রাহুল গাঁধী ও সনিয়া গাঁধী।—ফাইল চিত্র।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলেন সনিয়া এবং রাহুল গাঁধী। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় গত মাসে রায় শুনিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। তাতে আয়কর দফতরকে তাঁদের কর পুনর্মূল্যায়ণ করে দেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন মা-ছেলে। আবেদন জমা দেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা অস্কার ফার্নান্ডেজও। মঙ্গলবার তাঁদের সেই আবেদনের শুনানি পিছিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। আগামী বছরের শুরুতে, ৮ জানুয়ারি তাঁদের আবেদনটির শুনানি হবে। ততদিন পর্যন্ত গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে আদালত জানিয়েছে।
তবে এই আইনি প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। লোকসভা নির্বাচন পার হয়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। তাই ন্যাশনাল হেরাল্ডকে হাতিয়ার করে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করার স্বপ্ন অধরাই থেকে যেতে পারে বিজেপির। আবার হাতে সময় থাকায় নিজেদের খানিকটা গুছিয়েও নিতে পারবেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ দিকে মামলার শুনানি পিছোলেও, কর সংক্রান্ত মূল্যায়ন থেকে নিষ্কৃতি পাননি মা-ছেলে। দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ মতো ২০১১-১২ অর্থবর্ষে তাঁদের কর সংক্রান্ত সবকিছু খতিয়ে দেখতে আয়কর দফতরকে অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে সনিয়া-রাহুলের আবেদনটি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না।
জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ বহুদিনের। তবে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়। যার মূল হোতা ছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। যে ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’-এর হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিল, বাজারে ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল তাদের। যার বেশিরভাগটাই কংগ্রেসের কাছ থেকে নেওয়া। ২০০৮ সালে সংবাদপত্রটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। সেই অবস্থাতেই সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী এবং শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থা। যার পর ন্যাশনাল হেরাল্ডের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ানের দখলে চলে আসে। ৯০ কোটি টাকা দেনার বোঝাও চাপে তাদের ঘাড়ে।
আরও পড়ুন: বুলন্দশহরে পুলিশ খুনের পিছনে বজরং-ভিএইচপি যোগ! গ্রেফতার পাঁচ, শহরে ১৪৪ ধারা
আরও পড়ুন: পাঁচ বছরে আটটি ডুবোজাহাজ, ভারত মহাসাগরে চিনের উপস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে দিল্লির
তার কিছু দিন পর দেনার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব নয় বলে কারণ দেখিয়ে কংগ্রেসের তরফে ঋণের টাকা মকুব করে দেওয়া হয়। এখানেই আপত্তি সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল। তাদের কোনও কর দিতে হয় না। কোনও বাণিজ্যক সংস্থাকে ঋণ দেওয়াও তাদের এক্তিয়ারের বাইরে। তা যদি মেনেও নেওয়া হয়, তাহলে সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণের টাকা মেটাল না কেন কংগ্রেস? ঘুরপথে আয়কর মুক্ত পুরো টাকাটা নিজেদের পকেটে ভরল কেন? লেনদেনের যাবতীয় তথ্য আয়কর বিভাগের হাতে তুলে দিতে হবে বলে কংগ্রেস ও গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে দিল্লি আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy