ছবি পিটিআই।
শুধু অনাহূত নন। অনুচ্চারিতও রইলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী।
আধ ঘণ্টার বেশি বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাম জন্মভূমি আন্দোলনের কাণ্ডারীর নাম একবার উচ্চারণও করলেন না।
তিন দশক আগে আডবাণীই রাম জন্মভূমি আন্দোলনের ঢেউ তুলতে সোমনাথ থেকে অযোধ্যার পথে রথযাত্রা করেছিলেন। সেই রামমন্দিরের শিলান্যাস ও ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো দূরের কথা, ভিডিয়ো কনফারেন্সে পুজোয় শামিল হওয়ার আলাদা কোনও ব্যবস্থাও করা হয়নি।
অযোধ্যায় রামমন্দির ও ভূমি পুজোর শিলান্যাস অনুষ্ঠানে আজ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত অবশ্য বলেছেন, “অনেকেই আত্মত্যাগ করেছেন। তাঁরা এখানে সশরীরে হাজির থাকতে পারেননি। প্রয়াতরা হয়তো সূক্ষ্ম দেহে হাজির রয়েছেন। অনেকে আসতে পারেননি। আডবাণীজি হয়তো বাড়িতে বসে টিভি-তে দেখছেন। অনেকেই রয়েছেন, যাঁদের অতিমারির পরিস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো যায়নি।” প্রয়াতদের মধ্যে ভাগবত প্রাক্তন আরএসএস-প্রধান অশোক সিঙ্ঘলের কথা স্মরণ করেছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী রামমন্দির আন্দোলনের জন্য কয়েক প্রজন্মের আত্মত্যাগের কথা বললেও আডবাণীর নাম উচ্চারণও করেননি। রাম জন্মভূমি আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা নিয়েও কোনও শব্দ উচ্চারণ করেননি।
আডবাণীর মতো মুরলীমনোহর জোশীও অযোধ্যার অনুষ্ঠানে কোনও আমন্ত্রণ পাননি। ৯২ বছরের আডবাণী ও ৮৬ বছরের জোশীর স্বাস্থ্যবিধি মেনে জমায়েত এড়ানোই উচিত ঠিকই, কিন্তু কেউ ফোন করেও কেন কথা বললেন না, তা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই শিলান্যাসের আগের রাতে আডবাণী বিবৃতিতে রামের শিষ্টাচারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, রামরাজ্যে কেউ বহিষ্কৃত থাকেন না।
রামমন্দির আন্দোলনের অন্যতম প্রধান চরিত্র বিনয় কাটিয়ারের মতে, আডবাণী-জোশীকে অযোধ্যায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা দরকার ছিল। প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ, অযোধ্যারই বাসিন্দা কাটিয়ারের মতে, প্রয়োজনে বিশেষ বিমানের বন্দোবস্ত করা উচিত ছিল। আমন্ত্রণ জানানো হলেও আর এক চরিত্র কল্যাণ সিংহকে বলা হয়েছিল, তিনি যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে না আসেন।
অযোধ্যায় আমন্ত্রিত হলেও উমা ভারতী প্রধানমন্ত্রীর ঝুঁকির কথা ভেবে অনুষ্ঠানে যাবেন না বলে জানিয়েছিলেন। আডবাণী-জোশীরা আসছেন না বলে তিনিও এড়িয়ে যাচ্ছেন কি না, সে প্রশ্ন উঠেছিল। এ দিন অবশ্য উমা শিলান্যাসে হাজির ছিলেন। কারণ হিসেবে বলেন, “আমি মর্যাদা পুরুষোত্তম রামের মূ্ল্যবোধে বাঁধা। রামমন্দির ট্রাস্টের এক শীর্ষব্যক্তি আজ শিলান্যাসে অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।” ভারতী বসেছিলেন আন্দোলনের আর এক নেত্রী সাধ্বী ঋতম্ভরার পাশে। যোগগুরু রামদেব ও জুনা আখাড়ার স্বামী অভদেশানন্দ গিরি অনুষ্ঠানে ছিলেন। কিন্তু অতীতে অযোধ্যার আদালতের বাইরে বিবাদ মেটানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর নিমন্ত্রণ পাননি।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, করোনার কারণে যাঁদের নিয়ে আসা গেল না, তাঁদের পরে কোনও না কোনও অনুষ্ঠানে অযোধ্যায় সসম্মানে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
আরও পড়ুন: ভাল পণ্যের লোভে ফের চোরাবাজারের শরণে যাবে না তো দেশ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy