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়নি। আজ বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনমোহন বলেছেন, সরকার প্রয়োজনে বাড়তি ধার করে মানুষের হাতে টাকা তুলে দিক, ব্যবসার জন্য পুঁজি জোগাক। মোদী সরকার যে এখন একই সঙ্গে করোনার মোকাবিলা, আর্থিক সঙ্কট, চিনের আগ্রাসনের মুখোমুখি, সে দিকে ইঙ্গিত করে পরামর্শ, “আর্থিক সঙ্কট, স্বাস্থ্য ও সামরিক প্রয়োজনে যদি জিডিপি-র অতিরিক্ত ১০ শতাংশও খরচ করতে হয়, তা হলে করা উচিত।”

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অনেকেই বলেছেন, প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়ে সরকার অর্থনীতিতে ঢালুক। এর প্রয়োজন উড়িয়ে না দিলেও মনমোহনের মতে, আর উপায় না-থাকলে তবেই এই পথে হাঁটা উচিত। তিনি বলেন, “টাকার জোগান বাড়লে মুদ্রাস্ফীতি হবে বলে চিরাচরিত ভয় হয়তো উন্নত অর্থনীতিতে খাটে না। কিন্তু ভারতের মতো দেশে যথেচ্ছ টাকা ছাপানো হলে টাকার দর, বাণিজ্য ও আমদানি করা পণ্যের বাজারদরে এর প্রভাব পড়তে পারে।”

কংগ্রেস দাবি তুলেছে, মোদী সরকার অহং বিসর্জন দিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে নিক। কিন্তু অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, সরকার আগেই ব্যবসার জন্য পুঁজির জোগানের বন্দোবস্ত করেছে। আমজনতার হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। কোন সময়ে করলে তার প্রভাব বেশি পড়বে, এখন তা নিয়েই ভাবনাচিন্তা চলছে। কারণ লকডাউনের সময় এই টাকা দিলে কোনও লাভ হত না। দোকান-বাজার বন্ধ থাকার ফলে তা খরচ করারই জায়গা ছিল না।

লকডাউনের আগে থেকেই অর্থনীতিতে ঝিমুনি বা ‘স্লোডাউন’ চলছিল। অতিমারি ও লকডাউনের পরে অর্থনীতিতে গভীর, দীর্ঘমেয়াদি ঝিমুনি এড়ানো মুশকিল বলে আজ সতর্ক করেছেন মনমোহন। তিনি বলেন, “আমি হালকা ছলে মন্দা শব্দটি ব্যবহার করতে চাই না। এই ঝিমুনির কারণ মানবিক সঙ্কট। সামাজিক মনোভাবের প্রিজ়ম থেকেই এই বিষয়টি দেখা জরুরি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manmohan Singh Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE